Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস জাবিতে আবারও নিয়োগ পাচ্ছে সেই শিবির ক্যাডার!

জাবিতে আবারও নিয়োগ পাচ্ছে সেই শিবির ক্যাডার!

36

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক পদে আবারও নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন এক সময়ের শিবির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ইমন রহমান। তিনি অর্থনীতি বিভাগের ৩৫তম ব্যাচের সদ্য বিদায়ী শিক্ষার্থী। এর আগে ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের আমলে জাবিতে চাকুরী হয় এই শিবির ক্যাডারের । পরে কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে শিবিরের বিষয়টি প্রকাশিত হলে তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।

জানা যায়, সাবেক ভিসি অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের সুপারিশে নিয়োগ পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন তিনি। এছাড়াও জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে লবিং অব্যাহত রেখেছেন এই ক্যাডার। তিনি নিয়োগ পেলে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের আস্তানা গড়ে উঠবে বলে মনে করেন প্রগতিশীল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর।

বর্তমানে ইমন রহমানের বাবা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন। অন্যদিকে এই ক্যাডারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ৪১ ব্যাচের জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের এক ছাত্রী ও সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের প্রভাবশালী নেতার মেয়ের বিয়ে হয়েছে।

গোপন সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান ভিসি থাকাকালীন সময়ে বিশেষ ক্ষমতায় ভর্তি হন ইমন রহমান। ভর্তির প্রথম বছরেরই তার কক্ষে শিবিরে ডায়েরী পাওয়া যায়। এই ঘটনায় তখন ক্যাম্পাসে তোলপাড় শুরু হয়। পরে শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে যোগদেন সাংবাদিকতা পেশায়। ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপিপন্থী সাংবাদিক হিসেবেই ক্যম্পাসে পরিচিত ছিলেন তিনি। এ সময় ক্যাম্পাসকে নানাভাবে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেন তিনি।

পরে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর আরেক ভিসি অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের কাছ যেতে ব্যর্থ হন । এ সময় তিনি ওই ভিসির বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশন করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে রাখেন। পরে শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে আবারও ভিসির সঙ্গে গড়ে তোলেন। ২০১১ সালে ক্যাম্পাসের জামায়াত নেতা রসায়ন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ইলিয়াস মোল্লার মাধ্যমে ভিসির কাছে যেতে সক্ষম হন।

সেই সময়ে পাকিস্থান সরকারের অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সফরে যান তিনি। নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবীদার এই শিবির ক্যাডার পাকিস্থানে গিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১২ সালের ভিসি বিরোধী আন্দেলনে শরীফ এনামুল কবিরকে ভুল পরামর্শ দিয়ে প্রগতিশলী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উস্কে দেয়। সে সময় শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়নে হিসেবে শরীফ এনামুল কবিরকে একের পর এক ভুল পরামর্শ দেয় ইমন। সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীদের মারধর, শিক্ষকদের গ্রেফতার করা, ছাত্রলীগের একটি গ্রুপকে প্রধান্য দেওয়াসহ নানা কাজে কুপরামর্শ দেন তিনি। এ ঘটনায় বেদায়দায় পড়েন তৎকালীন আলোচিত ভিসি অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির। পরে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

অন্যদিকে ২০১৩ সালে অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ভিসি হিসেবে দায়িত্ব নিলে আবারও কেবলা পরিবর্তন করেন এই শিবিরি ক্যাডার। মুক্তিযুদ্ধেও চেতনার বুলি শুনিয়ে ক্রমেই অধ্যাপক আনোয়ারের কাছের লোক হয়ে যান তিনি। এ সময় ক্যাম্পাস অস্থিতিশীলতার পেছনে কলকাঠি নাড়েন তিনি। পরে তার ছাত্রত্ব শেষ হলে ক্যাম্পাসে প্রশাসিনক পদে নিয়োগ পেতে জোর লবিং শুরু করেন এই ক্যাডার। লবিংয়ের সুবিধার্তে ক্যাম্পাসের পার্শ¦বর্তী ইসলাম নগরে থাকেন তিনি। সেখান থেকে এখন নিয়মিত অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের বাসায় যাতায়াত করেন। তার মাধ্যমে বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম কাছে সুপারিশ করতে প্রতিনিয়ত অনুরোধ করেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে শিবির ক্যাডার ইমন রহমান বলেন, আমি প্রশাসনিক পদে চাকুরী নিব এটা তোমাকে কে বলল? আমি এখন ক্যাম্পাস নিয়ে ভাবি না। বিসিএসের পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত আছি। এসব বিষয় নিয়ে নিউজ করার দরকার নেই।