Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস ডিজিটাল নথির যুগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

ডিজিটাল নথির যুগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

251

জাবি প্রতিনিধি : ডিজিটাল নথির (ডি-নথি) যুগে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সময় ও খরচ যেমন কমবে, তেমনি সাশ্রয় হবে দাপ্তরিক কাগজ-পত্রের।
ডি-নথি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইলের কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হবে। উপাচার্যসহ সব পর্যায়ের অনুমোদনকারী ব্যক্তিরা যে কোনো জায়গা থেকে যে কোনো সময় ফাইল অনুমোদন করতে পারবেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরও বেশি নিশ্চিত হবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) মিলনায়তনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে ডি-নথি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
আধুনিক, দক্ষ এবং সেবামূলক জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে ডি-নথি বাস্তবায়ন একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ বলে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আধুনিক, দক্ষ এবং সেবামূলক জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে ও তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে দাফতরিক নথি ব্যবস্থাপনা ও রেকর্ড সংরক্ষণে ডি-নথি (ডিজিটাল নথি) বাস্তবায়ন একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। তারই ধারাবাহিকতায় স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডি-নথি চালু করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি বলেন, ডি-নথি ব্যবহারকারীরাই অনেক সময় আগ্রহী থাকেন না, উদ্যোগী হন না। তাদের আগ্রহ বাড়াতে হবে। উদ্যোগী হতে হবে এবং ডি-নথি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক সকল কাজ যেন ডিজিটাল নথির আওতায় নিয়ে আসা যায় সে লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কাজ করতে হবে।’

ডি-নথি চালু হলে স্মার্ট সেবার পাশাপাশি ফাইলের স্তূপ কমবে বলে মনে করেন ইউজিসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে পদার্পণ করছি। ডিজিটাল নথি বাস্তবায়ন করা গেলে ফাইলের স্তূপ কমবে, সেবা প্রত্যাশীরা স্মার্ট সেবা পাবেন এবং ভোগান্তি কমে যাবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ডিজিটাল নথি বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক ফাইল ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ আরও সহজ হবে বলে মন্তব্য করে অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বলেন, সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প ‘স্মার্ট সিটিজেন’, ‘স্মার্ট গভর্নমেন্ট’, ‘স্মার্ট ইকোনমি’ এবং ‘স্মার্ট সোসাইটি’- এই ৪টি স্তম্ভের উপর নির্মিত। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে অনলাইন প্রকাশনা পোর্টাল, একাউন্টিং সিস্টেম অটোমেশন এর মতো কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। ডি-নথি ব্যবস্থাপনা চালু করার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক ফাইল ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ আরও সহজ হবে’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন ও ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামানসহ প্রমুখ।

এছাড়া ডি-নথির কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আবু হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ড. এম. শামীম কায়সার, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, পেপারলেস অফিস প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম ধাপে দেশের ৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল নথির কার্যক্রম শুরু হয়। গতকাল দ্বিতীয় ধাপে ডি-নথির (ডিজিটাল নথি) সাথে যুক্ত হলো দেশের আরও ১০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এই নিয়ে মোট ১৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি-নথি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।

নতুন যুক্ত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস(বিইউপি), রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।