Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস জাবিতে গভীর রাতে জঙ্গলে ডেকে র‌্যাগিং প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হাতেনাতে ধরা

জাবিতে গভীর রাতে জঙ্গলে ডেকে র‌্যাগিং প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হাতেনাতে ধরা

105

জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রণিবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের (৫১তম ব্যাচ)শিক্ষার্থীদেরকে জঙ্গলে ডেকে র‌্যাগ (শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন) দেয়ার অভিযোগ উঠেছে দ্বিতীয় বর্ষের (৫০ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। গত রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিডনি ফিল্ডের পেছনের জঙ্গলে এই ঘটনা ঘটে। পরে এই ঘটনায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ভাষ্য মতে, ‘ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিডনি ফিল্ডসংলগ্ন এলাকায় জরুরিভাবে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৫১ ব্যাচ শিক্ষার্থীদের উপস্থিত থাকতে বলেন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। রাত সাড়ে ৮ টায় উপস্থিত হতে বলা হলেও ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আসেন রাত সাড়ে ১১টায়। সেখানে এসেই উপস্থিত থাকা শিক্ষার্থীদের নানাভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন তারা। ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মুরগির আদলে চেয়ারে বসানো হয়। র‌্যাগিংয়ের একপর্যায়ে ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দিকে জুতা ছুড়ে মারেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা। তবে তাঁদের উপস্থিতির কথা জানতে পেরে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা দৌড়ে পালিয়ে যান।’
এ সময় আবদুল্লাহ আল কাফি নামের এক শিক্ষার্থীকে ধরে ফেলেন প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে র‌্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িত অন্য শিক্ষার্থীদের কথা জানান তিনি।
আবদুল্লাহ আল কাফি বলেন, ‘আজ আমাদের ডিপার্টমেন্টের জুনিয়রদের ডাকা হয়েছিল। আমরা ৫০তম ব্যাচের ১০ থেকে ১২ জন ছিলাম। এর মধ্যে ছিল নূর ইসলাম, তানভীর ইসলাম, মো. আবদুস ছবুর, প্রিন্স কুমার রায়, আহমেদ ইজাজুল হাসান আরিফ, চিরঞ্জীত মণ্ডল, মো. রাসেল হোসাইন, মো. সিজান, খন্দকার মোয়াজ ইসলাম, মিঠুন রায়। এ সময় ওদের (জুনিয়রদের) র‌্যাগ দেওয়া হয়, তবে আমি দিইনি। আমি কীভাবে যেন আজ এসে পড়েছি। আমি ভুল স্বীকার করছি আর এমনটা হবে না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ‘রাত ৮টায় বড় ভাইয়েরা সিডনি ফিল্ডসংলগ্ন জঙ্গলে আমাদের ডাকেন। কিন্তু বড় ভাইয়েরা আসেন রাত ১১টায়। এরপর প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো আমাদেও র‌্যাগ দেওয়া হয়, মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়। ‘ম্যানার’ শেখানোর নামে মা বাবা তুলে গালিগালাজ করেন। সিনিয়রদের সালাম না দেওয়ায় শাসন এবং একজনের গায়ে জুতা ছুড়ে মারেন। লাফাতে বলে কয়েকজনকে ‘মুরগি’ বানিয়ে শাস্তি দেওয়া হয়।’
পরে ওইদিন রাত পৌঁনে দুইটার দিকে সিডনি ফিল্ডসংলগ্ন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের অতিথি কক্ষে র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রদের শাস্তি দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের ভুক্তভোগী ১২ জন শিক্ষার্থী।