স্টাফ রিপোটার: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির এক স্বপ্ন মারা গেছে, এখন আরেক স্বপ্ন দেখছে। কী স্বপ্ন দেখছে? শেখ হাসিনার পদত্যাগ। তাদের এক দফা, আমাদেরও এক দফা- সংবিধান সম্মত নির্বাচন। আমাদের এক দফা, শেখ হাসিনাকে রেখে, তার অধিনেই নির্বাচন। বুধবার বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেইটের সামনে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ এই শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির খবর জানেন, তাদের এক দফা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আমাদের এক দফা শেখ হাসিনাকে ছাড়া নির্বাচন হবে না। বিএনপি জানে নির্বাচন হলে তারা হেরে যাবে। শেখ হাসিনা’র জনপ্রিয়তার কাছে ভেসে যাবে। তাই তারা শেখ হাসিনাকে হিংসা করে। শেখ হাসিনার অপরাধ উন্নয়ন করেছেন। শেখ হাসিনার অপরাধ ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বেন।
বিদেশিদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা চান অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। আমরাও সেটা চাই। তবে সেই সুষ্ঠু নির্বাচনে কোন দল বাধা দিতে আসলে প্রতিহত করা হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কারও কর্মসূচিতে বাধা দেবে না, কারও কর্মসূচিতে বাধাও হবে না। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিতে আসলে প্রতিহত করবো। কোনো অপশক্তির সঙ্গে আপস করবো না। যাদের হাতে রক্তের দাগ, তাদের সঙ্গে আপস বা সংলাপ নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনা’র সততাকে পছন্দ করে। তিনি সারারাত জেগে জেগে জনগণের কথা ভাবেন। আমরা এমন নেত্রীকে হারাতে চাই না। উন্নয়ন যাদের পছন্দ নয়, তারা শেখ হাসিনাকে চায় না। তার অপরাধ তিনি উন্নয়ন করেছেন। স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আজকেও অনেক লোক আনার চেষ্টা করেছে। স্বপ্ন দেখেছে। আগেও স্বপ্ন দেখেছিল, ওই স্বপ্ন গভীর রাতে গরুর হাটে মারা গেছে। এখনকার এক দফার স্বপ্নও নয়াপল্টনের কাদা-পানিতে আটকে গেছে।
সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি বলে দেশে গণতন্ত্র নেই। বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। আপনাদের যতই সুবিধা দেওয়া হোক আপনাদের চরিত্র বদলাবে না। এই দেশে একমাত্র শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই গণতন্ত্র চর্চা হচ্ছে, অন্য কোন সরকারে সময়ে সেটা হয়নি।

আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে ব্যার্থ হয়েছে। কিন্তু তাদের সেই রুপ বা চিন্তা ধারা এখনও বদলায়নি।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, আজকের এই শান্তি সমাবেশ প্রমাণ করেছে, শেখ হাসিনা ছাড়া আর কারো এই দেশের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করার প্রশ্নই আসে না। বাংলাদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরে আসার সুযোগ নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সংবিধানের বাইরে নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এই দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক বিএনপি তা চায় না। তারা চায় বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি ২০১৩ সালে এক দফা ঘোষণা করেছিল, ২০১৪ সালে করেছিল। ২০১৫ সালে করেছিল। ২০১৯ সালেও এক দফা ঘোষণা করেছিল। কয়েকদিন আগেও এক দফা ঘোষণা করেছে। তাদের এক দফা বেলুন ফোটার মতো ফুটে গেছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আজকের এই সমাবেশ এমন একটা সময়ে হচ্ছে, যখন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে তখন বিএনপি-জামায়াত নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। তারা আজ সমাবেশ ও শোডাউন করছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশ আরও বক্তব্য রাখেন সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।