কে নাস্তিক সেটি বিচার করবে আল্লাহ — অজয় রায়

যুগবার্তা ডেস্কঃ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত লেখক ব্লগার অভিজিত রায়ের বাবা অজয় রায় বলেন, “আমাদের দেশ শান্তির দেশ ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একটি নিষ্ঠুর অস্ত্রধারী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। তারা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়ে মানুষ হত্যা করছে। শুক্রবার বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের দশম জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলার বাইরে টিএসসি এলাকায় লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এর আগে ও পরে আরও বেশ কয়েকজন ব্ল গারকে একইভাবে হত্যা করা হয়। ব্লগার হত্যাকান্ডে ধর্মীয় উগ্রপন্থি গোষ্ঠী ‘আনসারউল্লাহ বাংলা টিম’র প্রধানসহ ওই গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, এখন আধুনিক যুগে ব্যক্তি মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, এতে ইসলামের কোনো উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয়েছে? আমরা জানি ইসলাম শান্তির ধর্ম। এই ধর্মেও দোহাই দিয়ে একের পর এক মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমাদেরকে রাজপথে নামতে হবে। একটি ধর্মনিরপেক্ষ উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের আন্দোলনের বিকল্প নেই। সেই দেশে সকলের সমঅধিকার রক্ষিত হবে। যারা ধর্মে বিশ্বাস করেন না, তাদেরকেও সমঅধিকার দিয়ে বেঁচে থাকার সুযোগ দিতে হবে। কে নাস্তিক সেটি বিচার করবে আল্লাহ। আল্লাহর কাজ কেউ যেন নিজ হাতে তুলে না নেয়। ব্লগার নান্তিক নাকি আস্তিক তুমি বিচার করার কে? কে তোমাকে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার দিচ্ছে। আমরা সকল বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করি। র‌্যাব যদি কাউকে হত্যা করে তাহলে আমরা তার প্রতিবাদ করি। আমরা তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।”
তিনি বলেন, “মুসলমানদের সঙ্গে কুরাইশদের যুদ্ধ হয়েছে, সেখানে উভয়পক্ষের মানুষ হতাহত হয়েছে। সে সময় একজন ব্যক্তি মানুষকে হত্যার নির্দেশ মুহাম্মদ দেননি।
তিনি বলেন, “আমরা একটি ক্রান্তিকালে যাচ্ছি, নানা সংকটে আমাদের দেশ আজ নিপতিত। যদিও সরকার বলছে, আমাদের দেশ একটি মধ্যম উন্নয়নের দেশে পরিণত হয়েছে। সেটি হয়তো কাগজে কলমে। আমরা সাধারণ মানুষ তার দৃষ্টিগ্রাহ্য ফল দেখছি না। এর জন্য সরকার উল্লসিত হতে পারে, নিজেদেরকে ধন্যবাদও দিতে পারে। কিন্তু তাতে কৃষকের মুখে হাসি ফোটে না, শ্রমিকের মুখে হাসি ফোটে না। আমাদের মুখে হাসি ফোটে না।”
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমাদের সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। আমরা নতুন করে প্রতিজ্ঞা করে লড়াইয়ে নামব। ’৬৯ সালে যেমনি রাজপথে নেমেছি, তেমনি নামতে হবে।”
যুব ইউনিয়নের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।