Home রাজনীতি ক্ষমতাসীনরা জিয়ার ইতিহাস মুছে ফেলতে পারবে না–মির্জা ফখরুল

ক্ষমতাসীনরা জিয়ার ইতিহাস মুছে ফেলতে পারবে না–মির্জা ফখরুল

41

সুব্রত সানা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীনরা যত সমালোচনাই করুক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস থেকে কখনো মুছে ফেলতে পারবে না ।

রবিবার ২৯ মে বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। দলের প্রতিষ্ঠাতার এই দিনটি বিএনপি শাহাদাতবার্ষিকী হিসেবে পালন করে। ৪১তম এই শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ১০ দিনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এই আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে তা শুরু হলো। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সেনাবাহিনীর একদল বিপদগামী সদস্যের গুলিতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শহীদ হন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা ঢাকার বাইরে যাচ্ছি, আমরা বিভিন্ন জেলাতে সম্মেলন করতে যাচ্ছি- আমরা দেখছি মানুষের কী আকুতি, কী আবেগ। কালকে যখন আমি যশোর থেকে ঝিনাইদহ যাচ্ছি-পথে পথে মানুষ চতুর্দিকে দাঁড়িয়ে আছে। মানুষ সেই পুরোনো অবস্থায় ফিরে যেতে চায় যেন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। আজকে জিয়াউর রহমান সাহেবকে যে যত ইচ্ছা বলুক, তাকে খলনায়ক বলুক, পাকিস্তানি চর বলুক আর তাকে সামরিক জান্তা থেকে উঠে আসার কথা বলুক তাতে কিচ্ছু যায়-আসে না। কারণ এই দেশের মানুষের হৃদয়ের মধ্যে তিনি প্রোথিত হয়ে গেছেন। জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছে, তাকে কখনো মুছে ফেলা যাবে না।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হচ্ছেন আমাদের সেই আলোকবর্তিকা, যার দিকে তাকিয়ে আমরা কথা বলব। তার তো ব্যর্থতা নেই। তিনি শহীদ হয়ে গেছেন। কিন্তু তার আদর্শ তো ফুরিয়ে যায়নি। তিনি যে দর্শন দিয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, তিনি যে দর্শন দিয়েছিলেন আমাদের উন্নয়নের রাজনীতি, তিনি যে দর্শন দিয়েছিলেন যে, মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে, আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনোদিন আমরা আপস করব না, সেই রাজনীতি তো টিকে আছে। শুধু টিকে নাই চেষ্টা করেছিল। সেখানে আবার আমাদের আরেকজন নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কথাটা আমার প্রায় মনে হয় যে, তিনি যদি সেই পতাকাটা হাতে তুলে নিয়েছিলেন যেই পতাকা শহীদ জিয়ার পতাকা ছিল-স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র আর উন্নয়নের পতাকা ছিল। ওই পতাকা নিয়ে দেশনেত্রী ৯ বছর সংগ্রাম করেছেন, দীর্ঘ সংগ্রাম। রাস্তায়, পথে-প্রান্তরে, আমাদের এই নেতাদেরকে সঙ্গে নিয়ে, ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন এবং সফল হয়েছেন। ১৯৯০ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়, মুক্তিযুদ্ধের সকল চেতনা, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সকল আদর্শ, সকল কর্মসূচি আওয়ামী লীগ যারা সম্প্রসারণবাদ, আধিপত্যবাদের এজেন্ট তারা আজকে বাংলাদেশকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে গেছে। আজকে গণতন্ত্র নাই, মানুষের অধিকার নাই, ভোটের অধিকার নাই, মানবাধিকার নাই, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ নিষ্পেষিত। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আজকে সময় এসেছে, এই সরকারকে একটা ধাক্কা দিতে হবে। তারা অত্যন্ত দুর্বল। এখন দরকার একটা ধাক্কা দেয়া। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, রাজপথে ফয়সালা হবে। আজকে এই দিনে আমাদেরকে একটাই শপথ নিতে হবে, আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা ধাক্কা দিয়ে এই সরকারকে হটিয়ে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করব।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, অধ্যাপক সাহিদা রফিক, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব প্রমুখ।