Home রাজনীতি অসাম্প্রদায়িক সেতুবন্ধের ডাক আওয়ামী লীগের

অসাম্প্রদায়িক সেতুবন্ধের ডাক আওয়ামী লীগের

28

মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে যা বললেন নগর ও কেন্দ্রীয় নেতারা

স্টাফ রিপোটার: বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ বরণে আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা-আনন্দ উৎসব নবজাগরণ ও অসাম্প্রদায়িক সেতুবন্ধের ডাক দিয়েছেন টানা তিন মেয়াদে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও নগর নেতারা। তাঁরা বলেছেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনাবোধ প্রকাশ করে মঙ্গল শোভাযাত্রা। প্রকাশ পায় বাঙালির সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ। একইসঙ্গে তারা বলেন, বাঙ্গালীর প্রতিটি সার্বজনিন উৎসবে একটি দল নানাভাবে বাধা-উষ্কানী সৃষ্টি করে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে নিজ নিজ এলাকায় সর্তক পাহারা বসিয়ে সকল ষড়যন্ত্রকারিদের প্রতিরোধ করতে হবে।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রাপূর্ব আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পৃথক পৃথক বক্তব্যে আওয়ামী লীগে নেতারা কথা বলেন সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদকের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবারের পহেলা বৈশাখ আমাদের জন্য শুভ বার্তা বয়ে এনেছে। বহুদিন পর বাঙালির চিরচেনা পরিবেশ পহেলা বৈশাখ উদযাপন হচ্ছে। সারা বাংলায় নবজাগরণের ঢেউ জেগেছে। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখের সাথে সংঘাত যাদের তারা সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে। এই অশুভ অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। আজকের দিনে শপথ নিতে হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িকতার অশুভ বিষবৃক্ষকে উৎপাটন করবো। এখানে কোনও আপোষ নেই। তিনি বলেন, আমাদের চেতনার বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি তাদের প্রধানতম শত্রু হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। তিনি বলেন, অনেকে পহেলা বৈশাখ পালন করে না তাদের আদর্শ সাম্প্রদায়িকতার। তাদের চেতনা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা। এই সকল অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করবো, পরাজিত করব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এগিয়ে যাবো।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যারা দেশের ঐক্য সংহতি নষ্ট করতে চাইছে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। এ মঙ্গল শোভাযাত্রা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনার পরিচায়ক। এতে প্রকাশ পায় বাঙালির সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পয়লা বৈশাখ বাঙালিদের সার্বজনীন উৎসব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনাভাইরাস মহামারির পর ইউক্রেনযুদ্ধে পীড়িত বিশ্বেও বাংলাদেশ তার প্রবৃদ্ধির সক্ষমতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধ থাকাই আমাদের নতুন বাঙলা বছরের অঙ্গীকার।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন নাছিম বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষের কল্যাণে সরকার সমানভাবে কাজ করছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার দেশে হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। একইসুরে কথা বলেছেন কিশোরগঞ্জ-২২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমরা সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যুদ্ধ করেছি। আমরা স্বাধীনতা চেয়েছি, মুক্তি চেয়েছি। সেজন্য যুদ্ধ করেছি, রক্ত দিয়েছি। যার ফলেই আমরা মহান স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এখানে আমরা সবাই একত্রে মিলে মিশে জাঁকজমকভাবে পূজা উদযাপন করি। তিনি বলেন, ধর্মীয় সংস্কৃতির এ সৌহার্দ্য সম্প্রীতির সেতুবন্ধ সূদৃঢ় রাখতে এবং দেশে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা রুখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দদফতর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ বলেন, পহেলা বৈশাখ আসলেই ষড়যন্ত্রকারিরা বাঙ্গালী জাতির ইতিহাস-ঐতিহ্য পালনে নানাভাবে হুমকী-ধমকী দেয়। কিন্তু তারা জানে না, আওয়ামী লীগ এইসব হুমকী-ধধমকীকে পরোয়া করে না। তিনি বলেন, বাংলার চিরায়ত উৎসব বাংলা বর্ষ সকল ভয়কে উপেক্ষা করে আজকে উৎসবের ঢল নেমেছে রাজধানীজুড়ে। এটাই আমাদেও প্রকৃত রুপ। তিনি বলেন, আজকে পয়লা বৈশাখ-নতুন বাংলা বর্ষেদিনে আমাদের সকল সঙ্কীর্ণতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়ে উঠুক এবং নতুন উদ্যোমে বাঁচার অনুপ্রেরণা উজ্জীবিত হোক।