Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস ঢাকার বাইরে যেতে হবে বলে পদায়ন নিলেন না ১৭ প্রধান শিক্ষক

ঢাকার বাইরে যেতে হবে বলে পদায়ন নিলেন না ১৭ প্রধান শিক্ষক

42

তারা স্বেচ্ছায় ওএসডি!

ডেস্ক রিপোর্ট: সরকারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের সংকট মেটাতে প্রমার্জন করে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল দুই শতাধিক সহকারী প্রধান শিক্ষককে। কিন্তু পদোন্নতি পাওয়ার পর এসব শিক্ষকের একটি অংশ এই পদের দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। কারণে এখন তাদের ঢাকার বাইরের প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে। এ কারণে তারা ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) হয়েছেন। এসব শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষক পদে থেকে আর্থিক সুবিধা পেলেও কার্যত কোন দায়িত্বে নেই। ফলে এসব স্কুলে প্রশাসনিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে।

চলতি বছরের জুন মাসে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে ২৩৩ জনকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পদায়ন করা হয়। তবে এর মধ্যে ২৬ জনকে ওএসডি করা হয়। এই ২৬ জন শিক্ষকের মধ্যে এক জন জুন মাসেই এবং দুই জন চলতি মাসে অবসরে যান। এছাড়া এ শিক্ষকদের মধ্যে এক বছরের মধ্যে আরো ছয় জন অবসরে যাবেন। মানবিক কারণে এদের ওএসডিকে স্বাভাবিক হিসাবে দেখছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তবে যাদের চাকরির বয়স এর চেয়ে বেশি রয়েছে তাদের অবশ্যই স্কুলে পদায়ন করা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এখনো ১৭ জন প্রধান শিক্ষক রয়েছেন যারা পদোন্নতি পেলেও ঢাকার বাইরে যেতে চাইছেন না। সহকারী ও সিনিয়র শিক্ষক হিসাবে দীর্ঘ সময় চাকরি করলেও ফিডার পদ পূর্ণ না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দিতে পারেনি সরকার। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক হতে হলে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে পাঁচ বছর কর্মরত থাকার বিধান আছে। সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে এমন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন না থাকায় এতদিন পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। কিন্তু পাঁচ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতার যে নিয়ম ছিল তা দুই বছর কমিয়ে প্রমার্জন করে পদোন্নতি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানিয়েছে, যেসব প্রধান শিক্ষক ওএসডি হয়েছেন তারা ঢাকার বিভিন্ন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন। এখন ঢাকার স্কুলগুলোতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য না থাকায় তাদের ঢাকার বাইরের কোন স্কুলে বদলি করতে হবে। কিন্তু এসব শিক্ষকরা পদোন্নতি পেলেও ঢাকার বাইরে যেতে নারাজ। ফলে বিভিন্ন স্থানে তদবির এবং আবেদন করে ওএসডি হয়েছেন, যাতে ঢাকার বাইরে যেতে না হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে জানা যায়, সারা দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি বিদ্যালয় আছে ৩৫২টি। অবশ্য নতুন জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়সহ এ সংখ্যা ৬৮৩। পুরোনো ৩৫২টি সরকারি স্কুলের অধিকাংশই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছিল। এ অচলাবস্থা দূর করতেই বিশেষ এই উদ্যোগ নেয় সরকার।

এত সংখ্যক প্রধান শিক্ষক হিসাবে পদোন্নতি পেলেও সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। শুধু প্রধান শিক্ষক নয়, এই স্কুলটিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই। প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুল কুদ্দুসকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

হবিগঞ্জ জেলার ছয়টি পুরাতন স্কুলের একটিতেও প্রধান শিক্ষক নেই দীর্ঘদিন ধরে। এর মধ্যে তিনটিতে নেই সহকারী প্রধান শিক্ষকও। জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ রুহুল্লাহ বলেন, এসব স্কুলের সিনিয়র শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছে। প্রধান শিক্ষক না থাকায় স্কুলের প্রশাসনিক কাজে সমস্যা হয়।

তবে এ বিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এদের বিষয়ে শিগ্গিরই সিদ্ধান্ত হবে। অবসরে যাওয়ার ১৩ মাস পূর্বে বদলি না করার জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনার মধ্যে পড়ে না এমন শিক্ষকদের বিষয়ে দ্রুত বদলি/সমন্বয় করা হবে।
ইত্তেফাক