যুগবার্তা ডেস্কঃ শেখ হাসিনা ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে স্বপদে রেখে এতদিন যে নিরুত্তাপ সম্মেলনের হিসাব চলছিল তাই এখন সর্বোচ্চ চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছে। ওবায়দুল কাদেরের সাধারণ সম্পাদক হওয়া নিয়ে প্রথম গুঞ্জনের ডালাপালা ছড়ায়। আর রাত থেকে গুঞ্জন- শেখ হাসিনা ও সৈয়দ আশরাফ সরে দাঁড়াচ্ছেন!
শেখ হাসিনাকে সভাপতি রেখে এবার অন্যবারের মতই আলোচনা চলছিল আশরাফ বনাম ওবায়দুল কাদের। কিন্তু গত ১৯ সেপ্টেম্বর নিজের প্রার্থীতা নাকচ করে সেই উত্তেজনা ধামাচাপা দেন কাদের। এরপর আরেকটি চমকহীন সম্মেলনের অপেক্ষায় ছিলেন নেতাকর্মীরা।
কিন্তু এরইমধ্যে দুইবার দলীয় পদ ছাড়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় সবাই একবাক্যে তাকে স্বপদে বহাল থাকতে বললেও দলের অভ্যন্তরে কিছুটা হলেও তা দ্বিধার জন্ম দিয়েছিল। অনেকেই প্রধানমন্ত্রীর এ কথার পিছনে ইঙ্গিত খোঁজার চেষ্টা করেছিলেন।
আর সেই ইঙ্গিতই এখন এবারের সম্মেলনের সবচেয়ে বড় গুঞ্জন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেটা হচ্ছে শেখ হাসিনা সরে দাঁড়াচ্ছেন!
এবারের গুঞ্জনের সূচনা মূলত বুধবার দুপুরে। ওবায়দুল কাদেরকে গণভবনে ডাকার পর থেকেই তার ঘনিষ্ঠরা প্রচারণা চালাচ্ছিলেন যে, শেখ হাসিনা তাকে গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন।
কাদের শিবিরের এ উচ্ছাসে তার বিরোধীতাকারীরা অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন। এর মধ্যেই খবর বের হয়, বৃহস্পতিবার রাতে তানজীম আহমেদ সোহেল তাজকে নিয়ে সৈয়দ আশরাফ গণভবনে শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।
এরপর শুক্রবার নতুন চমকের অপেক্ষায় ছিলেন আশরাফপন্থিরা। আর সন্ধ্যায় সোনারগাঁ হোটেলে আশরাফের বক্তব্যের পর তারা অনেকটাই আশ্বস্ত হয়েছেন। আশরাফের নতুন চমক ও পুরনো গুঞ্জন ধোঁপে না টিকার বার্তায় ওবায়দুল কাদের নাকচ হয়ে গেছেন বলে মনে করছেন তারা। ফলে শেখ রেহানাকে সভাপতি ও তানজীম আহমেদ সোহেল তাজকে সাধারণ সম্পাদক ভেবে মধ্যরাতেও চলছে তুমুল আলোচনা।
রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, দিনভর কাদেরের নামে যে সম্ভাবনা ছিল তা অনেকটাই ম্রিয়মান। এখন নেতাকর্মীদের অপেক্ষা, আসলেই কি চমক রয়েছে সম্মেলনে। অন্যান্যবার যেখানে পূর্বেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম জানা যেত, সেখানে এখন আলোচনা কাদের সাধারণ সম্পাদক নাকি রেহানা সভাপতি ও সোহেল তাজ সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন?
তবে মিতভাষী আশরাফের কথাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন অনেকে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য বলেন, সৈয়দ আশরাফ অহেতুক কথা বলেন না। নিশ্চয়ই নেত্রীর সাথে তিনি কথা বলেই বক্তব্য দিয়েছেন। আর নেত্রী সরকার প্রধানের দায়িত্বে থেকে দলীয় দায়িত্ব ছেড়েও দিতে পারেন।
কিন্তু ভিন্নমতও রয়েছে। দলের সম্পাদকমণ্ডলির এক সদস্য বলেন, এখনো কাদেরের দিকেই পাল্লা ভারী। এমনও হতে পারে, সম্মেলনে উত্তেজনা জিইয়ে রাখতেই আশরাফ এ ধরনের কথা বলেছেন।
তবে আসলেই সম্মেলনে কি চমক রয়েছে তা জানার জন্য ২২ ও ২৩ অক্টোবরের দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। পরিবর্তন