Home স্বাস্থ্য নকল ও ভেজালের দাপটে ওষুধ বিপণনকারীরা জিম্মি

নকল ও ভেজালের দাপটে ওষুধ বিপণনকারীরা জিম্মি

37

ডেস্ক রিপোর্ট: নকল ও ভেজালকারীদের দাপটে আসল ওষুধ বিপননকারীরা জিম্মি। দেশের ওষুধ কেনাবেচার বৃহত্তম মার্কেট বাবুবাজার ও মিটফোর্ড এলাকা। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কতিপয় নেতার কারণে এই বৃহত্তম মার্কেটে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বিক্রি করছে ভেজাল ও নকল ওষুধ। সারাদেশ থেকে ব্যবসায়ীরা এখন থেকে নিম্নমানের ওধুধ স্বল্পমূল্যে নিয়ে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে। সমিতির কতিপয় নেতা ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত পাচ্ছে মাসোহারা। এ কারণে রাজধানীসহ দেশব্যাপী ভেজাল, নকল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি হচ্ছে।

ওষুধ প্রস্ত্ততকারী মালিকরা বলেন, সারাদেশে ওষুধ ওই সমিতির সদস্যদের মাধ্যমে বিক্রি হয়। তাদের মধ্যে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিপণন করে। এমন অবস্হান অবসান ঘটাতে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতিকে ঢেলে সাজানোর তাগিদ দিয়েছেন ওষুধ প্রস্ত্তকারী মালিকরা। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তাও একই মতামত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ওষুধ বিপণনের ক্ষেত্রে এই সমিতির সদস্যদের উপরই নির্ভরশীল। তারা যখন নকল ও ভেজালের সঙ্গে জড়িত থাকে, তখন আসল ওষুধ উত্পাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের আর্থিক ক্ষতি ও তাদের সুনামও নষ্ট হয়।

ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নির্বাচন হয় না দীর্ঘদিন। বর্তমানে এটি মেয়াদোত্তীর্ণ। এই সমিতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। ওষুধ বিপণন ও ওষুধ শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি। গত ১১ সেপ্টেম্বর এই সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাসহ নানা কারণে তা হয়নি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ডও গঠন করে দেওয়া হয়েছে। সমিতিতে কতিপয় কিছু ব্যক্তি আছেন, যারা ইতিমধ্যে নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রি ও বিপণনের দায়ে মামলা ও শাস্তি পেয়েছেন। ওই অসাধু ব্যবসায়ীরাই চায় না নির্বাচন হোক। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন হচ্ছে না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে আসছেন। কিন্তু নির্বাচন ঠেকানোর জন্য ওই চক্রটি ঢাকার বাইরে একের পর এক মামলা দিয়ে আসছে। সমিতির এক শ্রেণির কর্মকর্তারা নানা অভিযোগও করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তদন্ত করে ওই সব অভিযোগের সত্যতা পায়নি। তাদের সব মামলা স্হগিত করে দিয়েছে হাইকোর্ট। এমন অবস্হার মধ্যে গত ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৩১ জানুয়ারি মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ওষুধ প্রস্ত্তকারী একটি কোম্পানির মালিক বলেন, এসব অসৎ ব্যবসায়ীদের কাছে আমরাও জিম্মি। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হওয়া উচিত। বাংলাদেশের ওষুধ শতাধিক দেশে রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা স্বনামধন্য অনেক ওষুধ কোম্পানির ওষুধ নকল করে বাজারে ছাড়ছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি কী করছে তা সঠিকভাবে মনিটরিং করার দায়িত্বও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের।

নিষিদ্ধ ওষুধও আনতে সমিতির কতিপয় নেতাকে চাঁদা দিতে হয়। বাজারজাত করতেও তাদের সমপরিমাণ চাঁদা দিতে হয়। অর্থাৎ তাদের দুই দফা চাঁদা দিতে হয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সমিতির এক শ্রেণীর কর্মকর্তাদের চাঁদাবাজির কারণে ওষুধের বাজার সয়লাব করছেন নকল আর ভেজাল ওষুধে। নিম্নমানের কোম্পানির ওষুধের উদাহরণ দিতে গিয়ে এক ব্যবসায়ী জানান, অধিক মুনাফা লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা এসব নকল ও ভেজাল ওষুধ।-ইত্তেফাক