Home সারাদেশ ধর্মঘটের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপতৎপরতা বন্ধের দাবি

ধর্মঘটের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপতৎপরতা বন্ধের দাবি

24

স্টাফ রিপোটার: আজ ৮ এপ্রিল শনিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কমানো, ২০ রোজার আগে শ্রমিকদের বেতন—বোনাসসহ সকল বকেয়া পরিশোধ এবং শ্রমিকের ধর্মঘটের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের সরকারি অপতৎপরতা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল রায়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহসভাপতি মানস নন্দী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রেজা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, “একদিকে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিতে শ্রমিক—মেহনতি মানুষ তীব্র দুর্ভোগে দিনযাপন করছে, অন্যদিকে বৃদ্ধি করা হচ্ছে না তাদের বেতন বা মজুরি। অথচ বহু দিন থেকেই দাবি উঠছে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি ও ন্যূনতম জাতীয় মজুরি নির্ধারণের। পূর্বের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি খাটিয়ে নেওয়া, এমনকী ছুটি না দিয়ে ছুটির দিনেও জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করা এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক—কর্মচারীদের জীবনে প্রাত্যহিক ঘটনা। ঈদের আগে অনেক শ্রমিককেই অমানুষিকভাবে দিন—রাত সমান করে শ্রম করানো হয়। কিন্তু তাদের বেতন—বোনাস ঠিক সময়ে দেওয়া হয় না। এই ঘটনা প্রায় প্রত্যেক ঈদের আগেই দেখা যায়, যখন ঈদের আনন্দ স্বজনদের সাথে ভাগাভাগি করে কাটানোর সময়, তখন বেতন—বোনাসের দাবিতে শ্রমিকদের রাজপথে আন্দোলনে নামতে হয়। আর সেই আন্দোলনের ওপর পুলিশের হামলা—নির্যাতনও হয়ে থাকে। কতটা অমানবিক মালিকী ব্যবস্থা হলে শ্রমিকদের জীবনে এই দুর্দশা প্রতিনিয়ত পোহাতে হয়!

শ্রমিকের ধর্মঘট করার অধিকার আইএলও কনভেনশন, বাংলাদেশের সংবিধান ও বিদ্যমান শ্রম আইনে স্বীকৃত একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু সরকার সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ‘অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল—২০২৩’ পাশ করে এই গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এই বিল অনুসারে সরকার চাইলে সরকারি—বেসরকারি যেকোনো পরিষেবা খাতকে অত্যাবশ্যকীয় ঘোষণা করে ধর্মঘট নিষিদ্ধ ও ধর্মঘট আহ্বানকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিবেচনায় কারাদণ্ড ও জরিমানার বিধার রাখা হয়েছে। দেশি—বিদেশি পুঁজিপতি ও মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় যেকোনো ধরনের শ্রমিক আন্দোলন দমনের লক্ষ্য নিয়েই এই আইন করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের এই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তুলতে হবে।”
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো, ২০ রোজার আগে বেতন—বোনাসসহ শ্রমিকদের সকল বকেয়া পরিশোধ এবং অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা খাতে ধর্মঘট নিষিদ্ধের নামে শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপতৎপরতা বন্ধের আহ্বান জানান।