Home সারাদেশ কক্সবাজারে বিমান বাহিনীর অসহায় কর্মচারীর জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত প্লট দখলের অভিযোগ

কক্সবাজারে বিমান বাহিনীর অসহায় কর্মচারীর জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত প্লট দখলের অভিযোগ

38

জাকির হোসেন আজাদী: অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারে বিমান বাহিনীর অসহায় কর্মচারীর জন্য লটারির মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দকৃত প্লট সরকার বিরোধীরা দখল করে নিয়েছেন। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক বরাদ্দকৃত প্লট নং-৮৬, ব্লক-এ আবাসিক প্রকল্প। এই বিষয়ে নিজের কষ্ট ও দুঃখগাথার কথা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ২০/ ১১/ ২০২২ তারিখে এক আবেগঘন দরখাস্ত লিখেছেন এই প্লটের মালিক বিমান বাহিনীর অসহায় কর্মচারী মোঃ জাহের উদ্দিন। পদবী: ওয়ারেন্ট অফিসার (অবঃ প্রাঃ)। বর্তমান ঠিকানা: পশ্চিম এস এম পাড়া ৫ নং ওয়ার্ড, আলীর জাহান, থানা ও জেলা: কক্সবাজার।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরখাস্তে তিনি বলেন, “
আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত একজন নিম্ন পদস্থ কর্মকর্তা। আমি সরকারী চাকুরীতে দায়িত্ব পালনকালে কর্মে সততা, নিষ্ঠায় ও দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে শতভাগ সরকারের অনুগত থেকে দায়িত্ব পালন করেছি। বিমান বাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার পদে থেকে আমি অবসর গ্রহন করি। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ডিফেন্স কোটায় লটারীর মাধ্যমে আমার নামে প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হয়। “

তিনি আরও বলেন, ” বর্ণিত লটারীতে আমার অনুকূলে প্লট নং- ৮৬, ব্লক- এ, বরাদ্দ প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য এ প্লটে আর কোন অংশীদার নেই। যেহেতু আমি একজন নিম্ন পদস্থ কর্মকর্তা এবং সৎভাবে জীবন যাপন করেছি। এ কারনে আমার গচ্ছিত জি.পি ফান্ডের টাকা, স্ত্রীর গয়না ও পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে প্লটের কিস্তির সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করি এবং পরবর্তীতে আমার নামে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালের কর্তৃক প্রদত্ত প্লটের খাজনা খারিজ, মিউটেশনসহ সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করি (কপি সংযুক্ত)। নিজের অর্থায়নে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে একতলা ভবন নির্মাণ করি। আমার সন্তানদের লেখাপড়া ও আমার চাকুরীর প্রয়োজনে ঢাকায় বসবাস করি এবং সম্পত্তি তত্ত্বাবধায়নের জন্য আমি আমার স্বশুরবাড়ীর দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের নিকট দায়িত্ব প্রদান করি।”

তিনি বলেন, ” ভাগ্যের নির্মম পরিহাস কিছুদিনের মধ্যেই বিএনপি দলীয় রামু উপজেলার সহ-সভাপতি জাভেদ ইকবাল পিতা: মোক্তার আহম্মেদ (মোক্তার মেম্বার) গ্রাম: কাইম্মার ঘোনা, চেইদা, ইউনিয়ন: মিঠাছড়ি, থানা: রামু, জেলা: কক্সবাজার
মোবাইল ০১৮১৯৩৩৪৯২২। রামু উপজেলার জামায়াতের সক্রিয় সদস্য রফিকুল ইসলাম পিতা: মরহুম জামাল উল্লাহ (জামায়াতের আমির), স্থায়ী ঠিকানা: পহরচান, ১১৯৮ পল্লবী লেইন, দক্ষিণটেকপাড়া,কক্সবাজার পৌরসভা মোবাইল
০১৮১৯১০২৪৩০ ও জাহিদুল ইসলাম সাহেল জামায়াতের সক্রিয় সদস্য পিতা: মরহুম জামাল উল্লাহ (জামায়াতের আমির), স্থায়ী ঠিকানা: পহরচান, ১১৯৮ পল্লবী লেইন, দক্ষিণটেকপাড়া, কক্সবাজার। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত আবাসিক প্রকল্পের কতিপয় অসাধু, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সহায়তায় আমার স্বাক্ষর জাল করে ভূয়া চুক্তিপত্র প্রস্তুত করে আমার নামিয় জমিটি জোরজবরদস্তি করে দখল করে। যা তদন্ত করলে প্রমাণ পাওয়া যাবে। “

তিনি বলেন, ” শুধু তাই না জাতীয় গৃহায়ন ও গনপূর্তের কতিপয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত আমার নামীয় ব্যক্তিগত প্লটের ফাইলটি উদ্দেশ্য প্রনোদীতভাবে কক্সবাজার গৃহায়ন ও গণপূর্ত কিছু অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা/কর্মচারীকে উৎকোচ এর মাধ্যমে ভুয়া জাল কাগজ পত্র প্রস্তুতপূর্বক নথিযাত করে। জাবেদ ইকবাল ও রফিকুল ইসলাম গং আমার নির্মিত ভবনের কক্ষে নারী ঘটিত অসমাজিক কার্যকলাপ, মদ, গাঁজা, ইয়াবা সেবনসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে স্থানীয় কিশোর ও যুব সমাজ দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিএনপি দলীয় জাবেদ ইকবাল ও জামায়াত নেতা রফিকুল ইসলাম মাদক ব্যবসা ও চোরাচালানের সংজ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ সক্রিয় রয়েছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারলাম বিএনপি ক্ষমতা থাকা অবস্থায় এদের যোগাযোগ ছিল সরাসরি হাওয়া ভবনের সাথে। কক্সবাজার এলাকায় তাঁদের নামে-বেনামে বিলাস বহুল হোটেল রেস্টুরেন্ট ও বাড়ি রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০.০০ থেকে ৫২.০০ কোটি টাকা। দুর্নীতি দমন কমিশন ও মাদক অধিদপ্তরের বিষটি খতিয়ে দেখা দরকার। মাদকের গডফাদার হিসেবে পরিচিত এই জাবেদ ইকবাল ও রফিকুল ইসলাম।”

তিনি বলেন, “আমার জমিটি প্রায় বিশ বছরের ও বেশী সময় তাদের দখলে রেখেছে এবং চালিয়ে যাচ্ছে অসমাজিক কার্যকলাপ। আমি সততা, নিষ্ঠায় ও দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে সরকারি চাকুরি করেছি, অন্যায়ের সাথে কখনও আপোশ করিনি। অথচ, আমার অর্থায়নে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক সরকারের দেওয়া উপহার পাঁচ কাঠার প্লটে এখন চলছে অসাজিক কার্যকলাপ এটা আমার দেশের ও জাতির জন্য একটি লজ্জাকর ও কলঙ্কিত অধ্যায়। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ আমার নামে বরাদ্দকৃত প্লট নং – ৮৬, ব্লক- এ, আবাসিক প্লটটিতে আমাকে পাঁচ তলা ভবনের অনুমতি প্রদান করেছে। “

তিনি বলেন, “জাবেদ ইকবাল ও রফিকুল ইসলাম গং খুবই দুধর্ষ ও ভয়ংকর প্রকৃতির। আমি ও আমার পরিবারকে বিভিন্ন সময় তারা প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে আসছে। এতে আমি পরিবার পরিজন নিয়ে দারুন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এদের বিরুদ্ধে মাদক, চোরাকারবারী, জমি দখল, জাল জালিয়াতি ও অসমাজিক কর্মকলাপের বিবরনী দৈনিক পত্রিকায়ও প্রকাশ প্রায় এবং উভয়ের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা (পেপার কাটিং/মামলার কপি সংযুক্ত)। এই জাবেদ ইকবাল ও রফিকুল ইসলাম তাদের অবৈধ মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে স্থানীয় কিছু অসৎ প্রশাসনের কর্মকর্তা/কর্মচারিদেরকে ইচ্ছা খুশিমত ব্যবহার করে আসছে। এ কারনে
একাধিক বার স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কোনরুপ সহযোগিতা পাইনি। মিথ্যা অযুহাতে পাশ কাটিয়েছে বারংবার। এমনকি তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও প্রেশ ক্লাবের কিছু অসাধু সাংবাদিক ফেরামের ব্যক্তিবর্গ সমমনা ছাত্র সংগঠনকেও মোটা অঙ্কের অর্থ ও মিথ্যে তথ্য দিয়ে স্বার্থ হাসিল করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।”

তিনি বলেন, ” যেহেতু, আমি ঢাকায় বসবাস করি এবং ওরা স্থানীয় হওয়ায় কারো কাছ থেকেই আমি মানবিক সহযোগিতা পাইনি। জাবেদ ইকবাল ও রফিকুল ইসলাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কে ব্যহত জনপ্রিয়তাকে নস্যাত করার জন্য মিথ্যা গুজব সহ আপনার ও আপনার মেগা প্রকল্পের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে আসছে। জাবেদ ইকবালের ব্যক্তিগত আইডি (কপি সংযুক্ত) তদন্ত করলে সত্যতা মিলবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার ঘোষনা কাগজ যার জমি তাঁর এই শ্লোগান কে আমি নিজেও ধারণ করি। গণতন্ত্রের মানসকন্যা, বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমি ও আমার পরিবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নির্ভীক সৈনিক। আমি ও আমার পরিবার বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের লক্ষে আপনার গৃহীত পদক্ষেপে বিমুগ্ধ।
আপনি বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে নতুন আঙ্গিকে, নতুন মোড়কে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন নিঃসন্দেহে। আপনি দু:খী মানুষের কষ্ট লাঘবের শেষ আশ্রয়স্থল। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কর্নফুলী টানেল, পায়রা সমুদ্র বন্দর, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, স্বপ্নের পদ্মাসেতুর মত মেগা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বিশ্বের দরবারে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন। গৃহহীনদের জমিসহ আশ্রয় প্রদান করে দুঃখী মানুষের শেষ ভরসার আশ্রয় স্থল শেষ ঠিকানা আপনি। আজ আমার সবকিছু থেকেও আজ আমি নিঃস্ব। আমার নিজের মাথা গোঁজার ঠাই চাকুরী জীবনের শেষ সম্বলটুকু আজ বেদখল।”

তিনি বলেন, ” এমতাবস্থায়, মাদার অব হিউম্যানিটি জনদরদী নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমি প্রজাতন্ত্রের স্বল্প বেতনভুক্ত সাবেক একজন কর্মচারী ও বাংলাদেশের নিগৃহীত একজন নাগরিক হিসেবে শেষ আশ্রয় স্থল আমার প্রপ্য অধিকার ফিরে দেবার জন্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক বরাদ্দকৃত প্লট নং- ৮৬, ব্লক- এ, এর দখলন্তে অপশক্তিকে উচ্ছেদ করণে আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”