Home জাতীয় বৈষম্য নিরসনে দরিদ্র মানুষের উপর পরোক্ষ কর কমানোর আহ্বান

বৈষম্য নিরসনে দরিদ্র মানুষের উপর পরোক্ষ কর কমানোর আহ্বান

56

স্টাফ রিপোটার: বৈদেশিক ঋণ, কর ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব বিচার বিষয়ক আলোচনা সভা বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার চরম বৈষম্য বিরাজ করছে। এই বৈষম্য নিরসনে দরিদ্র মানুষের উপর পরোক্ষ কর কমাতে হবে। একই সঙ্গে কাঠামোগত উন্নয়নের পরিবর্তে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা ও পরিবেশ সুরক্ষা খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) মিলনায়তনে সাউথ এশিয়ান অ্যালান্স ফর প্রভার্টি ইরাডিকেশন (স্যাপি), জনউদ্যোগ ও বিএনপিএস আয়োজিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোশিয়েশনের সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ ই মাহবুব। সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট অর্খনীতিবিদ অধ্যাপক এমএম আকাশ। সভা পরিচালনা করেন বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক ও স্যাপি-র ফাউন্ডার মেম্বার রোকেয়া কবীর। সভায় বক্তৃতা করেন স্যাপি সচিবালয় নেপাল খেকে আগত অ্যাডভোকেসি ও মনিটরিং অফিসার রেশমা সায়কা, গবেষক মনেয়ার মোস্তফা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক ইশতিয়াক রেজা, দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জয়েন্ট ডিরেক্টর নুরুননবী শান্ত, বারসিক-এর ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, জেন্ডার বিশেষজ্ঞ নাজনীন পাপ্পু, শ্রমিকনেতা রুহুল আমীন, শ্রমিক নেতা ইদ্রিস আলী, আইইডি’র জ্যোতি চট্টোপ্যাধ্যায়, ওয়াইডাব্লিউসি’র পূরবী তালুকদার, শ্রমিক নেতা খালেকুজ্জামান লিপন, আদিবাসী নেতা অ্যাডভোকেট প্রভাত টুডু ও হবেণ সিংহ, কৃষক নেতা মানবেন্দ্র দেব প্রমুখ।
সভায় অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, চরম বৈষম্য ও আর্থিক অবিচার দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর নাগরিকদের পঙ্গু করে দিচ্ছে। এই অঞ্চলের প্রচুর ঋণ পুঞ্জীভুত হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। যা সম্পূর্ণরুপে আর্থিক সংকটে রুপ নিযেছে। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানে। দ্রুতগতিতে কোটিপতির সংখ্যা এবং জিডিপি বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও নেপাল ব্যতীত দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশে কর সংগ্রহের হার অসম্ভবভাবে কম। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কর যে পরিমাণে সংগ্রহ করা হচ্ছে, তার থেকে অনেক বেশি ব্যয় করা হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা ও পরিবেশ সুরক্ষার মতো খাতকে কম গুরুত্ব দিয়ে অপ্রযোজনীয় খাতে ব্যয় বেশি করা হচ্ছে।
সভায় রোকেয়া কবীর বলেন, বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ ইনফরমাল সেক্টরে কাজের সাথে যুক্ত এবং ১৫ শতাংশ জনগণের গড় মাথাপিছু আয় ৫০০ টাকার কম। দেশে নতুন দরিদ্র জনগণের সংখ্যা এক কোটি ৮৪ লাখ। করোনাকালে শহুরে কর্মজীবিদের আয় ৬০ ভাগ কমেছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাব ৯৫ ভাগ মানুষের গড় আয় হ্রাস পেয়েছে। অনেক মানুষের চাকরি আছে কিন্তু বেতন নেই। অপরদিকে ৭২ ভাগ দিনমজুর তাদের কর্মসংস্থান হারিয়েছে। এপরিস্থিতি মোকাবেলায় কৃষক সম্প্রদায় ও শ্রমজীবি মানুষের জীবনযাত্রা টিকিয়ে রাখতে সার্বিক বিবেচনায় তাদের জীবিকার নিরাপত্তায় বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।
সভায় বক্তারা ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যকার ব্যবধান কমানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, মজুরী বৈষম্য দূর, নারীর প্রতি বৈষম্য কমানো, দেশীয় কর রাজস্ব সচল এবং ধনী ব্যক্তি ও কোম্পানির প্রতি অন্যায্য কর ছাড় বন্ধ, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন পুনরুজ্জীবিত করার জন্য বিনিয়োগ করার দাবি জানান।