Home খেলা সাঈদের বাধায় ‘আপত্তি’ জমা দিতে পারেননি, অভিযোগ আদেলের

সাঈদের বাধায় ‘আপত্তি’ জমা দিতে পারেননি, অভিযোগ আদেলের

50

স্টাফ রিপোর্টার: ১৯ জুন হকি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন সামনে রেখ রোববার ছিল ভোটার তালিকায় আপত্তি গ্রহণের দিন। কিন্তু ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদের বাধার মুখে আপত্তি জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন ফেডারেশনেরই সহসভাপতি সাজেদ আদেল।
সাজেদ আদেল জানান, তাঁর দুই ক্লাবের মনোনীত কাউন্সিলর ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ায় সে বিষয়ে আপত্তি জানাতে তিনি রোববার দুপুরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কার্যালয়ে যান। কিন্তু মমিনুল হক সাঈদ ও তাঁর লোকজন তাঁকে আপত্তি জমা দিতে দেননি। পরে অবশ্য সাজেদ আদেল ই–মেইলে আপত্তি পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
২০১৯ সালে ক্যাসিনো কাণ্ডের পর দীর্ঘদিন হকির কর্মকাণ্ডে ছিলেন না সাঈদ। সম্প্রতি তিনি আবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ফিরেছেন। ফেডারেশনের আসন্ন নির্বাচনে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করবেন বলেও শোনা যাচ্ছে
ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি জমা দিতে না পারার অভিযোগ তুলে ক্ষুব্ধ সাজেদ আদেল প্রথম আলোকে জানান, সদ্য সমাপ্ত প্রথম বিভাগ হকির ক্লাব হকি ইউনাইটেড ও কম্বাইন্ড স্পোর্টিংয়ের সভাপতি তিনি। ক্লাব দুটির পক্ষ থেকে যে কাউন্সিলরদের নাম তাঁরা নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠিয়েছিলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় সেই নাম দুটি আসেনি।
হকি ইউনাইটেডের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠানো হয় সাজেদ আদেলের নাম এবং কম্বাইন্ড স্পোর্টিংয়ের কাউন্সিলর হিসেবে পাঠানো হয় জহিরুল ইসলাম মিতুলের নাম। কিন্তু খসড়া ভোটার তালিকায় হকি ইউনাইটেডের কাউন্সিলর হিসেবে নাম আসে আনোয়ার পারভেজের এবং কম্বাইন্ড স্পোর্টিংয়ের কাউন্সিলর হিসেবে আসে আবদুর রশিদের নাম। এ ব্যাপারে আপত্তি জানাতেই সাজেদ আদেল আজ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে যান।
সাজেদ আদেলের অভিযোগ, ‘সেখানে মমিনুল হক সাঈদ সাহেব দলবল নিয়ে বসা ছিলেন। সাঈদ আমাকে আপত্তি দুটি জমা দিতে দেয়নি। সে বলেছে, ‘আপনি জমা দিতে পারবেন না। আপনি চলে যান।” সাজেদ আদেল আরও বলেন, “আমি যখন লিফট দিয়ে উঠেছি তখনই ওরা ঘেরাও করে ফেলে আমাকে। বলে, ‘এখানেই দাঁড়ান।’ আমি বলি, ‘আমি ভেতরে যাব।’ তারপর আমাকে ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। ভেতরে যাওয়ার পর মমিনুল হক সাঈদ আমাকে বলে, ‘আপনি দিতে পারবেন না।’ এটাও বলেছে যে, ‘আপনি আমার সঙ্গে টাকাপয়সার ব্যাপারে পারতে পারেন, কিন্তু পেশিশক্তিতে আমার সঙ্গে পারবেন না।
ঘটনার আরও বিস্তারিত বর্ণনা দিতে গিয়ে হকি ফেডারেশনের সহসভাপতি বলেন, “আমি বলেছি, ভাই, এটা তো টেন্ডার না। আপনি আমার সম্পত্তি নিয়া নিবেন, দুইটা ক্লাব আমার সম্পত্তি, আর আমি প্রতিবাদ করতে পারব না, এটা কোন ধরনের কথা!’ এরপর জহিরুল ইসলাম মিতুলের (সাবেক জাতীয় হকি খেলোয়াড় ও কম্বাইন্ড স্পোর্টিংয়ের কাউন্সিলর) হাত থেকে কাগজপত্র নিয়ে নেয়। ফলে আমরা আর আপত্তি জমা দিতে পারিনি। পরে আমি ই–মেইলে আপত্তিপত্র পাঠাই।
সাজেদ আদেল বলেন, ‘আমি বলেছি, “আপনি আমাকে আপত্তি জমা দিতে দিলেন না, এটা ঠিক করেননি।”’ তখন সাঈদ বলে, ‘আপনাকে ভালোভাবে বলতেছি, আপনি চলে যান। আপনি জমা দিতে পারবেন না। সে রীতিমতো দুর্ব্যবহার করেছে।’
ক্ষুব্ধ সাজেদ আদেল বলেন, ‘এটা তো হতে পারে না। আমরা কিসের মধ্যে আছি! আমি সাবেক খেলোয়াড় ও পৃষ্ঠপোষক। সারা জীবন হকি নিয়ে আছি। বুঝতে পারছি না হকি কোথায় যাচ্ছে। সবার প্রতি অনুরোধ হকিকে বাঁচাতে হবে। আমি কখনো ভাবিনি এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ব।
কম্বাইন্ড স্পোর্টিংয়ের জহিরুল হক মিতুলের অভিযোগ, ‘আমি আপত্তি নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে যাই। ৮ তলায় ওঠার পর ২০ থেকে ২৫ জন ছেলে আমাকে ঘিরে ধরে। বলে, আপনি এটা জমা দিতে পারবেন না। একজন আমার গায়ে হাত দেয়। আমি তাকে বলি গায়ে হাত দেবেন না। আমি জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড়, যা বলবেন, মুখে বলেন। সাঈদ সাহেব আমাকে ভেতরে নিয়ে বলেন ওপরের নির্দেশ আছে, জমা দিতে পারবেন না। আমরা আর আপত্তি জমা দিতে পারিনি।’
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে মমিনুল হক সাঈদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন। সাজেদ আদেলের আপত্তি জমা দিতে বাধা দিয়েছেন কি না, তা জানতে চাইলে সাঈদ বলেন, ‘এটা কী আমার কাজ নাকি! এটা আমার বিষয় নয়। ফেডারেশনের কোনো বিষয় হলে আমি জানতাম। আমি এখনো এনএসসিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অফিসে বসা। আপত্তি দেওয়ার ডেস্ক আছে। বাকি সবাই জমা দিচ্ছে না! উনি (সাজেদ আদেল) মিথ্যা বানোয়াট কথা বলেছেন। আমার সঙ্গে তো ওনার দেখাই হয়নি।’