Home জাতীয় এক্সন মবিলকে দিয়ে সাগরের তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের পাঁয়তারা বন্ধ কর

এক্সন মবিলকে দিয়ে সাগরের তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের পাঁয়তারা বন্ধ কর

28

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের স্বার্থকে এড়িয়ে মার্কিন কোম্পানিকে সমুদ্রের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান বরাদ্দ দেওয়া ও ভারতকে সমুদ্র বন্দর ব্যবহারে একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঢাকায় আজ বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন। আজ, শনিবার যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে রাজধানীর পল্টন মোড়ে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত করে বঙ্গোপসাগরের তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দাবি থাকলেও সরকার এ বিষয়ে ভূমিকা নেয়নি। অতীতে মডেল পিএসসি-২০০৮ এর মাধ্যমে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানীকে গ্যাস অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়ার বিরুদ্ধে দেশবাসী রুখে দাড়িয়েছিল। সভা-সমাবেশ-হরতাল পালিত হয়েছিল। আওয়াজ উঠেছিল, “শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত করে নতুন মডেলে জরুরি ভিত্তিতে দরপত্র আহ্বান ও সাগরের গ্যাস উত্তোলন করতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুমের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহীন ভুইঞার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ত্রিদিব সাহা, ঢাকা মহানগর উত্তর এর সভাপতি চৌধুরী জোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন।
সমাবেশের বক্তব্যে বক্তারা আরো বলেন, পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে দীর্ঘ নীরবতা ভেঙ্গে সরকার সাগরের ১৫ টি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দায়িত্ব মার্কিন বহুমাত্রিক কোম্পানী এক্সন মবিলকে দিতে যাচ্ছে। কি কি শর্তে দেওয়া হচ্ছে তা দেশবাসী জানে না। এই কোম্পানী আফ্রিকার ‘চাঁদ’ এর দক্ষিণাঞ্চলে তেল পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের রিগান প্রশাসনকে ব্যবহার করে ফরাসী প্রতিযোগী কোম্পানিকে হটিয়ে মাত্র ১২.৫% রয়্যালিটি ও ৫০% ট্যাক্সের শর্তে এক্সন মবিল এর নেতৃত্বে একটি কনর্সোটিয়াম সরকারের সাথে চুক্তি করে। ঐ চুক্তিতে চাঁদের জনগণের লাভ হয়নি। বরং দেশের সম্পদ পাচার হয়েছে। এই চুক্তি যে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে সরকারের উপর প্রভাব বিস্তার করেছে। এই কোম্পানীকেই সরকার সাগরের তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দায়িত্ব দিতে যাচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। এর জন্য কোনো প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। এখানে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান বাপেক্স যুক্ত থাকবে কি না, তাও জানা যায়নি। দেশের তেল-গ্যাসসহ জাতীয় সম্পদের উপর শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত করে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান ছাড়া কোন কোম্পানির সাথে চুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে না।
বক্তারা বলেন, অতীতে জাতীয় সম্পদের উপর মালিকানা নিশ্চিত রাখতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ বিদ্যুৎ বন্দর জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত ‘খনিজ সম্পদ রফতানি নিশ্চিত করণ আইন ৩৯ পাশ করার দাবি জানিয়েছে। সমাবেশ থেকে এই আইন পাশ করার দাবি পুনঃব্যক্ত করেন বক্তারা। এক্সন মবিলের সাথে চুক্তির সব বিষয় উন্মুক্ত না করে, জনগণের মতামত ছাড়া জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কোন চুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। সাগরের তেল-গ্যাস অনুসন্ধান জরুরি, তবে তা জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয়। সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান-উত্তোলনের চুক্তিসমূহ দেশবাসীর সম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানান তারা। নেতৃবৃন্দ কেবল ভারতের স্বার্থে পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ট্রানজিট এবং ট্রান্সশিপমেন্ট হিসেবে ব্যবহারের জন্য স্থায়ী আদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানান।