যুগবার্তা ডেস্কঃ মোবাইলের সিমকার্ড পুনঃনিবন্ধন কিংবা যাচাই করতে গ্রাহককে অপারেটরদের কাস্টমার কেয়ার কিংবা এজেন্টদের কাছে যেতে হবে না। ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের এসএমএসের মাধ্যমে তারা এ সুযোগ পাচ্ছেন। গতকাল ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে মোবাইলের সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া যথাযথভাবে হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করতে গ্রাহকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০১২ সালের পর কেনা সিমের গ্রাহকরা নিজস্ব মোবাইল থেকে ক্ষুদেবার্তা (এসএমএস) পাঠিয়ে অথবা মোবাইল অপারেটরের ওয়েবসাইটে গিয়ে সঠিকভাবে সিম নিবন্ধন হয়েছে কি না যাচাই করতে পারবেন।
সিম নিবন্ধন সঠিক কি না তা যাচাইয়ের পদ্ধতি হল-গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেল ও টেলিটকের গ্রাহকরা মোবাইলের এসএমএস অপশনে গিয়ে ইংরেজিতে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী জন্ম তারিখ, পূর্ণ নাম লিখে ১৬০০ নম্বরে পাঠিয়ে দেবেন। সিটিসেলের গ্রাহকরা মোবাইলের এসএমএস অপশনে গিয়ে ইংরেজিতে ‘ইউ’ লিখে স্পেস দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী জন্ম তারিখ, পূর্ণ নাম লিখে ১৬০০ নম্বরে পাঠিয়ে দেবেন। ফিরতি এসএমএসে ‘ণড়ঁৎ ৎবয়ঁবংঃ যধং নববহ ধপপবঢ়ঃবফ, ঞযধহশ ুড়ঁ ভড়ৎ ঃযব রহভড়ৎসধঃরড়হ’ লেখা আসবে। এসএমএস পাঠানোর জন্য মোবাইল অপারেটররা কোনো টাকা কাটবে না।
২০১২ সালের আগে কেনা মোবাইল সিমের বিপরীতে বিভিন্ন তথ্য (জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, বাবা-মায়ের নাম ইত্যাদি) চেয়ে ১৫ অক্টোবর থেকে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের মোবাইলে এসএমএস পাঠানো শুরু করেছে অপারেটররা, যা ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সঠিকভাবে সিমের নিবন্ধন করা না হলে ওই সিম বন্ধ করে দেওয়া হবে। পরবর্তী সময় কোনো গ্রাহক যদি প্রয়োজনীয় এবং উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে পারেন, তাহলে বন্ধ সিম চালু করার বিষয় বিবেচনা করা হবে।
সব মোবাইল অপারেটর ১ নভেম্বর থেকে নিজস্ব সার্ভিস সেন্টার বা কাস্টমার কেয়ারে বায়োমেট্রিকস পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন চালু করবে। ১৬ ডিসেম্বর থেকে সারাদেশে বায়োমেট্রিকস পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে। বিজ্ঞপ্তিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, ১৮ বছরের কম বয়সী কারও কাছে সিম বিক্রি করা যাবে না; সিম থাকলেও নিবন্ধন করা যাবে না। ১৮ বছরের নিচে বয়সীদের জন্য তাদের অভিভাবকদের (বাবা/মা) নামে নিবন্ধন করতে হবে।
ভুয়া পরিচয়ে সিম নিবন্ধনের কারণে সাম্প্রতিক সময় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হলেও অপরাধীরা অনেক ক্ষেত্রেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। দিন দিন এ প্রবণতা বাড়তে থাকায় বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ দেখা দেয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব শুরুর পরপরই এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেন তারানা হালিম। গত ২১ অক্টোবর সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিকস বা আঙুলের ছাপ পদ্ধতির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
২০১৬ সালের মে মাস থেকে অনিবন্ধিত সিমের জন্য অপারেটরদের সিমপ্রতি ৫০ ডলার জরিমানার বিধান কার্যকর করা হবে বলে এর আগে জানান প্রতিমন্ত্রী। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির সবশেষ সেপ্টেম্বর মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে ৬টি মোবাইল অপারেটরের মোট গ্রাহকসংখ্যা ১৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৬ হাজার।