Home জাতীয় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

47

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: লড়াই সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন তার ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। ৭০ বছরের পথ পরিক্রমায় সংগঠনের সকল সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মী, সমর্থক এবং শুভান্যুধায়ীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ২৬ এপ্রিল বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছাত্র সমাবেশে মিলিত হন। একই স্থানে ‘যাদের রক্তে আমাদের গৌরব’ শীর্ষক দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে জাতীয় আয়ের ৮ ভাগ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেওয়া, ইউজিসির কৌশলপত্র বাতিল করা ও বিভাগ উন্নয়ন ফি সহ বিশ্ববিদ্যালয়ে নামে-বেনামে আরোপিত বিভিন্ন ফি বাতিল করা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ করে শিক্ষক, শ্রেণীকক্ষ, আবাসন ও পরিবহন সঙ্কট নিরসন করা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিন্ন টিউশন ফি চালু করা, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে বিশেষ বৃত্তি প্রদান করা এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য ‘স্কুল লাঞ্চ’ চালু করা, সকল গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস নিশ্চিত করা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা এবং শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের উপর সারচার্জ আরোপ করার দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুর রাফি বলেন, কুয়েট শিক্ষার্থী অন্তু রায়ের মৃত্যুর ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারের অর্থায়নে অনীহার ফল। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির সাথে যুক্ততার কারণে শিক্ষার্থীদের নানা ধরণের হেনস্থার শিকার হতে হয়। এই পাঁয়তারার উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীরা যেন অধিকার আদায়ে, অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধে যুথবদ্ধ হতে না পারে।

বক্তব্যে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক আদনান আজীজ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে গত ১৩ বছর ধরে আমরা শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের জোরালো প্রচেষ্টা দেখেছি। দেশের মানুষকে ক্রমাগত পণ্যে পরিণত করা হয়েছে। করোনায় বিপর্যস্ত জনগণের পাশে যতটা দৃঢ়ভাবে সরকারের থাকার কথা, তার চেয়ে বেশি দৃঢ় অবস্থান আমরা দেখেছি ধনিক শ্রেণির পক্ষে। ফলস্বরূপ দরিদ্র মানুষ আরো দরিদ্র হয়েছেন, অথচ বেড়েছে কোটিপতির সংখ্যা। শিক্ষার্থীদের আজ তাদের অধিকার আদায়ের স্লোগান থেকে দূরে সরিয়ে রাখার সমস্ত প্রচেষ্টা আমরা বর্তমান সরকারের দিক থেকে লক্ষ্য করেছি। বজ্রকন্ঠ তুলে শিক্ষার্থীরা মাঠে নামলেই হেলমেট বাহিনী, পেটোয়া পুলিশ বাহিনীর বর্বর আক্রমণ বাংলাদেশের মানুষ ভুলবে না।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈমের সঞ্চালনায় ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সংসদের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সংসদের কার্যকরী সদস্য তাসবিবুল গনি নিলয়সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সমাবেশ থেকে পণ্যদস্যু রাষ্ট্ট্রের অভিপ্রায় ব্যর্থ করে দিয়ে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করার সংকল্প ব্যক্ত করেন সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।

সমাবেশ শেষে ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি কলাভবন, ডাকসু ভবন, মধুর ক্যান্টিন হয়ে পুনরায় স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে এসে শেষ হয়।