Home জাতীয় থাকেন ফ্রান্সে, ‘চোর পালেন’ দেশে

থাকেন ফ্রান্সে, ‘চোর পালেন’ দেশে

27

ডেস্ক রিপোর্ট: সাত বছর আগে দেশ ছেড়ে ফ্রান্সে পাড়ি জমিয়েছে চুরির মামলার আসামি নাসির হোসেন (৫০)। ফ্রান্সে গেলেও চুরি থামেনি তার। সেখানে বসেই চক্রের অন্য সদস্য শামীমের সঙ্গে সে পরিকল্পনা করে। এরপর চুরির জন্য টাকার জোগানও দেয় সে। পরে চক্রের প্রত্যেক সদস্যের আলাদা-আলাদা দায়িত্ব নির্ধারণ করে এবং শামীমের তদারকিতে দেশে চুরির ঘটনা ঘটানো হয়।

সর্বশেষ পরিকল্পনা করে নাইটগার্ড ও সুইপার নিয়োগের সুযোগে তারা তাদের চক্রের দুই সদস্যকে কচুক্ষেত রজনীগন্ধা টাওয়ারে রাঙ্গাপরী জুয়েলার্সে পাঠায়। এরপরই জুয়েলার্সের দোকানের তালা ভেঙে মালামাল চুরি করে পালিয়ে যায় চক্রের সদস্যরা।

ঐ ঘটনায় মঞ্জুরুল আহসান শামীমকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, ইতোপূর্বে তারা ঢাকা মহানগর ও এর আশপাশ এলাকায় একাধিক চুরি করেছে। সর্বশেষ গত ৫ ফেব্রুয়ারি রজনীগন্ধা টাওয়ারে রাঙ্গাপরী জুয়েলার্সে চুরি করে। গতকাল রবিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ভাষানটেক পুরাতন কচুক্ষেত রজনীগন্ধা টাওয়ারের নিচতলার রাঙ্গাপরী জুয়েলার্স থেকে একটি সংঘবদ্ধ চোর চক্র আনুমানিক ৩০০ ভরি স্বর্ণ, ইমিটেশন গহনা ও নগদ অর্থ চুরি করে।

এ বিষয়ে গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের মিরপুর জোনাল টিম তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। স্বর্ণ চুরি মামলায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গাজীপুর জেলার কড্ডা ও মুন্সিগঞ্জ জেলার বজ্রযোগিনী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মঞ্জুরুল আহসান শামীমকে গ্রেফতার এবং চোরাইকৃত স্বর্ণ, বিক্রয়লব্ধ অর্থ ও ইমিটেশন গহনা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার শামীম জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশকে জানিয়েছে, চক্রের দুই সদস্য মাসুদ এবং ইলিয়াস মিথ্যা নাম পরিচয় ব্যবহার করে কচুক্ষেত রজনীগন্ধা টাওয়ারে সিকিউরিটি গার্ড ও সুইপারের চাকরি নেয়। চাকরিতে থাকা অবস্থায় তারা ঐ দোকানে চুরির পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য চক্রের অন্য সদস্যের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করতে থাকে। পরিকল্পনামাফিক ঘটনার আগের দিন চক্রের অন্য এক সদস্য শাহীন মাস্টার মার্কেটে একটি দোকান ভাড়া করে। মালামাল তোলার নাম করে বক্স বিশিষ্ট টেবিল ব্যবহার করে কৌশলে তালা ভাঙার সরঞ্জামাদি মার্কেটে প্রবেশ করায়।

ঘটনার দিন আনুমানিক রাত ১টার দিকে চক্রের আরো দুই সদস্য শ্রীকান্ত ও তালা ভাঙার মিস্ত্রি রাজা মিয়া মার্কেটে প্রবেশ করে। মাসুদ ও ইলিয়াস চোরাই কাজ শেষ করে ভোর ৫টার দিকে মার্কেট থেকে বের হয়ে কেরানীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ এলাকার ভাড়া করা বাসায় যায়। সেখানে শাহীন মাস্টার ও মঞ্জুরুল হাসান শামীম আগে থেকেই অপেক্ষা করতে থাকে। ভাড়া করা বাসায় সব সদস্যের উপস্হিতিতে প্রকৃত স্বর্ণ, ইমিটেশন গহনা ও নগদ অর্থ আলাদা করা হয়। আনুমানিক ১০টার দিকে শ্রীকান্ত চুরি করা স্বর্ণ তার পূর্ব পরিচিত এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে। বিক্রির টাকা নিয়ে আবার ভাড়া করা বাসায় ফিরে আসে। এরপর নগদ টাকাসহ চুরি করা জিনিসপত্র নিজেদের মধ্যে আনুপাতিক হারে ভাগ করে এবং যে যার মতো আত্মগোপনে চলে যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, চক্রের মূল হোতা ফ্রান্স প্রবাসী নাসির। তার বাড়ি বাগেরহাটে। সে শামীমের মাধ্যমে পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও প্রাথমিক অর্থের জোগান দিয়ে থাকে।-ইত্তেফাক