কুমিল্লা সংবাদদাতাঃ একটি দেশ অর্থনৈতিক ভাবে অগ্রসর হওয়ার পূর্বশর্ত হলো উন্নত যোগযোগের ব্যবস্থা। নোয়াখালী ও লক্ষীপুরের লাখ লাখ যাত্রী সড়ক পথে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা হয়ে লাকসাম কুমিল্লা সড়ক পথে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে যাতায়াত করে থাকে। এছাড়া প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন বেগমগঞ্জ-লাকসাম-কুমিল্লা সড়কে চলাচল করায় এর গুরুত্ব বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু বেগমগঞ্জ থেকে কুমিল্লার টমছমব্রীজ পর্য্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার সড়ক বর্ধিত না হওয়ায় প্রতিনিয়ন যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা লেগে থাকে। এতে করে প্রতিদিন অর্ধলক্ষাধিক সড়ক যাত্রীর সময় ও অর্থ দু’টোর অপচয় ঘটছে।তাই নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ – থেকে কুমিল্লা টমছম ব্রিজ পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার সড়ক চার লেন উন্নীত করা অত্যন্ত জরুরী। কুমিল্লা (টমছম ব্রীজ) থেকে নোয়াখালী (বেগমগঞ্জ) আঞ্চলিক মহাসড়ক চারলেন উন্নীতকরণ প্রকল্পের জন্যে ২১৭০ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে এবং ৫৯ কিলোমিটার চার লেন সড়ক নির্মান কাজের জন্যে আগামী ২০২০ সালের জুন মাস নির্ধারণ করা হয়েছে।এ সড়কটি চারলেনে উন্নীত হলে এতদ্বঞ্চলের জনসাধারনের প্রত্যাশা পূরণ হবে। ইতিপূর্বে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা থেকে সোনাপুর জিরো পয়েন্ট পর্য্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীতকরার জন্য একনেকে ৯৭০ কোটি টাকা অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সোনাপুর জিরো পয়েন্ট থেকে কুমিল্লা টমছমব্রীজ পর্যন্ত সড়কটি চারলেনে উন্নীত হলে এতদ্বঞ্চলের অধিবাসীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে। আজ শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮) মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এফসিএ এমপি সদর দক্ষিণ উপজেলার বক্সগঞ্জ মোহনপুরে কুমিল্লা (টমছম ব্রীজ) থেকে নোয়াখালী (বেগমগঞ্জ) আঞ্চলিক মহাসড়ক চারলেন উন্নীতকরণ প্রকল্পের আওতায় টমছম ব্রীজ হতে লালমাই পর্যন্ত অংশের নির্মান কাজের সড়ক ও মহাসড়ক অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে অংশগ্রহন করে এসব কথা বলেন।
মাননীয় মন্ত্রী আরো বলেন, এছাড়া সোনাপুর-সোনাগাজী-জোরালগঞ্জ সড়কটির জন্যও নোয়াখালীর থেকে কুমিল্লা সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। কেননা সোনাপুর -জোরালগঞ্জ সড়কের মাধ্যমে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সড়ক পথের যাত্রীরা সোনাপুর জোরালগঞ্জ সড়ক দিয়ে চট্রগ্রাম যাতায়াত করতে পারবে। বিশেষ করে সোনাপুর দিয়ে সড়ক পথে বন্দর নগরী চট্রগ্রাম যেতে মাত্র দুই ঘন্টা লাগবে।অপর দিকে সোনাপুর – কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কটি চার লেনে উন্নীত হলে মাত্র তিন ঘন্টায় রাজধানীতে যাতায়াত সম্ভব হবে। আগামীতে সোনাপুর জিরো পয়েন্ট থেকে হাতিয়া চেয়ারম্যান ঘাট পর্যন্ত চার লেন সড়ক ও রেল সড়ক নির্মানের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। নোয়াখালী জেলা সদরের দক্ষিণ পূর্ব প্রান্তে রয়েছে সেনা বাহিনীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্বর্ণদ্বীপ। সবকিছু মিলিয়ে জাতীয় জীবনে এই আঞ্চলিক মহাসড়কের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।
কুমিল্লার অত্যন্ত কর্মব্যস্ত এলাকা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকা সম্পর্কে মাননীয় মন্ত্রী বলেন, কুমিল্লার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবী এবং দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষার সুরাহা হতে যাচ্ছে। প্রতিদিন পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড দিয়ে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা এবং বরুড়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লাকসাম এলাকার মানুষের কুমিল্লা শহরে ঢুকতে এবং শহরের মানুষের ঐসব এলকাতে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র এটি। কিন্তু এখানে একটি ইউলুপ না থাকার কারনে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা এবং বরুড়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লাকসাম এলাকার মানুষের কুমিল্লা শহরে ঢুকতে এবং শহরের মানুষের ঐসব এলকাতে যাওয়ার জন্য পোহাতে হয় চরম দূর্ভোগ, এখানে সৃষ্ট হয় অপরিসীম যানজট। এসব এলকার মানুষদেরকে অত্যন্ত কষ্ট স্বীকার করে কয়েক মাইল ঘুরে, পাহাড়-চূড়া ভেঙ্গে, চড়াই উৎরাই পার হয়ে তারপর আসতে হয়। আর তাই কুমিল্লার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবী এবং দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষার সুরাহা করতে এখানে নির্মান করা হবে একটি ইউলুপ।
সড়ক ও মহাসড়ক অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত এ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সদর দক্ষিণ উপজেলা গোলাম সারোয়ার, সড়ক ও মহাসড়ক অধিদপ্তর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং কুমিল্লা সদর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, কৃষকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ দলীয় সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।