Home সাহিত্য ও বিনোদন বাগেরহাটে পিঠা উৎসব’র উদ্বোধন

বাগেরহাটে পিঠা উৎসব’র উদ্বোধন

108

মো. নূর আলমঃ বাগেরহাটে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী শীতকালীন পিঠা উৎসব। শুক্রবার বিকেলে শহরের প্রেসক্লাব ভবনের তিনতলায় ফিতা কেটে উৎসবের উদ্বোধন করেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান। গ্রেটার ইউনিটি ফর রিয়্যালিটি (গুড়) আয়োজনে গ্রাম বাংলার ঐহিত্যবাহী শতাধিক পিঠা নিয়ে এই আয়োজনে অংশ নিয়েছেন জেলার ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের গ্রুপ ডিআইওয়াই। শনিবার রাতে এই পিঠা উৎসব শেষ হবে।
উৎসবে গ্রামবাংলার হারিয়ে যেতে বসা হাতে বানানো নানা ধরনের সুস্বাধু পিঠা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম সেমাই পিঠা, খেজুরের রসে ভেজানো পিঠা, ভাপা কুলি, সেতু কুলি, চিতাই, পাঠিশাপটা, শিয়াই ও হাঁসের মাংস, রসের পায়েস, নারকেলের সন্দেস ইত্যাদি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরাজী বেনজীর আহম্মেদ, বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন, খানজাহান আলী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ খন্দকার আসিফ উদ্দিন রাখি, বাগেরহাট ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আহাদ উদ্দিন হায়দার, গুড় কমিটির সভাপতি শেখ মুশফিকুর টুকু, সাধারণ সম্পাদক মোংলা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. নূর আলম শেখ, সপ্তর্ষি ইন্টারন্যাশনাল’র সত্ত্বাধিকারি সৈয়দ মিজানুর রহমান, এবং উদ্যোক্তা গ্রুপ ডু ইট ইয়োর সেলফ (ডিআইওয়াই) এর চিফ অ্যাডমিন মাসুমা রুনা প্রমুখ।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, পিঠা গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্য। বাঙ্গালী জাতির ঐতিহ্যবহন করে এই গ্রামীণ বাংলার পিঠা। এটি ছিল এক সময় গ্রাম কেন্দ্রিক। যৌথ পরিবারে মেয়ে জামাই নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসলে আত্মীয় স্বজন সবাই মিলে পিঠা তৈরি করত। তখন বাড়িতে এক ধরনের উৎসবের আমেজ তৈরি হত। তখনকার গ্রাম বাংলার মা চাচীদের হাতে বানানো পিঠা যারা এখন দেখেননি তারা এর ফ্লেবারটা উপলব্দি করতে পারবেন না। গ্রাম বাংলার হারিয়ে যেতে বসা পিঠা নিয়ে যারা এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন তাদের দেখে ভাল লাগল। যৌথ পরিবারও এখন হারিয়ে যাচ্ছে। পিঠা বানানো পরিশ্রম ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। একান্নবর্তি পরিবার না থাকায় এটা এখন মানুষ করতে পারেনা। শহরে বসবাস করা মানুষের কর্মব্যস্ততা থাকে যার কারনে পিঠা বানানো তাদের হয়ে ওঠে না। হারিয়ে যেতে বসা গ্রাম বাংলার পিঠা তৈরি করে শহরের পরিবেশে হাজির করার জন্য নারী উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন জানান এই কর্মকর্তা।
পিঠা উৎসবে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। পিঠা উৎসবে এসে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে চীনা নাগরিক মি. লিচাও বলেন, এই পিঠা উৎসবে আসতে পেরে আমি খুব আনন্দিত। চীনে আমাদের দেশে অনেক উৎসব হয়। আমি এখানেও সেই আবহো পাচ্ছি। এখানে কিছু পিঠা আসে যা আমাদের দেশেও পাওয়া যায়।
বাগেরহাট শহরের খারদ্বার এলাকা থেকে আসা নিশাত তাছনিম বলেন, এখানে অনেক অনেক পিঠা এসেছে। দেখে অনেক আনন্দ লাগছে। অনেক পিঠা খেলাম। খুব ভালো লাগছে।
নারী উদ্যোক্তা তামান্না আলম তন্নি বলেন, গ্রামীণ বাংলার পিঠা এখন বিলুপ্তির পথে। এই পিঠা যাতে বিলুপ্তি না হয় তা আবার পুনুরুজ্জীবিত করতে হরেক রকম পিঠা তৈরি করে নিয়ে এই উৎসবে অংশ নিয়েছি। বাগেরহাটের ঐহিত্যবাহি সব পিঠা তৈরি করে এখানে নিয়ে এসেছি।
আরেক উদ্যোক্ততা সেতু বলেন, পিঠা উৎসব তো এখন হয়না। বাগেরহাটে হারিয়ে যেতে বসা পিঠা উৎসব হবে জানতে পেরে এখানে পিঠা নিয়ে হাজির হয়েছি।