Home রাজনীতি দূর্যোগ মোকাবিলায় যোজন যোজন পিছিয়ে–সংসদে বাবলা

দূর্যোগ মোকাবিলায় যোজন যোজন পিছিয়ে–সংসদে বাবলা

38

স্টাফ রিপোটারঃ জাতীয় পার্টি কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা সীতাকুন্ড ট্রাজেডির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এই দূর্ঘটনার পর অনেক প্রশ্ন সামনে আসছে। খবরের কাগজে, টেলিভিশনের পর্দায়, সোস্যাল মিডিয়ায় অনেকে অনেক প্রশ্ন সামনে নিয়ে আসছে। আমরা যারা রাজনীতি করি, তারাও নানা রকম কথা বলছি। সরকারের পক্ষের লোকের কাছে সব পজেটিভ আর বিরোধী পক্ষের কাছে সব আসে নেগেটিভ। আমি পজেটিভ নেগেটিভ কোন কথায় বলতে চাই না। শুধু ২টি প্রশ্ন রাখতে চাই আপনার মাধ্যমে সরকারের কাছে। জনবহুল এলাকাতে কিভাবে ডিপোর মধ্যে রাসায়নিক দ্রব্য থাকে? সেই প্রশ্ন আজ পুরো দেশবাসী। আমরা যখন ৬ লক্ষ কোটি টাকা বাজেট পেশ করি, তারপরও কেন ফায়ার সার্ভিসের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি আমরা আনতে পারি না?

সোমবার জাতীয় সংসদের পয়েন্ট অব অর্ডারে তিনি এই সব কথা বলেন। এই সময় সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

জাপার সংসদ সদস্য বাবলা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাহসী নেতৃত্বে আমরা যখন দেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় পদ্মা সেতুর মত সবচেয়ে বড় মেঘা প্রকল্প সম্পন্ন করি, তখন বিশ্ব দরবারে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়, এটা চিরন্তন সত্য। বিশ^ গণমাধ্যমে আমাদেরকে নিয়ে প্রশংসা করে খবর প্রকাশিত হয়। কিন্তু তার বিপরীতে শীতলপুর ট্রাজেডিতে যখন আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার কর্মীদের নির্মমভাবে মৃর্ত্য বরণ করতে হয়, তখন সেই লজ্জ্বা আমরা রাখি কোথায়। আমরা যদি ফায়ার কর্মীদের হাথে আধুনিক অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র তুলে দিতে পারতাম, তাহলে শীতলপুরের ট্রাজেডির গল্পটা হয়তো পজেটিভ ভাবে বিশ^ গণমাধ্যমে আসতো। কিন্তু তা তো হল না। আমি সরকারকে বলবো, দেশের কল্যাণে যত প্রকল্প করার দরকার করুন, কিন্তু শীতলপুরের মত সংঘটিত দূর্যোগ মোকাবিলায় যোজন যোজন দূরে আমরা যে পিছিয়ে আছি তা শীতলপুর আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেছে।

ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবু হোসেন বাবলা আরো বলেন, শীতলপুরের ঘটনায় মানবিক দিকও ফুটে উঠেছে। অগ্নিকান্ডে আহত এবং নিহতদের উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি যেভাবে বীর চট্টলার সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক কর্মী, ধর্মীয় এবং সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা নির্ভিকভাবে ছুটে গেছে তা অতুলনীয়। আমি সেই সব সাহসী এবং মানবিক মানুষ গুলোকে স্যালুট জানাই।

এই সময় বাবলা বলেন, কিছু মাওলানা সাহেব সবার আগে গিয়ে শত শত পোড়া মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে। আবার ইসকনের পক্ষ থেকে ইসকনের প্রভুরা গিয়ে রক্ত দান করেছে। এটিই আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশের চিত্র। এই বাংলাদেশ নিয়েই আমরা অহংকার করি। কিন্তু সাথে সাথে দুঃখ লাগে কোথাকার কোন হরিদাশ পালরা এসে গণকমিশনের নাম করে বাংলাদেশের ধর্মীয় নেতাদের দূর্নীতি খোজার জন্য দুদকে তালিকা দেয়। আমি ঐ হরিদাশ পাল বাবুদের বলবো, সবকিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। সবকিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি ভালো না। আগুনে ঘি ঢালার চেষ্টা করবেন না। কে সাধু আর কে অসাধু বাংলাদেশের সব মানুষ জানে। যদি সৎ সাহস থাকে, যেসব কুলঙ্গারা দেশের মানুষের লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে, পারলে সেই তালিকা প্রকাশ করে দেখান। এবং সেই তালিকা দুদককে দেন। সরকার দুদক এবং দেশের জনগণ আপনাদের সাধুবাদ জানাবে।

এই সময় বাবলা আরো বলেন, গত ২ দিন ধরে বাংলাদেশের সকল মানুষ শোকাহত, বির্মষ, মর্মাহত। আমরা বাংলাদেশের কোন মানুষ শীতলপুর ট্রাজেডির জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। হঠাৎ এই মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় আমরা হারিয়ে ফেলেছি ৫০ জনেরও অধিক তাজা প্রাণ। শত শত মানুষ হারিয়েছে তাদের অঙ্গ। কি নিষ্টুর, কি ভয়াবহ। আমরা এই ঘটনাকে শুধু দূর্ঘটনা বলে সান্তনা নিব? নাকি এর পেছনে কোন নাশকতা রয়েছে? নিশ্চয়ই সরকার তা তদন্ত করে বের করবে বলে আশা রাখি। যদিও কোন তদন্তের আলোর মুখ আমরা দেখি না।