Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস জাবিতে অন্ধকারে অবৈধ শিক্ষার্থীদের মহড়া, আলোতে লাপাত্তা

জাবিতে অন্ধকারে অবৈধ শিক্ষার্থীদের মহড়া, আলোতে লাপাত্তা

93

জাবি প্রতিনিধি: সময়টা গত ৫ জুন রাত ১০টা। কারেন্ট নেই। গোটা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অন্ধকার। এমন সময় মীর মশাররফ হলের সামনে শতাধিক ছেলে জোড় হতে থাকে। স্লোগানে স্লোগানে কেঁপে ওঠে হল প্রাঙ্গন। চাদের আলোয় পরিচিত কয়েকজনের মুখ চেনা গেলেও অধিকাংশই মুখ লুকাচ্ছে ভীড়ের মধ্যে । মুখ লুকালেও তাদের হুংকার আবার একটু বেশি। তাদের দাবি তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ শিক্ষার্থী। থাকেন মীর মশাররফ হোসেন হলে। অবৈধ হলেও আরো থাকতে চান কিছুদিন হলে। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরেও এদের কেউ কেউ থাকেন ৫ বছর ধরে। কেউ কেউ থাকেন ৪ বছর, ৩ বছর, ২ বছর , ১ বছর ধরে।

হলে দীর্ঘ সময় শান্তিতে থাকলেও কিসে হঠাৎ তাদের অশান্ত করে তুললো? কিসে তাদের শান্তির ঘুম নষ্ট করে বিদ্রোহী করে তুললো?

এ নিয়ে খেঁাজ নিলে জানা যায়, অছাত্রদের মীর মশাররফ হোসেন হল থেকে বের করাসহ তিন দফা দাবিতে গত ছয়দিন ধরে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ঐ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম প্রত্যয়। তার অন্য দাবি দুটি হলো গণরুম বিলুপ্ত করা, মিনি গণরুমের শিক্ষার্থীদের আসন নিশ্চিত করা।

প্রত্যয়ের দাবির প্রেক্ষিতে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সাব্বির আলম অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার নোটিশ প্রদান ও তারা কোন রুমে থাকে সেটা চিহ্নিত করতে গেলেই ঘটে বিপত্তি। ক্ষোভে ফেটে পড়ে তারা । বেরিয়ে আসে হলের সামনে রাত ১০টায় । যখন কারেন্ট ছিল না ।

এসময় প্রত্যয়কে উদ্দেশ্য করে তারা অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বার বার তার দিকে তেড়ে আসে। প্রত্যয়ের সাথে সংহতি জানানো প্রগতিশীল ছাত্রদের উদ্দেশ্য করেও তারা গালিগালাজসহ বিভিন্ন স্নোগান দিতে থাকে। ‘একটা একটা বাম ধর, ধরে ধরে জবাই কর,’ ‘হলের সামনে বাম কেন?’ ‘প্রশাসনের হয়রানি মানি না মানবো না’।

অনশনকারী সামিউল ইসলাম প্রত্যয় বলেন, ‘তারা আমার দিকে বারবার তেড়ে আসছিলো, অশ্লীল ভাষায় গালি দিচ্ছিলো। তারা আমাকে ভয় দেখাতে চায় ,কিন্তু আমি তাদের ভয় পাই না। আমি অনশন ভাঙ্গবো না।’

অবৈধ শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ছাত্রত্বকালীন সময়ে তারা এক বছর গনরুমে, একবছর মিনিগনরুমে ও করোনাকালীন সময়ে তারা এক বছর হলে থাকতে পারে নি। এই তিন বছরের ক্ষতিপূরণ হিসেবে তিন লক্ষ টাকা দাবি জানায়। টাকা দিলেই তারা হল ছেড়ে দিবে। নতুবা তাদের আরো কিছুদিন হলে থাকতে দিতে হবে।

ঘন্টাব্যাপী চলে তাদের এই আন্দোলন। তখন সময় রাত ১১টা। আন্দোলন চলাকালীন হঠাৎ কারেন্ট চলে আসে । চারিদিকে বৈদুত্যিক বাল্বের আলোয় আলোকিত হয়। এসময় এক মিনিটের মধ্যে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আলোর আগমনে অন্ধকার যেমন মিশে যায়। ঠিক তেমনি অবৈধ শিক্ষার্থীরা আলোর আগমনে মিশে যায় গত ৫ জুন রাত ১১টায়।