Home মতামত আরও গ্রহণযোগ্য, আস্থাভাজন পার্টি গড়তে হবে

আরও গ্রহণযোগ্য, আস্থাভাজন পার্টি গড়তে হবে

36

সিপিবি’র ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

.…….….………………………………………………

“কংগ্রেসে মূল স্লোগানে উচ্চারিত হয়েছে- ‘দুঃশাসন হটাও, ব্যবস্থা বদলাও, বিকল্প গড়ো’।৭৫ বছরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা এই সংগ্রাম বেগবান করার শপথ নিয়ে এগোচ্ছি। শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষাকারী প্রচার মাধ্যমের দ্বি-দলীয় ধারার প্রচার ও বর্তমান ব্যবস্থা বহাল রেখে সমস্যার সমাধান খোঁজার আলোচনার ভিড়ে আমাদের কথা তুলে ধরতে সারাদেশের পার্টির সদস্য, সমর্থকদের বিশেষ ভূমিকায় নামতে হবে। “

………..….………………………………………………………….

রুহিন হোসেন প্রিন্স:
এদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হওয়া কমিউনিস্ট পার্টির ৭৫তম বার্ষিকী চলছে। ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম, গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা,বিভিন্ন শ্রেণি;পেশার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বৈষম্য-দুর্নীতি-লুটপাট বিরোধী সংগ্রাম, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম, সাম্রাজ্যবাদ-আধিপত্যবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্তি তথা সমাজতন্ত্রের পক্ষে একদল লড়াকু মানুষ গড়ে তোলা, শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের সাথে থেকে তাদের সংগঠিত করে মুক্তির পথে অগ্রসর করার মধ্য দিয়ে লড়াই-সংগ্রাম, ঐতিহ্য, আর গৌরবের ৭৫ বছর উদযাপন করছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।

এ বছর কমিউনিস্ট ইশতেহার প্রকাশিত হওয়ার ১৭৫ বছরও। কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো প্রকাশিত হওয়ার ১০০ বছর পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ কমিউনিস্ট পার্টি গঠিত হয়।

এ অঞ্চলে পার্টি গড়ে ওঠার পটভূমি আরও দীর্ঘ। সমাজ বিকাশের ধারায় বৈষম্য-নিপীড়ন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে এ অঞ্চলে চলতে থাকে। বিভিন্ন যুগে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, দুর্ভিক্ষ ছিল সাধারণ মানুষের নিত্যসঙ্গী। সম্রাট শাহজাহানের তাজমহল নির্মাণের সময়েও পাঞ্জাব, গুজরাট, কাশ্মির, উড়িষ্যা, দক্ষিণাত্যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।
রাজা-জমিদারদের অত্যাচার-অন্যায়-শোষণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে কৃষক বিদ্রোহ সংগঠিত হয়। শ্রমিকশ্রেণির উদ্ভব হওয়ার পর শ্রমিকশ্রেণি শোষণ-অত্যাচারের বিরুদ্ধে ধর্মঘটসহ নানা সংগ্রামের সূচনা করে। এসব সংগ্রাম শুধুমাত্র শোষণ-নিপীড়ন, উপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সীমাবদ্ধ থাকেনি, এক পর্যায়ে স্বাধীনতা সংগ্রামেও রূপ নেয়। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহে ব্যাপক কৃষক ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। এটাকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলে অভিহিত করা হয়।
ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য এই ভূখণ্ডে নানামুখী আন্দোলন সংগঠিত হয়। এ সময় বিশ্ব পরিসরে সামজতন্ত্রের আন্দোলনের প্রভাব এসব মুক্তিকামীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। কমিউনিস্ট ইশতেহার, মার্কসবাদ এবং ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লব এই প্রভাবকে আরও বিস্তৃত করে। ১৯২০ সালের ১৭ অক্টোবর তৎকালীন রাশিয়ার উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে ভারতের ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিভিন্ন ধারার প্রবাসী বিপ্লবীরা অবিভক্ত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির গড়ার গোড়াপত্তন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯২৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা দেশের কমিউনিস্ট গ্রুপগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে কানপুর সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে তৎকালীন সর্ব ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করে। শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের আন্দোলনের ধারার পার্টি বিকশিত হতে থাকে। কমিউনিস্টদের হত্যার শিকার, নির্যাতন, জেল-জুলুম-আত্মগোপন এ-তো ছিল নিত্যসঙ্গী।
দেশ বিভক্তির পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানে, পূর্ব পাকিস্তানে কমিউনিস্ট পার্টি পৃথক আঞ্চলিক কমিটি ও পরবর্তীকালে ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ এ অঞ্চলে কমিউনিস্ট পার্টির প্রাদেশিক কমিটি গঠন করা হয়।
এ সময় সারা ভারতে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য সংখ্যা ছিল ৯০ হাজার। এরমধ্যে এ অঞ্চলের পার্টির সদস্য সংখ্যা ছিল ১২ হাজার। পাকিস্তান আমলের শুরুতে তৎকালীন প্রতিক্রিয়াশীল সরকার কমিউনিস্টদের ওপর প্রচণ্ড দমন, নির্যাতন, নিপীড়ন আর অপপ্রচার চালায়। পার্টি বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাবরণ করেন। হিন্দু পরিবার থেকে আসা অসংখ্য কমিউনিস্ট দেশ ত্যাগে বাধ্য হন। পাকিস্তানের প্রথম ৩/৪ বছরে অন্তত শতাধিক কমিউনিস্টকে হত্যা করা হয়। ঐ সময়ে পার্টির সদস্য সংখ্যা ২৫০/৩০০ জনে নেমে আসে।
ঐ সময় পার্টি আত্মরক্ষা করে পুনরায় সংগঠিত হওয়া ও মেহনতি মানুষের মাঝে লেগে পড়ে থেকে ঘুরে দাঁড়ায়। পুরো পাকিস্তান আমলজুড়ে প্রায় আত্মগোপনে থেকে পাকিস্তানী শাসকদের বিরুদ্ধে নানামুখী আন্দোলন গড়ে তোলে। ৫২’র ভাষা আন্দোলন-তার পূর্বে পটভূমি গড়ে তোলা, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৫৮’র আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফার সাথে ১১ দফার ভিত্তিতে ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত করায় পার্টি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ সময় ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলা, ছাত্র আন্দোলন, সাংস্কৃতিক আন্দোলন, নারী আন্দোলন গড়ে তোলা, কৃষক-শ্রমিকের আন্দোলন বিকশিত করা, নানা সংগঠনের অভ্যন্তরে কাজের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল ধারার বিকাশ ঘটানোয় পার্টি বিশেষ ভূমিকা রাখে। একদল তরুণকে বিভিন্ন শ্রেণি সংগঠন গড়ে তুলতে আত্মনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করে।
১৯৭০-৭১ সালে আন্দোলনের পটভূমিতে পার্টি আধা প্রকাশ্য ভূমিকায় কাজ শুরু করে। মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের সমন্বয়ে যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠন করে স্বশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নেন। সম্মুখ লড়াইয়ে কমরেডরা জীবন দেয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বসহ সারা বিশ্বে জনমত গড়ে তুলতে পার্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে পার্টি প্রথম প্রকাশ্য সমাবেশ এবং কাজ শুরু করে। এরপর একাধিক সময়ে পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয়। পার্টির নেতাদের জেলে যেতে হয়। ১৯৭৫ এর প্রতিক্রিয়াশীল সামরিক ক্যু, একাধিকবার সামরিক শাসনের মধ্যে পার্টি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের সাথে শ্রেণিপেশার মানুষের আন্দোলন গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। দেশের মানুষের মধ্যে গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা, শোষণ-বৈষম্যবিরোধী চেতনা গড়ে তোলা, সাম্রাজ্যবাদের মুখোশ উন্মোচনসহ সমাজতন্ত্রের চেতনা বিকাশে এবং সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠায় শ্রমিক শ্রেণিসহ মেহনতি মানুষকে সচেতন ও সংগঠিত করার কাজ অগ্রসর করে চলেছে।
এরমধ্যে ১৯৯৩ সালে বিলোপবাদীদের খপ্পর থেকে পার্টি রক্ষা ছিল অন্যতম সংগ্রাম। সারাদেশের কমরেডদের দৃঢ়তায় আদর্শ, শ্রেণিভিত্তি ও মূল লক্ষ্য সমুন্নত রেখেই কমিউনিস্ট পার্টি এগুচ্ছে।

চলার পথে কমিউনিস্ট পার্টির যে ভুল-ভ্রান্তি ছিল না, এমন নয়। যৌথ নেতৃত্বের পার্টি হিসেবে কমিউনিস্ট পার্টি খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে এসব ভুল চিহ্নিত, স্বীকার করে পথ চলছে।

এসময়ে পার্টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন দেশের কমিউনিস্ট ও প্রগতিশীল দলগুলোর সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে প্রয়োজন মতো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভূমিকা রেখেছে।
দেশের এক বিশেষ রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতিতে পার্টি ২০২২ এর ২৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি দ্বাদশ কংগ্রেস (জাতীয় সম্মেলন) সম্পন্ন করেছে। এই কংগ্রেস নির্ধারিত পথে পার্টি তার কার্যক্রম অগ্রসর করছে।
‘বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) তার গঠনতন্ত্রে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি এ দেশের শ্রমিকশ্রেণি ও শ্রমজীবী জনগণের বিপ্লবী রাজনৈতিক দল। সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা করা এই পার্টির লক্ষ্য।’
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদ-লেনিনবাদের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী দ্বারা তার সকল কার্যক্রম পরিচালনা এবং নীতিসমূহে সচেষ্ট থাকবে’। —
‘পার্টি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সমাজ-বিকাশের ধারার বৈশিষ্ট্যতা ও জনগণের সামাজিক মনস্তত্ত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সুনির্দিষ্ট বাস্তবতাকে যথাযথভাবে বিবেচনায় নিয়ে এই পার্টি চূড়ান্ত লক্ষ্যের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য মার্কসবাদী-লেনিনবাদী নীতি অনুসারে সুনির্দিষ্ট সময়ে সুনির্দিষ্ট কর্তব্য নির্ধারণ করবে।
লক্ষ্য উদ্দেশ্যের দীর্ঘ কথার মধ্যে বলা হয়েছে, ‘এই পার্টি প্রত্যেক নাগরিকের স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অবাধ অধিকার ও প্রত্যেকের ক্ষেত্রে বিবেকের স্বাধীনতা সুরক্ষার জন্য সবসময় সচেষ্ট থাকবে।’
কংগ্রেসে গৃহীত দলিলে পার্টির গৃহীত ঘোষণা ও কর্মসূচিতে সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। দেশ ও মানুষের মুক্তির জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে পার্টির বিকল্প প্রস্তাবনা সেখানে উল্লেখিত আছে।
কংগ্রেসে গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাবে, চলমান দ্বি-দলীয় রাজনৈতিক মেরুকরণের বাইরে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলা এবং কমিউনিস্ট পার্টিকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এখনকার রাজনৈতিক কর্তব্যে বলা হয়েছে, ‘গণতন্ত্রহীনতা, পুঁজিবাদী শোষণ-শাসন, লুটপাটতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদের বিপদ আমাদের দেশ এবং দেশের অধিকাংশ মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে।’ …
সার্বিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে আরও বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে যে পচন ও অবক্ষয় দেখা দিয়েছে, সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তন ছাড়া কোনো কিছু দিয়ে সেই সংকট সমাধান করা যাবে না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা লুটপাটতন্ত্র ও শক্তি ভারসাম্যের ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি লুটেরা শোষণচক্রের আধিপত্য এবং বুর্জোয়া রাজনীতির বিদ্যমান ‘দ্বি-দলীয় মেরুকরণ কাঠামোর বেড়াজাল ভেঙে বামপন্থিদের নেতৃত্বে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি এবং গণশক্তির সচেতন ও সংগঠিত উত্থান ছাড়া বর্তমান দুঃসহ অবস্থার মৌলিক ও স্থায়ী কোনো পরিবর্তন সম্ভব হবে না।’
এজন্য সুনির্দিষ্ট কাজও চিহ্নিত করা হয়েছে।

কংগ্রেসে মূল স্লোগানে উচ্চারিত হয়েছে- ‘দুঃশাসন হটাও, ব্যবস্থা বদলাও, বিকল্প গড়ো’।
৭৫ বছরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা এই সংগ্রাম বেগবান করার শপথ নিয়ে এগোচ্ছি। শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষাকারী প্রচার মাধ্যমের দ্বি-দলীয় ধারার প্রচার ও বর্তমান ব্যবস্থা বহাল রেখে সমস্যার সমাধান খোঁজার আলোচনার ভিড়ে আমাদের কথা তুলে ধরতে সারাদেশের পার্টির সদস্য, সমর্থকদের বিশেষ ভূমিকায় নামতে হবে।

লাল পতাকার নিশানাকে মানুষের আস্থার স্থলে পরিণত করতে সর্বত্র দৃশ্যমান বিকল্প হতে মানুষের মাঝে লেগে পড়ে থেকে কাজ করতে হবে। শুধু কেন্দ্রে নয় এলাকায় এলাকায় বিভিন্ন প্রগতিশীল, বামপন্থি দল, সংগঠন, ব্যক্তিকেও এই সংগ্রামে শামিল করাতে হবে। নানা দুর্বলতা সত্ত্বেও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কার্যক্রমকে অগ্রসর করতে হবে।
বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে সচেতন ও সংগঠিত করে তার নিজের দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ করা এবং চলমান দুঃশাসনবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে হবে।
এসব কাজের মধ্য দিয়ে পার্টিকে দেশের মানুষের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য ও আস্থাভাজন পার্টি হিসেবে গড়ে তোলাই হবে ৭৫তম বার্ষিকীর অন্যতম শপথ।
লড়াই, সংগ্রাম, গৌরব, আত্মত্যাগ ও নীতিনিষ্ঠ রাজনীতির প্রতীক বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ৭৫তম বার্ষিকীতে, পার্টিকে অগ্রসর করতে, ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা শহীদ হয়েছেন, আত্মত্যাগের পথে এসেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
মুক্তিযুদ্ধের ধারায় শোষণ-বৈষম্য-দুর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধ সমতাভিত্তিক গণতান্ত্রিক দেশ গড়তে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদার করার মধ্য দিয়ে এইসব শহীদের প্রতি আমরা শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধা জানাবো।

-লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি।
১০ মার্চ ২০২৩ ।