Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস ববিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মারামারি, আহত ৭

ববিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মারামারি, আহত ৭

26

ডেস্ক রিপোর্ট: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’গ্রুপের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের সাতজন আহত হয়েছে। তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বুধবার (৬ জুলাই) রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী হয়ে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রধান দুটি পক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে একটি পক্ষের এমপির অনুসারীদের নেতৃত্বে অমিত হাসান রক্তিম ও ময়িদুর রহমান বাকি এবং মেয়র পন্থীদের নেতৃত্বে আহমেদ সিফাত ও সৈয়দ রুম্মান ইসলামসহ বেশ কয়েকজন রয়েছেন।

উভয় পক্ষই দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নামে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
গত মঙ্গলবার বিকেলে বরিশাল নগরের সিএন্ডবি রোডের কলেজ এভিনিউ তিন মাথা এলাকায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র রাইদুল ইসলাম নিরবকে মারধর করে স্থানীয় যুবকরা। যার প্রতিবাদে সেখানে সড়ক অবরোধও করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে হামলাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাসে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।

যদিও এর আগেই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ দুভাগে বিভক্ত হয়। যা নিয়ে বেশ কয়েকবার তাদের মধ্যে সামনা-সামনি ও মোবাইল ফোনে তর্ক-বিতর্ক হয়। একপর্যায়ে রাত ১টার দিকে হঠাৎ করেই ছাত্রলীগের পৃথক দু’গ্রুপের মধ্যে প্রকাশ্য উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটলে গোটা ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের সাতজন গুরুতর আহত হয়।
যাদের মধ্যে ছাত্রলীগের একাংশের নেতা ময়িদুর রহমান বাকিসহ তার অনুসারী ছাব্বির হোসেন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অপরদিকে অপরাংশের ছাত্রলীগ নেতা আহমেদ সিফাত ও সৈয়দ রুম্মান ইসলামসহ তাদের অনুসারী তমাল, মেহেদি হাসান ও আল সামাদ শান্ত নামে মোট পাঁচজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যদিও এদের মধ্যে মেহেদি হাসান ছাড়া বাকি সবাই শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজহাসপাতালের জরুরি বিভাগের খাতায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি দেখিয়েছেন।

তবে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরে অবস্থান করায় এভাবে ভর্তির কারণ সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন অমিত হাসান রক্তিম। তিনি বলেন, সিফাত গ্রুপের হামলায় আহত হয়ে তাদের সহপাঠী ময়িদুর রহমান বাকি ও ছাব্বির হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

অপরদিকে এ বিষয়ে অপর গ্রুপের নেতা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহমেদ সিফাত নিজেকে বর্তমানে সুস্থ দাবি করে কিছু জানাতে রাজি হননি। যদিও সৈয়দ রুম্মান ইসলাম দাবি করেছেন, তাদের পক্ষের কমপক্ষে ছয়জন আহত হয়েছেন এবং তিনিসহ আহতরা হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে তাদের ওপর হামলার কারণ সম্পর্কে তিনিও বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে হঠাৎ করেই দু’দল ছাত্রের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ছয়জনের মতো আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। রাতেই খবর পেয়ে আমরা বিষয়টি ক্যাম্পাসের পরিবেশ শান্ত রাখার পাশাপাশি বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ করছি। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিবেশ শান্ত রয়েছে। আজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সবাই বিষয়টি নিয়ে বসবেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে রাতের এ ঘটনায় থানা পুলিশের কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে গিয়ে পরিস্থিত শান্ত করার পাশাপাশি হাসপাতালে যান বলে জানিয়েছেন এসআই মেহেদি হাসান।
-নয়া শতাব্দী