যুগবার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতারা বলেছেন, ‘সরকারের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত কোনো আলোচনা হয়নি। একটা বৈঠক হলে সমস্যার সমাধান হবে। যদি এমন হয় যে, শিক্ষকরা আন্দোলনে থাকুক তাহলে সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে না। আমরা চাই ক্লাস রুমে থাকতে, বাইরে থাকতে চাই না। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
শিক্ষকনেতারা বলেন, বারংবার চেষ্টা করেও একটি মহলের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাওয়া যা”েছ না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে তথ্য আছে সেটা এক পেশে। কারণ এখন পর্যন্ত আমাদের কোন কথা প্রধানমন্ত্রী শোনেননি বা আমাদের সাথে এখন পর্যন্ত দেখা করেননি। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাদের কথা শুনতেন তাহলে একটা পূর্ণাঙ্গ চিত্র পেতেন। তাহলে তার জন্য একটা সম্মানজনক সমাধান বের করা সহজ হত। প্রধানমন্ত্রী শুনেছেন হয়তো তার অফিসিয়ালি বা বিভিন্ন সোর্স থেকে শুনেছেন কিš‘ আমাদের কাছ থেকে কোন কথা শুনেননি।
বুধবার বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এই অভিযোগ করেন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. এ এম এম মাকসুদ কামাল বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আমাদের বৈঠক হয়েছে। বিষয়টির সমাধান আসলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের হাতে। এটি সমাধানে দীর্ঘসূত্রিতা হলে বুঝতে হবে এর পেছনে তাদের হাত আছে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদউদ্দিন আহমেদ বলেন, আলোচনার জন্য আমরা সবসময় প্র¯‘ত আছি। তবে আলোচনার জন্য আমরা আন্দোলন বন্ধ করবো না। আলোচনা আন্দোলন একসাথে চলবে। সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন বন্ধ হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের দাবি আদায়ে আন্দোলনের তৃতীয় দিনেও কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন। ফলে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তারা বলছেন, সরকার দাবি মানলেই ক্লাসে ফিরে যাবেন।
অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে পদমর্যাদা অবনমন ও বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে গত সোমবার (১১ জানুয়ারি) থেকে দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চালিয়ে যা”েছন। গতকাল মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ও কোর্স ফাইনাল পরীক্ষা নেয়া হলেও বাকি ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। আন্দোলনের তৃতীয় দিনেও একই অব¯’া বিরাজ করছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে সংগঠনের দুই নেতা লিখিতভাবে তা জানিয়ে দিয়েছেন। দুই প্রস্তাবের মধ্যে একটিতে শিক্ষক নেতারা বলেছেন, মোট সচিবদের মধ্য থেকে যে হারে সিনিয়র সচিব করা হয়েছে অধ্যাপকদের মধ্য থেকেও একই হারে সিনিয়র অধ্যাপক করতে হবে। উভয়ের মর্যাদা ও সুবিধা সমান করতে হবে।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অন্যান্য শিক্ষকের ক্ষেত্রে সপ্তম জাতীয় বেতন স্কেলের মতো সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহাল রাখা সম্ভব না হলে অন্য কোনো উপায়ে একই মর্যাদা ও সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে শিক্ষকদের মর্যাদা আগের মতোই অক্ষুণ্ন থাকে।
এদিকে শিক্ষক ধর্মঘটে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপ¯ি’তি ছিল কম। এদিকে জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও কর্মবিরতি পালন করছেন।
ক্লাসরুমে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে আজ ধর্মঘট পালন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ধর্মঘটের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বিভাগে ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। পরীক্ষার্থীদের উপ¯ি’তি ছিল খুব কম।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. খবির উদ্দিন জানান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চলবে।মাছুম বিল্লাহ ও আরিফুর রহমান ,আমাদের সময়.কম