Home সাহিত্য ও বিনোদন চিরনিদ্রায় শায়িত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কিংবদন্তি গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর

চিরনিদ্রায় শায়িত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কিংবদন্তি গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর

36

ডেস্ক রিপোর্ট : রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন কিংবদন্তি গণসংগীতশিল্পী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আলমগীর।
শনিবার (২৪ জুলাই ২) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে খিলগাঁও মাটির মসজিদে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে সকাল ১১টা ১৬ মিনিটে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের পল্লীমা সংসদ প্রাঙ্গণে তাঁর প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে। এরপর সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয় বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের এই অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্বকে। দুপুর পৌনে ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছয় তাঁর মরদেহ।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফকির আলমগীর। মৃত্যুকালে ফকির আলমগীরের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

ফকির আলমগীর ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়নের (মেনন) সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এরই সাথে ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে গণসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। গণঅভ্যুথান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের সামরিক শাসনবিরোধী গণআন্দোলনে তিনি জনগণকে উজ্জীবিত তাঁর গান দিয়ে। তিনি ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি, জনসংযোগ সমিতির সদস্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছেন।
সংগীতের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এ পর্যন্ত পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় ‘একুশে পদক’, ‘শেরেবাংলা পদক’, ‘ভাসানী পদক’, ‘সিকোয়েন্স অ্যাওয়ার্ড অব অনার’, ‘তর্কবাগীশ স্বর্ণপদক’, ‘জসীমউদ্দীন স্বর্ণপদক’, ‘কান্তকবি পদক’, ‘গণনাট্য পুরস্কার’, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক মহাসম্মাননা’, ‘ত্রিপুরা সংস্কৃতি সমন্বয় পুরস্কার’, ‘ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড যুক্তরাষ্ট্র’, ‘জনসংযোগ সমিতি বিশেষ সম্মাননা’, ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড বিশেষ সম্মাননা’ ও ‘বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ’।

ফকির আলমগীর ১৯৬৬ সালের দিকে ছাত্র জীবনে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন গ্রুপ) সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। একইসাথে তিনি ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে গণসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুথান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের সামরিক শাসনবিরোধী গণআন্দোলনে তিনি জনগণকে উজ্জীবিত করেছিলেন তাঁর গান দিয়ে। তাঁর কণ্ঠে উঠে এসেছে নিপীড়িত, বঞ্চিত মানুষের কথা, শোষণ-নিপীড়ন-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অবাধ্য আহ্বান।