Home মতামত বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সভায় সন্ত্রাসী হামলার নেপথ্যে!

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সভায় সন্ত্রাসী হামলার নেপথ্যে!

118

আহমেদ জালাল : বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) এর কেন্দ্রীয় অফিসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিকেলে সংগঠনের সাধারণ সভা চলাকালীন সময়ে এই হামলা চালানো হয়েছে। সাংবাদিক সংগঠনের কার্যালয়ে এহেন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কেউ কেউ গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন। অনেকেই জঘন্যতম কর্মকাণ্ডের গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করে সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বিএমএসএফ’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর বলেন, কেন্দ্রীয় অফিসে সাইদুর রহমান রিমনের নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনি হামলা চালিয়ে জাতির পিতার ছবি নীচে ফেলে দিয়ে অবমাননা, অফিস ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে। এরুপসৃষ্ট পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে সারাদেশের সাংবাদিকদের নিয়ে জাতীয় পরিষদ গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, হামলাকালে নারী সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালানো হয়। যা সিসি ফুটেজে তথ্য সংগ্রহ আছে। এ ঘটনায় সারাদেশে সংগঠনের সদস্যদের মাঝে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে কেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ন্যাক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে? হামলার নেপথ্যে? কেন-ই-বা সাইদুর রহমান রিমন নামের ওই ব্যক্তি বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) এর পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সভা চলাকালীন সময়ে হামলার নেতৃত্ব দিচ্ছেন? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সাংবাদিক সমাজ সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের মাঝে।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে হাতেগোনা কয়েকজন ছিলেন। যাঁরা দিনরাত শ্রম, মেধার মাধ্যমে সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ সহ গতিশীল করতে মূখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। তৎকালীন সময়ে আমি একসময়ে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘শীর্ষ নিউজ’ এর সাব এডিটর হিসেবে হেড অফিসে কর্মরত ছিলাম। সাংবাদিক আহমেদ আবু জাফর এর নেতৃত্বে রাজধানীতে বিএমএসএফ’র প্রথমে আহবায়ক কমিটির মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। সংগঠনটি আত্মপ্রকাশ এবং গতিশীল করতে তাঁর ভুমিকা অপরিসীম। সংগঠনটি জাগ্রত করতে আমি (আহমেদ জালাল) প্রস্তাবনা রেখেছিলাম। প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম আহবায়কদের মধ্যে আমিও ছিলাম। তৎকালীন সময়ে সংগঠনটি দাড় করাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। ঢাকার শহরে ঘাম জড়ানো অক্লান্ত পরিশ্রমে বলা যায়-অনেক ত্যাগের বিনিময়ে বিএমএসএফ’র আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। আর এ কারণে এই সংগঠনের প্রতি আমার নৈতিক সমর্থন রয়েছে। আমি সংগঠনে থাকি আর না থাকি সেটা বড় কথা নয়, বিএমএসএফ’র আত্মপ্রকাশের পর থেকে আমি নিজেই সংগঠনের কার্যক্রম থেকে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছি। তবে বিএমএসএফ’র প্রতি সমর্থন আছে থাকবে।
সংগঠনের আত্মপ্রকাশ পরবর্তী অনেকেই উড়ে এসে জুড়ে বসে সন্ত্রাসের ন্যায় রামরাজত্ব করার পাঁয়তারায় মত্ত রয়েছে। বিএমএসএফ এ অনুপ্রবেশকারী সাইদুর রহমান রিমন নামের এক জনের নাম শুনেছিলাম, তবে কি সেই রিমনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে? অবাক! বিএমএসএফ’র কার্যালয়ে এহেন নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। এই হামলাকারী চক্র যতোই শক্তিশালী হোক না কেন এদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।
বিএমএসএফ’র প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ আবু জাফর এর ভাষ্য, তৎকালীন সময়ে ঢাকার শহরে ঘাম জড়ানো অক্লান্ত পরিশ্রমে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে বিএমএসএফ’র আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। পরবর্তীতে অনেকেই উড়ে এসে জুড়ে বসে সন্ত্রাসের ন্যায় রামরাজত্ব করার পাঁয়তারায় মত্ত রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন চিহ্নিত মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী রয়েছেন। তিনি বলেন, বিএমএসএফ পুরানাপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলাকারিদের আইনের আওয়াতায় আনা হোক।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারী) বিকেলে সংগঠনের পুরানাপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাধারণ সভায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)’র কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে সারাদেশের শাখা সমুহের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ১৩১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ আবু জাফরকে জাতীয় কমিটির প্রধান করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। সভায় সারাদেশের পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়নের কাজ সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহন করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। গঠনতন্ত্রের ১২.৩ এবং ১২.৫ ধারা অনুসারে জাতীয় পরিষদ গঠন করা হয়।
বিএমএসএফ’র প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ আবু জাফর তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সংগঠনের বৃহৎ স্বার্থে কেন্দ্রের সকল উপ-কমিটি বিলুপ্ত করে এ কমিটি ঘোষণা করা হলো। তিনি আশা করেন, মফস্বল সাংবাদিকদের প্রাণের সংগঠন বিএমএমএফ’র মাঝে জাতীয় পরিষদের নেতৃত্বে একটি প্রাণবন্ত কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠনের গতিশীলতা এবং স্বচ্ছতা ফিরে পাবে। আগামি ৩ মাসের মধ্যে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়।
পরিশেষে, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) সকল ধরণের অশুভ শক্তির সমস্ত বাঁধা ভেদ করে এগিয়ে যাবে এরকম প্রত্যাশায়…
লেখক : নির্বাহী সম্পাদক ও বার্তা প্রধান, রণাঙ্গণের মুখপত্র “বিপ্লবী বাংলাদেশ”।