Home বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আইসিটি খাতে আশার আলো শেখ হাসিনা আইটি পার্ক

আইসিটি খাতে আশার আলো শেখ হাসিনা আইটি পার্ক

30

ডেস্ক রিপোর্ট: যশোর আইটি পার্ক নামেও পরিচিত শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। যশোর শহরের নাজির সংকরপুর এলাকায় অবস্থিত দেশের প্রথম আইটি পার্ক, ২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরে আন্তর্জাতিক মানের একটি আইটি পার্ক স্থাপনের ঘোষণা দেন। দীর্ঘদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাইয়ের পর ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল নাজির সংকরপুর এলাকায় এ প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়। খুলনা বিভাগের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবস্থা আধুনিকায়ন এবং আইটি ইন্ডাস্ট্রি শক্তিশালীকরণের জন্যই প্রাথমিক ভাবে যশোরে করা হয়েছে এই আইটি পার্ক। এর মাধ্যমে বিভাগীয় সদর খুলনাসহ খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা সুবিধা পাচ্ছে।

২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে দুটি কোম্পানিকে প্লট বরাদ্দের চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। চুক্তি মোতাবেক ৪০ বছরের জন্য এই পার্কে রেডডট ডিজিটাল লিমিটেড ও ফেলিসিটি বিগ ডাটা লিমিটেড বিনিয়োগের সুযোগ পাবে। তারা হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, আইওটি, বিপিও, গবেষণা ও উন্নয়ন, ডাটা সেন্টার ইত্যাদি নিয়ে কাজ করবে।
যশোরে কর্মসংস্থানের দুয়ার খুলে দিয়েছে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। উদ্বোধনের পর এখন পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হয়েছে। ধীরে ধীরে এখানে ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। তাই এটিকে কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

তথ্য প্রযুক্তির এই বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি এখন আশার বাতিঘর, যেখানে রয়েছে ডেটা সংরক্ষণের জন্য দেশের দ্বিতীয় সার্ভার স্টেশন। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত প্রথম সার্ভার স্টেশনে কোনো সমস্যা হলে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য এখান থেকেই উদ্ধার করা যাবে। এখানে রয়েছে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সরবরাহ ব্যবস্থা। ফাইবার অপটিক কানেক্টিভিটি রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

উদ্বোধনের পাঁচ মাস আগে থেকেই এখানে সফটওয়্যার উদ্ভাবন ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে ছয়টি সফটওয়্যার কোম্পানি কার্যক্রম শুরু করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৩৯টি সফটওয়্যার কোম্পানিকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এ পার্কে ৫৪ জন বিনিয়োগকারী রয়েছেন। তারা মূলত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, স্টার্ট আপ ডেভেলপমেন্ট, ই-কমার্স, ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং, কল সেন্টার খাতে বিনিয়োগ করেছেন।

আইটি পার্কে রোববার একটি উচ্চ পর্যায়ের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আলোচকরা আশা প্রকাশ করে বলেন, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক আগামীতে তথ্য প্রযুক্তিখাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে। তথ্য প্রযুক্তিখাতে নতুন নতুন ব্যবসায়িক ধারণা নিয়ে নবীন উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসছেন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে এখাতে সৃষ্ট সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে।
তথ্য অধিদফতরের উদ্যোগে যশোরের শেখ হাসিনা সফটও্য্যার টেকনোলজি পার্কে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব: বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতের প্রস্তুতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান আলোচক ছিলেন তথ্যঅধিদফতরের ইনোভেশন টিম লিডার ও সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. আবদুল জলিল। তথ্য অধিদফতরের সিনিয়র তথ্য অফিসার এ. এইচ. এম. মাসুম বিল্লাহের সঞ্চালনায় কর্মশালায় শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) এম ইউ সিকদার, আইটি ইঞ্জিনিয়ার শুকলাল কুমার, কেনার হাটের কো-ফাউন্ডার মো. নাহিদুল ইসলাম, টেকনোসফট গ্লোবাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজালাল, শিখো টেকনোলজিস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. বেনজির আলম বক্তব্য রাখেন।

কর্মশালায় উদ্যোক্তারা জানান, সফটও্য্যার টেকনোলজি পার্কে উদ্যোক্তারা কম খরচে নিজেদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন। এখানে নিরচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে। ফলে বড় বড় আইটি প্রতিষ্ঠান এই পার্কে বিশাল পরিসরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আইটিখাতের স্টার্ট-আপদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে অফিস পরিচালনার সহায়তা দেওয়ায় তারা সরকারের প্রশংসা করেন। তারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য সহজ শর্তে অর্থায়ন সুবিধা এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে অভিজ্ঞতার শর্ত শিথিল করার পরামর্শ দেন।
আমাদের সময়.কম