ডেস্ক রিপোর্ট: সম্প্রতি ভারতে চালু হওয়া প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ বা পিএলআই স্কিম দেশটির শিল্প সম্প্রসারণের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আত্মনির্ভর ভারত বিনির্মাণে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের নেতৃত্বে একটি উৎপাদনমুখী শিল্প তৈরিতে ১৪ টি সেক্টরের জন্য প্রায় ১.৯৭ লক্ষ কোটি ভারতীয় রুপী ব্যয়ের ঘোষণা করা হয়েছে। টিএফআই পোস্ট

ভারতের উৎপাদন ও রপ্তানি ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৪ টি মূল খাতের মধ্যে একটি হিসেবে টেক্সটাইল শিল্পকে পিএলআই স্কিমের অধীনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে । বাংলাদেশী পোশাক শিল্প থেকে পিছিয়ে থাকা ভারতীয় টেক্সটাইল শিল্প পিএলআই স্কিমের বদৌলতে আর্থিকভাবে সুবিধা পাবে, যা পরবর্তীতে শিল্পটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।

এশিয় দেশগুলোর মধ্যে পোশাক রপ্তানীতে বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এই বাজার ধরতে পোশাক শিল্পে কৌশলগত দিক থেকে এবার ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করতে যাচ্ছে ভারত। ভারত চাইছে, বাংলাদেশকে তার অবস্থান থেকে নামিয়ে আনতে।

বর্তমানে, ভারতের টেক্সটাইল শিল্প দেশের জিডিপির ৫ শতাংশ অবদান রাখে, পাশাপাশি বিশ্বের ৬ষ্ঠ বৃহত্তম টেক্সটাইল রপ্তানিকারক দেশ ভারত। দেশটিতে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত।

নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী এই খাতে পিএলআই স্কিমের অধীনে প্রণোদনার মাধ্যমে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে আনবে সরকার। এছাড়াও ভোগলিক এবং অর্থনৈতিক কারণে বাংলাদেশ ও ভারতে অভ্যন্তরীন শ্রমব্যয় তুলনামূলক কম হওয়া, পর্যাপ্ত কাঁচামাল মজুদসহ খাতটির উন্নয়নে নানান পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যদিয়ে পোশাক শিল্পে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা বাংলাদেশকে বিশ্ববাজার থেকে হটিয়ে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে চাইছে ভারত।

বাংলাদেশি পোশাক শিল্পকে কোণঠাসা করতে ইতিমধ্যেই পিএলআই এর ২য় পর্যায়ের স্কিমের কথা জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল।

২০২০ সালে টেক্সটাইল শিল্পের জন্য পিএলআই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১০,৬৮৩ কোটি রুপী বরাদ্দ করা হয়েছিল। তবে প্রথম পিএলআই এর অধীনে শুধুমাত্র বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছিলো।

দ্বিতীয় পিএলআই অনুযায়ী প্রান্তীক পর্যায়ের ব্যবসায়ী এমনকি হাতে তৈরী পোশাক উৎপাদনকারীরাও স্কিমের প্রণোদণা সুবিধা ভোগ করতে পারবে। এই স্কিমে সর্বনিম্ন প্রণোদনা রাখা হয়েছে মাত্র ২ কোটি রুপী, যেখানে আগে ছিলো ১০০ কোটি রুপী। যার ফলে খাতটির বাজার সম্প্রসারণসহ প্রান্তীক পর্যায়ের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি আকারের ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবে।

এই বিশাল পরিমাণে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বাজারে যুক্ত হলে রপ্তানীমুখী খাতটির উৎপাদর কয়েক গুন বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও স্কিমের সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের কাঁচামাল খরচ অনেকটাই কমে আসবে, বাড়তি সুবিধা হিসেবে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিশাল বাজার কৌশলগত দিক থেকে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে পিছনে ফেলবে বলে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে।-আমাদের সময়.কম