Home বাণিজ্য ও অর্থনীতি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পোশাক খাতে নীট রপ্তানি কমে যাওয়া ‘অ্যালার্মিং’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পোশাক খাতে নীট রপ্তানি কমে যাওয়া ‘অ্যালার্মিং’

29

ডেস্ক রিপোর্ট: মোট রপ্তানি মূল্য থেকে কাঁচামাল আমদানির পরিমাণ বাদ দিয়ে হিসাব করা হয় নীট বা প্রকৃত রপ্তানি। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির পরিমাণ বাড়লেও তার নিট আকার দিনে দিনে সংকুচিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত দুই অর্থবছরের ব্যবধানে তৈরি পোশাকের প্রকৃত রপ্তানি কমেছে প্রায় ২১ শতাংশ।

নীট রপ্তানি কমে যাওয়া তৈরি পোশাক খাতের জন্য অ্যালার্মিং কিনা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনাকালে আমাদের রপ্তানি কমে গেছে, অপরদিকে আবার চীন ও ভিয়েতনামের রপ্তানি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে সম্প্রতি চীন ও ভিয়েতনামের তুলনায় আমেরিকাতে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে গেছে। প্রোডাক্টিভিটি, কোয়ালিটি, পণ্য স্থানান্তেরের গতি বাড়াতে হবে। তৈরি পোশাক খাত যথেষ্ট প্রণোদনা পাচ্ছে। প্রয়োজন হলে তাদের আরও প্রণোদনা দিতে হবে।

তিনি বলেন, ব্যবস্থাপনায় তাদের অ্যাফিসিয়েন্সি বাড়াতে হবে। এখন যারা অর্ডার দিচ্ছে তারা চীন ও ভিয়েতনাম থেকে সহজে ও মিনিমাম মূল্যে পণ্য পাচ্ছে। আমাদের রপ্তানিকারকদের সঙ্গে নেগোশিয়েট করতে হবে এবং প্রয়োজনে দক্ষতা বাড়িয়ে চুক্তি অনুযায়ী কাজ করতে হবে। প্রতিযোগিতার যুগে পণ্যের দাম বাড়ানোর কথা বলতে পারবে না। বাড়ানোর কথা বললে তারা অন্য দেশ থেকে পণ্য কিনবে। মিনিমাম লাভ করে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মতো লক্ষ্য স্থির করতে হবে। তা না হলে এই বাজারে টিকে থাকা কষ্ট হবে। ইতোমধ্যে আমেরিকার অর্থনীতি সচল হচ্ছে, তাদের চাহিদা বাড়বে।

আমরা বেশি দাম চাইলে আমাদের কাছ থেকে বেশি পণ্য ক্রয় করতে চাইবে না। এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ বলেন, নীট রপ্তানি কমে যাওয়া কিছুটা অ্যালার্মিং কিন্তু স্বাভাবিক। যেসব দেশে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি করা হয় সেখানে বাস্তবিকভাবে চাহিদা কমে গেছে। এটা করোনার অনিবার্য প্রভাব। করোনার কারণে ২১ শতাংশ নিট রপ্তানি কমে গেছে, এখানে ব্যবসায়িক দিক দিয়ে কিছুটা ক্ষতি হলেও এটা স্বাভাবিক। এটা বিরাট উদ্বেগের কোনো বিষয় নয়। ব্যবসা-বাণিজ্যে এটা হতেই পারে, বিভিন্ন কারণে। ২১ শতাংশ থেকে বেড়ে এটা যদি ৫০-৬০ শতাংশ হতো তাহলে বিশাল উদ্বেগের বিষয় হতো।

এ অবস্থায় আমাদের বাজার ধরে রাখার জন্য আহামরি কিছু করার নেই। যতোক্ষণ ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারগুলো পূর্বের সাধারণ অবস্থায় ফিরে না আসবে ততোক্ষণ আমাদের এসব তৈরিকৃত আইটেমের চাহিদা বাড়বে না। করোনার সঙ্গে আমাদেরকে সহ-অবস্থানে থাকতে হবে। তাকে প্রতিপক্ষ ভেবে লাভ নেই। করোনা প্রকোপ না কাটা পর্যন্ত আমাদের তেমন কোনো করণীয় নেই। বাজারে চাহিদা-সরবরাহের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত খুব বেশি কিছু করার নেই আমাদের। শিল্পকারখানাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়ে যেতে হবে। চাহিদা সৃর্ষ্টি না হলে যতোই বিনিয়োগ করি তার রিটার্ন আসবে না। সুতরাং বাজারে চাহিদা সৃষ্টি হতে হবে।-আমাদের সময়.কম