অবিলম্বে ২০২১-২২ সালের চুক্তি সম্পাদনপূর্বক চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৩০০ টাকা করার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল রায়।
আজ সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক যুক্ত বিবৃতি নেতৃবৃন্দ বলেন, “নিয়মতান্ত্রিকভাবেই দুই বছর পরপর চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির লক্ষ্যে মালিক, শ্রমিক ইউনিয়ন ও সরকারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদন হওয়ার কথা। কিন্তু মালিকপক্ষ সবসময় এই চুক্তি করার ব্যাপারে তালবাহানা করে আসছে। এর আগে দৈনিক মজুরি ১০২ টাকা থাকাকালীন প্রায় তিন বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হবার পর অনেক ছলচাতুরির মাধ্যমে মজুরি মাত্র ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। সেই ২০১৯-২০ সালের চুক্তির মেয়াদও শেষ হয়েছে ১৯ মাস আগে। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২১-২২ সালের চুক্তির কোনো উদ্যোগ নেয়নি মালিকপক্ষ। চুক্তি দেরিতে হলে স্থায়ী শ্রমিক এরিয়ার বিল পেলেও অস্থায়ী শ্রমিক তা পায় না। ২০২১ সালে ন্যূনতম মজুরি বোর্ড কর্তৃক গেজেট করে এই মেয়াদসীমা ৩ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছিল অগণতান্ত্রিকভাবেই। আমাদের ক্রাফট সংগঠন ‘বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন’ শ্রমিকদেরকে সাথে নিয়ে তার প্রতিবাদ করেছিল। ফলে তা বাস্তবায়ন হয়নি সেই সময়। এভাবে সময় ক্ষেপণ করে শ্রমিকদেরকে ঠকানো হয়। সেই ক্ষোভ থেকেই আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে চা শ্রমিকরা।”
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “বর্তমানে জ্বালানি তেলসহ সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি শ্রমিকদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। সব সেক্টরের শ্রমিকদের অবস্থা খুবই শোচনীয়, চা বাগানের ক্ষেত্রে অবস্থা আরও অমানবিক, নাজুক। যদিও ৩০০ টাকার দাবি মেনে নিলেও শ্রমিকদের প্রয়োজনের তুলনায় তা হবে নগণ্য। তবু দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির এই আন্দোলন শতভাগ যৌক্তিক। কিন্তু মালিকপক্ষ বিভিন্ন গোজামিল ও ফাঁকির হিসাব দিয়ে এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করছে। তাই লড়াকু চা শ্রমিকদের এই আন্দোলন আপোষহীনভাবে জয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানাই।”
দেশের সকল শ্রমিক সংগঠন ও গণতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন মানুষের প্রতি নেতৃবৃন্দ এই আন্দোলনকে শক্তিশালী করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। একইসাথে এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অবিলম্বে ২০২১-২০২২ সালের চুক্তি সম্পাদন করে চা শ্রমিকদের আন্দোলনের দাবি মেনে নেওয়া এবং স্থায়ী ও অস্থায়ী সকল শ্রমিকের প্রাপ্য এরিয়ার বিল দেওয়ার জন্য তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।