Home রাজনীতি ধর্মীয় অনুষ্ঠান-উৎসবে এখন কোন নিরাপত্তা নেই–মির্জা ফখরুল

ধর্মীয় অনুষ্ঠান-উৎসবে এখন কোন নিরাপত্তা নেই–মির্জা ফখরুল

50

স্টাফ রিপোটার: কুমিল্লা শহরের নানুয়ার দিঘিরপাড়ের একটি দুর্গাপূজার মন্ডপে উদ্ভুত ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের কয়েকটি স্থানে পুজামন্ডপে হামলা এবং গতরাতে চাঁদপুরে বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর হামলা করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গুলিতে মানুষের হতাহতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা, ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বর্তমান সরকারের আমলে দেশবাসী চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনযাপন করছে। দেশের জনগোষ্ঠীর কোন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান-উৎসবে এখন কোন নিরাপত্তা নেই। সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতেই নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বেড়াজাল নিরন্তরভাবে নির্মাণ করে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্দ্ধগতি, কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলা করতে না পারা, আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি, অসহনীয় বেকারত্ব, সরকারী দলের লোকদের ব্যাপক চাঁদাবাজী, লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার, ক্ষমতাসীনদের নির্লজ্জ মিথ্যাচার ও কুৎসা রটানো, নাগরিকদের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণভাবে হরণ করে গণতন্ত্রকে মাটিচাপা দেয়াসহ দেশের নানাবিধ সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দিতেই সরকার কুমিল্লার দুর্গাপূজার মন্ডপের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। এটি সরকারের পরিকল্পিত চক্রান্ত। জনরোষে ভীত হয়ে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আওয়ামী সরকার এখন আরো বেশী মাত্রায় অপকর্মের আশ্রয় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে অরাজকতা সৃষ্টি করে চলেছে। এদের কোন গণভিত্তি নেই বলেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিপজ্জনক নীলনকশা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতাকর্মীদের ওপরই দমন-পীড়ণ চালিয়েই তারা ক্ষান্ত হচ্ছে না বরং নতুন নতুন হিং¯্র্র ঘটনার সৃষ্টি করে দেশবাসীর মধ্যে বিভেদ-বিভাজনের ভয়াবহ খেলায় মেতে উঠেছে। এতে তারা মানষের জীবন কেড়ে নিতেও কোন দ্বিধা করছে না। এই অবৈধ সরকার আগুন নিয়ে খেলছে।
আবহমান বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সমন্বিত বৈশিষ্ট্যকে বিকৃত করে ক্ষমতাসীনরা সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে ফায়দা লুটতে চাচ্ছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশের মানুষ ষড়যন্ত্রের স্বরুপ বোঝে। তাই সচেতন দেশবাসী সরকারের অশুভ পরিকল্পনা সহজেই টের পায়। গতকাল কুমিল্লার পুজামন্ডপের ঘটনা ও এর প্রতিক্রিয়ায় দেশব্যাপী পুলিশের গুলিতে রক্তপাতের যে ঘৃন্য ও অমানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হলো তা নজীরবিহীন এবং এর দায় এড়াতে পারবে না সরকার।
এই সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক উস্কানী, উত্তেজনা, বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়সহ হিন্দুু সম্প্রদায়ের দেবালয়ে আক্রমণ, প্রতিমা ভাংচুর, লুটপাট ব্যাপক মাত্রায় বৃৃদ্ধি পেয়েছে। এসব অপকর্মের সাথে সরকারী দলের লোকেরাই জড়িত থাকার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে কুমিল্লার ঘটনায় জনজীবনে শংকা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমি এই সমস্ত অশুভ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে দেশবাসীকে সকল উস্কানির মুখে শান্ত থেকে নিজেদের ঐক্য ও সংহতি দৃঢ়ভাবে রক্ষা করার আহবান জানাচ্ছি।”