Home জাতীয় অবশেষে পুলিশে যোগ দিলেন ‘ভূমিহীন’ কলেজছাত্রী আসপিয়া

অবশেষে পুলিশে যোগ দিলেন ‘ভূমিহীন’ কলেজছাত্রী আসপিয়া

28

আহমেদ জালাল : অবশেষে বরিশালের হিজলার আলোচিত ‘ভূমিহীন’ কলেজছাত্রী আসপিয়া ইসলাম ট্রেইনি রিক্রুট পুলিশ কনস্টেবল পদে (টিআরসি) যোগদান করেছেন। দিয়েছেন করোনা পরীক্ষা। রিপোর্ট পাওয়ার পর তাদের পাঠানো হবে ৬ মাসের প্রশিক্ষণে। পুলিশে যোগদান করতে পেরে খুশি আসপিয়া ও তাঁর পরিবার।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মারুফ হোসেন তাঁকেসহ নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের ফুল দিয়ে বরণ করেন। এ সময় আসপিয়া পুলিশ সুপারকে তাঁর চাকরির ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানান।
একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও গণমাধ্যমের প্রতিও তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, মো. ইকবাল হোছাইনসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
যোগদানের পর আসপিয়া বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় আমার স্বপ্ন পূরণ হলো। আমি সবার শুভ কামনা ও আন্তরিকতাকে সম্মান দিয়ে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে সবার সহযোগিতা ও দোয়া চাই।’
আসপিয়াকে সাহসী উল্লেখ করে তাঁর মতো একজন সহকর্মী পেয়ে খুশি অন্যান্য নিয়োগপ্রাপ্তরা। ভূমিহীনদের চাকরি পাওয়ার অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছেন সচেতনমহল।
আসপিয়ার মতো সাহসী এবং মেধাবীদের পুলিশে স্বাগত জানিয়েছেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান।
বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, ‘আসপিয়ার এই লড়াই ও দৃঢ়তা আমাদের মুগ্ধ করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আসপিয়া তাঁর কাঙ্ক্ষিত চাকরি ও মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন। এটা এক অনন্য উদ্যোগ। আসপিয়ার হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিতে পেরে আমরা ভারমুক্ত, আনন্দিত।’
গত শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে হিজলা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র আসপিয়া ইসলামের কাছে পৌঁছে দেন। সূত্র জানায়, আসপিয়াকে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে আনুষ্ঠানিকতা শেষে নারী টিআরসিদের ছয় মাসের প্রশিক্ষণের জন্য রংপুরে পাঠানো হবে। এরআগেই তাঁর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয় হিজলায়। পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার মধ্যেই বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে হাজির হন ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে নতুন নিয়োগ পাওয়া আসপিয়া সহ ৭ জন নারী এবং ৪১ জন পুলিশ সদস্য। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সকালে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে তাদের সবার করোনা পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট পেলে তাদের পাঠানো হবে ৬ মাসের প্রশিক্ষণে। নতুন নিয়েগপ্রাপ্তদের দুপুরে সংবর্ধনা দেয় জেলা পুলিশ।
প্রসঙ্গত, বাবার মৃত্যুর পর আসপিয়া ইসলামের পরিবারে আর্থিক টানাপোড়েন শুরু হয়। এরমধ্যে গত বছর এইচএসসি পাস করেন আসপিয়া। সম্প্রতি পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরির আবেদন করার পর সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ভূমিহীন হওয়ায় আসপিয়াকে নিয়োগ দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয় পুলিশ। পরে গণমাধ্যমে ফলাউ করে খবর প্রকাশ হলে তাঁকে ঘর এবং চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।