Home জাতীয় নন-ক্যাডার বিধি নিয়ে বিপাকে পিএসসি

নন-ক্যাডার বিধি নিয়ে বিপাকে পিএসসি

23

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার পরীক্ষার্থীদের নিয়োগের জন্য প্রস্তুতকৃত নতুন বিধিমালার অনুমোদন দেয়নি সরকার। অন্যদিকে বিদ্যমান বিধিমালা অনুযায়ী অপেক্ষমাণ ৬ হাজার পরীক্ষার্থীকে নিয়োগের জন্য সুপারিশও করতে পারছে না সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ফলে বিপাকে পড়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ কার্যক্রম শেষ না হলে আইনানুযায়ী অন্য কোনো বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করাও সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় সেটি নিয়ে ভাবছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পিএসসির সংশ্লিষ্টরা। এক বিধি জটিলতায় নন-ক্যাডার নিয়োগের ফলাফল ১৫ মাস যাবত আটকে আছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, বিধি প্রস্তুত করার দায়িত্ব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের। আমরা প্রতিনিয়ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।খবর ইত্তেফাক
বিসিএস থেকে নন-ক্যাডার নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১০ সালে প্রণীত বিধি ২০১৪ সালে সংশোধন করা হয়। ২০১৪ সালের ১৬ জুন নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে প্রথম শ্রেণির পাশাপাশি দ্বিতীয় শ্রেণির সুপারিশের সুযোগ দেওয়া হয়। বিধিতে বলা আছে, বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাডারের পাশাপাশি নন-ক্যাডার শূন্য পদের বিবরণ ও সংখ্যা উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু ২৮তম বিসিএস থেকে ৪৪তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে নন-ক্যাডার শূন্য পদের বিবরণ ও সংখ্যা উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য সরকার বিধি সংশোধন করে ৩৪তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার নিয়োগের বৈধতা দিয়েছিল। বিধি সংশোধন ছাড়াই ৩৫তম বিসিএস থেকে ৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার ফলাফল প্রকাশ করা হয় বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নজরে নিয়ে আসে পিএসসি কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী সময় বর্তমান পিএসসি কর্তৃপক্ষ বিদ্যমান বিধির বাইরে কিছু ধারা সংযোজন করে স্থায়ী সমস্যার সমাধানে নতুনভাবে নন-ক্যাডার নিয়োগের প্রস্তাবনা দেয়। নন-ক্যাডার নিয়োগ প্রস্তাবনা দিয়ে গত বছরের ২৩ আগস্ট পিএসসি থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়।

তবে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নতুন বিধিমালা অনুমোদন না দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠান। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দেবেন—এই আশায় প্রায় ৪ হাজার শূন্য পদের তালিকাও প্রস্তুত করে রেখেছিল পিএসসি কর্তৃপক্ষ। জনপ্রশাসন ও পিএসসি সূত্র ইত্তেফাককে জানায়, প্রধানমন্ত্রী নতুন বিধিমালার অনুমোদন দেননি। বরং নতুন বিধিমালা নাকচ করে দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠান। নতুন করে পিএসসি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রস্তাবনা প্রস্তুত করবে।

সংকটের সমাধান বর্তমান বিধিতেই : বর্তমান নন-ক্যাডার বিধিতে বিদ্যমান সংকটের সমাধান আছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে ৪০তম বিসিএস পর্যন্ত আইন সুরক্ষা চাওয়া হলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও একটি মতামত প্রদান করেছিল। তৎকালীন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ (বর্তমান পিএসসির সদস্য) বিধি সংশোধনের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে কিছু সুপারিশসহ পিএসসিতে ফেরত পাঠান। তৎকালীন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. হেলালুজ্জামান সরকার স্বাক্ষরিত সেই বিধি সংশোধনীর খসড়া প্রস্তাবে বিজ্ঞপ্তিতে পদসংখ্যা উল্লেখের পরিবর্তে ‘প্রার্থী কর্তৃক নন-ক্যাডার পদের জন্য প্রদত্ত চাকরির পছন্দক্রম এবং মেধার ভিত্তিতে নন-ক্যাডার পদে চাকরির জন্য কমিশন সুপারিশ করবে’ প্রতিস্থাপন করেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সেই বিধি সংশোধনীর খসড়া প্রস্তাবনা ২০১৯ সালের শেষের দিকে পিএসসি থেকে সচিব কমিটির কাছে পাঠানো হয়। যেটি আজ পর্যন্ত অনুমোদন হয়নি। যদিও এরপর করোনা মহামারির কারণে সব কার্যক্রম থমকে যায়। পিএসসির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সচিব কমিটিতে পাঠানো পিএসসির আগের বিধিমালা সংশোধনী প্রস্তাবনাটি পাশ করলেও সব সংকটের সমাধান হয়ে যাবে।