Home স্বাস্থ্য সাতক্ষীরার ঘরে ঘরে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব! আতঙ্ক নয়! সাবধানতা ও...

সাতক্ষীরার ঘরে ঘরে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব! আতঙ্ক নয়! সাবধানতা ও সতর্কতা জরুরী

60

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে সাতক্ষীরায়। ঘরে ঘরে এই সংক্রমন এমন পর্যায়ে পৌছেছে প্রায় বাড়ীতে চোখ ওঠা রোগী অবস্থান নিশ্চিত হচ্ছে। চোখ ওঠার পাশাপাশি ভাইরাস জ্বরের ও প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। চোখ ওঠা এক ধরনের ছোয়াচে ভাইরাস বিধায় অতি সহজেই দ্রুততার সাথে এক ব্যক্তি হতে অন্য ব্যক্তি আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় চোখ ওঠা শুধু মাত্র চোখ লাল হওয়া নয়, চোখ ওঠা বা লাল হওয়া একটা উপসর্গ মাত্র, জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ায় দৃশ্যতঃ চোখ ওঠে এবং লাল হয়। সর্বাপেক্ষা কার্যকর চিকিৎসা হচ্ছে সচেতনতা। বিশেষভাবে নিজেকে অন্য কারোর হতে বিচ্ছিন্ন রাখা। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় গত দুই সপ্তাহ যাবৎ ব্যাপক ভিত্তিক চোখ ওঠা বা চোখ লাল হওয়া ভাইরাস জনিত রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। শহর হতে গ্রাম সর্বত্র চোখ ওঠার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কেবল মাত্র বয়স্করা নয়, শিশুরাও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারনত চোখ ওঠা রোগের লক্ষন হিসেবে যে বিষয় গুলো দেখা যায় তার মধ্যে উলে­খযোগ্য চোখ লাল হয়ে যায়। সাধারনত প্রথমে এক চোখ লাল হয়, পরে দুই চোখই লাল হয়। চোখ দিয়ে পানি পড়ে, চোখ চুলকায় এবং এক ধরনের অস্থিরতায় ভর করে চোখ। কোন কোন সময় চোখের পাতা ফুলে যায়, চোখ ব্যথা হয়। আলো অসহনীয় মনে হয়। চোখে পিচুটি হয় স্থানীয় ভাষায় যাবে বলে পিস্তি। চোখ জ্বালাপোড়া হয় ঘুম থেকে উঠলে চোখের পাতা বন্ধ থাকে, অনেক সময় চোখে ঝাপসা দেখা যায়, অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি হলে চোখ দিয়ে রক্ত ও পড়তে পারে। চোখ ওঠা রোগ মারাত্মক কোন রোগ নয় এই রোগ এমন ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয় যা নির্দিষ্ট সময়ে নিরাময় সম্ভব তবে কোন অবস্থাতেই অসতর্কতা অবলম্বন করলে ব্যাপক ভিত্তিক ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অভিমত এই রোগ এমনিতেই ভাল হয়ে যায়, তবে প্রয়োজনে আর্টিফিসিয়াল টিয়ার, অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ডোজ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে। সর্বাপেক্ষা যে বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে তা হলো লোক সমাগম হতে আক্রান্তকে বিরত থাকতে হবে। চোখের পানি বা চোখ মুছতে পৃথক পৃথক কাপড় বা টিসু ব্যবহার করতে হবে। চোখ ওঠা ব্যক্তিকে অবশ্যই পৃথক থাকতে হবে যেন তার দ্বারা অন্য কেউ আক্রান্ত হতে না পারে। নিজে নিজে চিকিৎসা না করে চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহন করতে হবে। বড়দের ক্ষেত্রে সচেতনতা বা অপেক্ষা করলেও শিশুদের ক্ষেত্রে কোন ধরনের সময় ক্ষেপন না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করতে হবে। সাধারন একজন হতে অপরজন এ রোগে আক্রান্ত হয়, বিধায় রোগীর ব্যবহৃত বিছানা, চাদর গামছা, তোয়ালে, রুমাল অন্য কেউ যেন ব্যবহার না করে এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত কোন জিনিসপত্র কেউ ধরলে হাত না ধুয়ে সে তার চোখে হাত দিলে সেও আক্রান্ত হতে পারে। আবহাওয়ার সাথে ও চোখ ওঠা রোগের বিশেষ সম্পর্ক আছে এমনও বলেন অনেকে আর এক্ষেত্রে বাতাসে আদ্রর্তার ঘনত্ব বিশেষ সহায়ক চোখ ওঠার জন্য। ভাইরাস জনিত কারনের পাশাপাশি অ্যালার্জির কারনেও অনেক সময় চোখ ওঠে বা চোখ লাল হয়। গত দুই সপ্তাহ যাবৎ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চোখ ওঠা রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। গতকাল ও সদর হাসপাতালের বহিঃ বিভাগে চোখ ওঠা রোগীর উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটের অন্যতম চক্ষু চিকিৎসকের অতি স্বপ্লতা। উপজেলা ভিত্তিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে চক্ষু চিকিৎসকের অস্তিত্ব নেই। সাতক্ষীরার প্রতিটি এলাকায় চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। চিকিৎসকদের ভাষ্য আতঙ্কের কোন কারন নেই প্রয়োজন সতর্কতা, সাবধানতা এবং নিয়ম মেনে চলা। আমরা অবশ্যই আক্রান্ত ব্যক্তির স্পর্শে যায় না এবং আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেকে অন্যজন হতে দুরে থাকবেন।