Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস জাহাঙ্গীরনগরে কবি মোহাম্মদ রফিকের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

জাহাঙ্গীরনগরে কবি মোহাম্মদ রফিকের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

29

জাবি প্রতিনিধি: একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত কবি মোহাম্মদ রফিকের স্মরণে স্মরণসভা আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগ।
১১ সেপ্টেম্বর ( সোমবার) সকাল সাড়ে দশটায় “স্মরণে মোহাম্মদ রফিক ” শীর্ষক শিরোনামে এ স্মরণসভা শুরু হয়। এতে বিভাগের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা, কবির পরিবারের সদস্য ও কবির শুভাকাঙ্ক্ষীরা অংশ নেন। স্মরণসভায় কবিকে স্মৃতিচারণের পাশাপাশি কবিতা পাঠ ও কবির লেখা গ্রন্থাবলী প্রদশর্নের মাধ্যমে কবিকে স্মরণ করা হয়।

স্মরণসভায় ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষক মোহাম্মদ রফিকের ভাই মোহাম্মদ তারেক বলেন,” তিনি ছোটবেলা থেকেই স্বাধীনচেতা ছিলেন। বাবা তাঁর উপর আক্ষেপ নিয়ে বলতেন; তুই মানুষ হইলি না, এমন কি মৃত্যুর আগেও একথা বলেছেন।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের স্কুল শিক্ষক বাবার আয় তেমন ছিল না, একটা ডিমকে বকফুল দিয়ে বড় বানিয়ে মা আট ভাই-বোনকে খাওয়াতেন। মেজ ভাইয়ের বৃত্তির টাকায় সিরামিক প্লেট কেনা হলে একদিন সব সিরামিক প্লেট ভেঙ্গে মাকে বলল, বাবাকে বলো আমি আর বাসায় আসবো না। এতো কিছুর পরও দাদু বাবাকে বলতেন, ‘তুমি ওকে কিছু বলবে না’। দাদু হয়তো কিছু আছে বলে বুঝতে পেরেছিলেন। মা নিজেও বাবাকে বলেছিলেন তোমার সন্তানদের মধ্যে তোমার মুখ রাখলে রফিকই রাখবে।”
স্মরণসভায় প্রয়াত কবির সহকর্মী ও কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ছোটভাই খালিকুজ্জামান ইলিয়াস বলেন, তিনি ছাত্রদের নিয়ে অনেক বেশি ক্লাসে ও বাইরে মিশতেন। একটু বেশিই মিশতেন, যারা বোধসম্পন্ন ছিনা তারা আবার নিতে পারতো না। হুমায়ূন ফরিদীর একবার বলেছিলেন, “দেখতে এসেছেন, তাহলে টাকা দেন।” উনি ১০টাকার বের করলেন। উনাকে পি রফিক ডাকতেন বন্ধুরা, মানে পাগল ফরিদ। উনি অনেক বেশি বিশ্বসাহিত্য থেকে নিতে পারতেন, দিতেও পারতেন। আমি‌ অনেক কিছু শিখেছি। জেলেও জিজ্ঞাসা করলে উনি সরাসরি বলতেন “আমি কবিতা লিখেছি সেটা যদি আপনাদের এখানে বুঝানো লাগে তাহলে মুশকিল।”

স্মরণসভায় ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ রেজা বলেন, যেকোন মৃত্যু আমার নিস্তব্ধতাকে বাড়িয়ে দেয়, স্যারের মৃত্যুতে আমি শোকাহত। উনি আমার অনার্স প্রথম বর্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আমার অনেক প্রিয় একজন শিক্ষক এবং প্রিয় থাকবেন। রফিক স্যার অনেক বেশি ক্লাস নিতেন, তবে উনি কোন রুটিন মেনে ক্লাস নিতেন না। তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে মিশতেন, আমাদের বাংলা একাডেমিতে নিয়ে যেতেন। রফিক স্যারের দেশপ্রেম অনেক বেশী ছিল, তিনি কোন গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ ছিলেন না, কিন্তু আমাদের সহকর্মীদের মধ্যে কম দেখি।
ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মাশরুর শাহিদ হোসাইনের সঞ্চালনায় বিভাগের চেয়ারপার্সন সহযোগী অধ্যাপক সাবেরা সুলতানার সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক সানিয়াত সাত্তার, সহযোগী অধ্যাপক তানিয়া শারমিন , সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রায়হান শরীফ, সহযোগী অধ্যাপক আফাজ উদ্দিন ও প্রভাষক রাবিতা রহমান প্রমুখ।