স্টাফ রিপোটার: রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের নিরাপদ আবাসন নিশ্চিতসহ ৬ দফা দাবি অন্তর্ভূক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, নিম্ন আয়ের মানুষেরা জলবায়ু সংকটে উদ্বাস্ত হয়ে নগরের বস্তিবাসীতে অমানবিক জীবন যাপন করছে। প্রতিটি ঋতু পরিবর্তনের সময়েই শুধুমাত্র আবাসন উপকরণ ও আবাসনের অবস্থানের কারণে অধিকাংশ বস্তিবাসী নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘নগরদরিদ্রবান্ধব নির্বাচনী ইশতেহার চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা এ সব কথা বলেন। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বারসিক’ ও কোয়ালিশন ফর আরবান পুওর (কাপ)’র আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন কাপের নির্বাহী পরিচালক রেবেকা সান-ইয়াত। আলোচনায় অংশ নেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সোবহান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ^াস, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাকিলা পারভীন, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, বস্তিবাসী অধিকার রক্ষা আন্দোলনের সভানেত্রী হোসনে আরা বেগম রাফেজা, পরিবেশপত্রের সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল প্রমুখ। গবেষক ও লেখক পাভেল পার্থের সঞ্চালনায় সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বারসিকের নগর গবেষক জাহাঙ্গীর আলম।
সভায় উত্থাপিত দাবিনামায় আরো বলা হয়, নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য ভর্তুকী মূল্যে ও সহজভাবে পানি, বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে। নগর দুর্যোগকে বিচেনায় নিয়ে নগর দরিদ্রদের জন্য বিশেষ ঝুঁকি ভাতা, প্রনোদনা ও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বস্তিবাসী শিশুদের শিক্ষার জন্য সরকারি স্কুলের ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামের স্যাটেলাইট ক্লিনিকের মত শহরের বস্তিতে ক্লিনিকের ব্যবস্থা করতে হবে। বস্তি এলাকায় পরিকল্পিত বর্জ্যব্যবস্থা ও বর্জ্য থেকে সম্পদ রূপান্তরের কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
সভায় উত্থাপিত মূল বক্তব্যে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন, কাজের সংকটসহ নানাবিধ কারণে শুধু প্রতিদিন এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৮০০ মানুষ ঢাকা শহরে আসছে। আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের অধিকাংশ মানুষ শহরের অনিরাপদ, ঘিঞ্জি, ঘনবসতিপূর্ণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপদ অবাসনসহ সকল ধরণের নাগরিক সেবা বঞ্চিত বস্তি এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছে। যেখানে আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন ও সামাজিক নিরাপত্তা সেবা পরিসেবাসহ নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। এর বাইরে বস্তি উচ্ছেদ, আগুনে বস্তি পুড়ে যাওয়া, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসবাস করার কারণে পরিবারের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে তারা অনিশ্চিত জীবন পার করে। এই অবস্থায় নগর দারিদ্র ও সামাজিক বৈষম্য কমানোর জন্য ভর্তুকীমূল্যে পণ্য বিক্রি, নানা ধরণের প্রনোদনা, সরাসরি আর্থিক সহায়তা এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টিনীর মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন জরুরি।