Home সাহিত্য ও বিনোদন খুলনা বটিয়াঘাটার সুরঞ্জন সুতার হাত থেকে বাঁচার আকুতি অভিনেত্রী ইতিমা মন্ডলের

খুলনা বটিয়াঘাটার সুরঞ্জন সুতার হাত থেকে বাঁচার আকুতি অভিনেত্রী ইতিমা মন্ডলের

38

খুলনা প্রতিনিধি: খুলনা বটিয়াঘাটার সুরঞ্জন সুতার হাত থেকে বাঁচার আকুতি জানালেন অভিনেত্রী ইতিমা মন্ডল। তিনি আজ (২৩ জানুয়ারি ) সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে খুলনার বটিয়াঘাটার সুরঞ্জন সুতার বিরুদ্ধে ক্রন্দনরত অবস্থায় নানান অভিযোগ করেন। বাঁচবার আকুতি জানান। সম্মেলনে তিনি একটি লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। তাছাড়াও তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও বিষয়টি জানিয়ে লিখিত আবেদন করেছেন বলে জানান।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদনে তিনি বলেন, ” প্রিয় মমতাময়ী মা জননী, আমি ইতিমা মন্ডল, পিতা নারায়ণ মন্ডল সাং ঠিকরাবাদ, উপজেলা বটিয়াঘাটা, জেলা খুলনা। আমি খুলনা সরকারী আজম খান কমার্স কলেজের ছাত্রী ও শেষ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ খুলনা জেলা শাখার সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক। আমি সামান্য অভিনয়ও করে থাকি। আমার বাবা মানসিক রোগী, মা অত্যান্ত অসুস্থ। আমরা অত্যন্ত দরিদ্র। তিন বেলা খেতেও পারি না। মা জননী আপনি আমাকে বাঁচান। আমার পরিবার সদসদের বাঁচান।

তিনি আরও বলেন, ” খুলনার বটিয়াঘাটার ভয়ংকর সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু সুরঞ্জন সুতার লোলুপ দৃষ্টি পড়ে আমার উপর। সরাসরি ও অন্য লোক দিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে, জাল দলিল তৈরি করে, বটিয়াঘাটা এসি ল্যান্ডের সহযোগীতায় অবৈধ রেকর্ড করে, আমাদের মাথা গোজার শেষ সম্বল বটিয়াঘাটা
উপজেলায় ঠিকরাবাদ গ্রামের বসতবাড়ী ভিটামাটি সব দখল করে নিয়েছে। জমাজমি সংক্রান্ত মামলা তুলে না নিলে, আমাকে ও আমার পরিবার সদস্যদের হত্যা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। বহু মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। ভারতে চলে না গেলে, সুরঞ্জন সুতার প্রকাশ্যে আমাকে ধর্ষন করে হত্যা করবে এবং আমার পরিবার সদস্যদের
পেট্রোল দিয়ে জ্বালানি পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। তাঁর ভয়ে জীবন বাচাঁতে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।”

তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে মামলা করতে চাইলে, লবনচেরা থানা থেকে চরম দুঃব্যবহারে করে তাড়িয়ে দিয়েছে। বহু কষ্ট করে বার বার থানায় ধর্না দিয়ে একটা সাধারন ডায়েরি করেছি। যার ডায়েরি নং ৭৭৩ তারিখ ১৯/৮/২০২২। থানা পুলিশ এপর্যন্ত কোন ব্যবস্থাই নেয়নি। খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় এক সময়ের হত-দরিদ্র নারায়ণ সুতারার পুত্র সুরঞ্জন সুতার গত কয়েক বছরের ব্যবধানে সাব
রেজিস্ট্রার ও ভুমি অফিসে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জোগ সাজসে জাল দলিল তৈরি করে বহু
বাড়ি সম্পত্তি বিক্রি, নিরীহ মানুষের সম্পত্তির জাল দলিল তৈরি করে তাদের সম্পত্তি গ্রাস করে
বিক্রি, চুরি, ডাকাতি, ভূমি দস্যুতা, চোরাচালান, মাদক ব্যবসা, এমন কি পিলার ব্যবসা করে শত শত
কোটি টাকার পাহাড় গড়েছে। “

তিনি বলেন, ” আমার বাবা নারায়ণ মন্ডল ঠাকুরদাদা দশরথ মন্ডলের একমাত্র সন্তান। ঠাকুরদাদা দশরথ মণ্ডল ২০০৯ সালে মৃত্যুবরন করেন। ঠাকুরদাদা দশরথ মন্ডলের মৃত হলে বাবা নারায়ণ মন্ডল তাঁর একমাত্র ওয়ারিশ হিসেবে বসতবাড়ীসহ ভিটা মাটি ৫৩.২৫ শতাংশ সম্পত্তির পৈত্রিক সুত্রে মালিক হন। ২০১৬ সালে উক্ত ৫৩.২৫ শতাংশ বসতবাড়িসহ ভিটার জমি বাবা নারায়ণ মন্ডলের নামে নামজারি ও রেকর্ডভুক্ত হয়। খুলনার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ভুমিদস্যু সুরঞ্জন সুতার পরিকল্পিত ভাবে গোলাম সারওয়ার মল্লিক পিতা মৃত আকছের মল্লিক ১৪, জাহিদুর রহমান রোড, খুলনা এর নামে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে নামী ২ টি জাল দলিল তৈরী করে। যার দলিল নং ২৬৪৫/৯২ তাং ১০/১১/১৯৯২ ও ২০91/20 তারিখ ১১/৩/২০২১। প্রশ্ন হলো দশরথ মন্ডল ২০০৯ মৃত্যু বরণ করার পর কি ভাবে ঐ মৃত্যু ব্যক্তি ২০২১ সালে জমি রেজিস্ট্রি করে দিলেন? নারায়ন মন্ডলের নাম ২০১৬ সালে রেকর্ড থাকা সত‍্যেও এসিল্যান্ড ও তার হেডক্লার্ক নাসিম মোটা অংকের বিনিময়ে ২০১৯ সালে বে-আইনী ভাবে গোলাম সারওয়ার মল্লিক এর নাম রেকর্ড দেন। এই অবৈধ রেকর্ডের বিরুদ্ধে নারায়ন মন্ডল বটিয়াঘাটা এসিল্যান্ড অফিসে ১৫০ ধারার মামলা দায়ের করেন। যা খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনাল মামলা বিচারাধীন । মামলা নং ১০৯১/১৪ তারিখ
২৮/৮/২০১৪), খুলনা বটিয়াঘাটা সহকারী জজ আদালত জাল দলিলের বিরুদ্ধে মামলা : ১৪৬/২০২০) ও বিজ্ঞ মহানগর হাকিম আদালতে মামলা (মামলা নং ১৪৫/২২ সি.অর তারিখ ৫/৯/২০২২) বিচারাধীন থাকা অবস্থায় বটিয়াঘাটার এসি ল্যান্ড মাসুদ ও হেডক্লার্ক নাসিম মোটা অংকের বিনিময়ে বে আইনি ভাবে সুরঞ্জন সুতার এর বেনামি
গোলাম সারোয়ার নামে ১৫০ ধারা রায় দিয়ে, নারায়ন মন্ডলের রেকর্ডিস পৈত্রিক
সম্পত্তির রেকর্ড বাতিল করে দেয় এবং সম্পুর্ন বে-আইনিভাবে গোলাম সারোয়ার এর নামে অবৈধ নামজারি বহাল রাখে। আমার প্রশ্ন খুলনা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনাল, সহকারী জজ আদালত ও মুখ্য মহানগর হাকিম। আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় এবং নারায়ণ মন্ডল ও গোলাম সারোয়ার এর তফশিল ভিন্ন ভিন্ন হওয়া সত্যেও কিভাবে বটিয়াঘাটা এসিল্যান্ড মি: মাসুদ নারায়ণ মন্ডলের সম্পত্তি গোলাম সারোয়ার এর নামে অবৈধ নামজারি বহাল রাখেন? “

তিনি বলেন, ” বিষয়টা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। নামজারি বহাল পেয়ে সুরঞ্জন সুতার আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সুরঞ্জন সুতার
আমাদের বসতবাড়ী ভিটামাটি থেকে উচ্ছেদ করে এবং প্রকাশ্যে জীবন নাশের হুমকি প্রদর্শন করে। এই বলে বাবাকে হুমকি দেয়, “আগামী ৭ দিনের মধ্যে ভারতে চলে না গেলে, প্রকাশ্য তোর মেয়েকে রেপ করে মেরে ফেলবো। তোর পরিবারের সবাইকে পুড়িয়ে মারবো। তোদের লাশের নাম নিশানা খুজে পাবে না কেউ। ভয়ংকর এই সন্ত্রাসী ইতিপূর্বে
এলাকায় জমি গ্রাস করার জন্য অনেককে গুম করেছে। তার ভয়ে এলাকাবাসী মুখ খুলতে সাহস
পাচ্ছে না। তাঁর অবৈধ টাকার কাছে স্থানীয় প্রশাসন জিম্মি। প্রশাসনের এক বড় আমলা ও সুপ্রিম
কোর্টের একজন আইনজীবি টাকার বিনিময়ে তার অবৈধ কাজে সহায়তা করে।”

তিনি বলেন, ” প্রিয় মমতাময়ী মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনার আশু
হস্তক্ষেপ ছাড়া সুরঞ্জন সুতার আমাদের বাঁচতে দিবে না। আমরা বাঁচতে চাই। মমতাময়ী মা আমাদেরকে বাঁচান। আমাদের বসতবাড়ী উদ্ধার সহ দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করে আমাদেরকে বাঁচান। আপনার কাছে প্রান ভিক্ষা চাই।”