Home স্বাস্থ্য কাঁধের জয়েন্টে ব্যথা কেন হয়, কী করবেন?

কাঁধের জয়েন্টে ব্যথা কেন হয়, কী করবেন?

33

ডেস্ক রিপোর্ট: ফ্রোজেন শোল্ডার কাঁধের এমন একটা রোগ, যাতে ব্যথার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং এক সময় তা অসহনীয় হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে কাঁধের নড়াচড়াই অসম্ভব হয়ে পড়ে।

কাঁধের জয়েন্টে ব্যথার কারণ, উপসর্গ ও চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের অর্থোপেডিক ও অর্থোপ্লাস্টি সেন্টারের হেড ও চিফ কন্সালট্যান্ট অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন।

কারণ : ফ্রোজেন শোল্ডারের তেমন কোনো কারণ জানা যায়নি। ডায়াবেটিস, হাইপারলিপিডেমিয়া বা শরীরে অতিরিক্ত মেদ, হাইপার থাইরয়েড, হৃদরোগ ও প্যারালাইসিস রোগীদের মধ্যে ফ্রোজেন শোল্ডারের প্রকোপ বেশি দেখা গেছে। কাঁধের অস্থিসন্ধিতে যে পর্দা থাকে, তার দুটি আবরণ থাকে। একটি ভেতরের দিকে, আরেকটি বাইরের দিকে। এ দুই আবরণের মাঝখানে কিছুটা ফাঁকা জায়গা থাকে, যেখানে এক ধরনের তরল পিচ্ছিল পদার্থ থাকে, যা কাঁধের নড়াচড়ার জন্য জরুরি। এ রোগে ওই দুই পর্দার মাঝখানের জায়গা ও পিচ্ছিল পদার্থ কমে যায়, ফলে কাঁধের নড়াচড়া মসৃণভাবে হয় না এবং প্রচুর ব্যথার সৃষ্টি করে। ব্যথা দিন দিন বাড়তে থাকে এবং এক সময় তা অসহ্য হয়ে পড়ে। সাধারণত মধ্যবয়সেই এ রোগ বেশি দেখা যায়।

উপসর্গ : ফ্রোজেন শোল্ডার রোগীর কাঁধের নড়াচড়া, বিশেষ করে হাত ওপরের দিকে উঠানো এবং হাত ঘুরিয়ে পিঠ চুলকানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। কাঁধের এক্স-রে করলে তা প্রায় স্বাভাবিক পাওয়া যায়। কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে সেখানে আগে আঘাত ছিল বলে জানা যায়। কদাচিৎ কাঁধ কিছুটা শুকিয়ে যাওয়ার মতো মনে হতে পারে। এটা হয় ব্যথার কারণে, দীর্ঘদিন আক্রান্ত কাঁধ ব্যবহার না করলে। আবার কিছু রোগীর ক্ষেত্রে হাত ঝিঁঝি করা, শক্তি কম পাওয়া, এমনকি পাশাপাশি হাত একেবারেই উঠাতে না পারার মতো লক্ষণ দেখা যায়। তাদের খুব সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করা উচিত, রোগটি ফ্রোজেন শোল্ডার, নাকি স্নায়ুরোগজনিত কোনো সমস্যা, নাকি অতীতের আঘাতের ফলে রোটেটর কাফের ছিঁড়ে যাওয়া জনিত কোনো সমস্যা। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসার ধরনও ভিন্ন হয়।

চিকিৎসা : কোনো ধরনের অপারেশন ছাড়াই এ রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়। প্রথমে রোগীকে আশ্বস্ত করতে হবে, এটি খুব সাধারণ একটি সমস্যা। পাশাপাশি হালকা কিছু ব্যথানাশক দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে সঠিক ও বিশেষ কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনা থেকে ফ্রোজেন শোল্ডার ভালো হয়ে যায়, যদিও কিছুটা সময় লাগে। ব্যায়াম বা ব্যথানাশকে কাজ না হলে, অর্থোপেডিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে কাঁধের অস্থিসন্ধিতে স্টেরয়েড ইনজেকশন প্রয়োগও করতে হতে পারে। এটার অবশ্য ফল বেশ ভালো এবং রোগীরাও অনেক সময় এটি নেয়ার জন্য উদগ্রীব থাকেন। তবে স্টেরয়েড ইনজেকশন দিলেও ফ্রোজেন শোল্ডার হলে ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই, যা সব সময় চালিয়ে যেতে হবে। তাই ফ্রোজেন শোল্ডার নামক অর্ধপঙ্গুত্ব নিয়ে আর বসবাস নয়।–যুগান্তর