Home ধর্ম কুয়াকাটায় পুণ্যস্নান।।পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত

কুয়াকাটায় পুণ্যস্নান।।পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত

31

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: সাগরের নীল জলে ধুয়ে মুছে যাবে জাগতিক পাপ এ মানুষ কামনা নিয়ে শুক্রবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কুয়াকাটার নীল জলে পুণ্যস্নান করবেন। পুরো সৈকত জুড়ে এখন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সৈকত। পঞ্জিকা মতে ১৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ১২ টা এক মিনিটে পূর্নিমা শুরু হয়। আর পূর্নিমা চলবে শুক্রবার দুপুর ১ টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত। এই তিথিতে পূর্ব আকাশে সূর্য ওঠার সাথে সাথে কুয়াকাটা পূন্যস্নান শেষ করবেন এসব পুণ্যার্থীরা।
এসব দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা প্রশাসনের তরফ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্য বিধি মেনে সীমিত আকারে হবে সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয়রা জানায়, কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথির এই লগ্নে কুয়াকাটা সৈকতে হাজারো পূর্ণ্যার্থী গঙ্গা স্নানের মধ্য দিয়ে রাস পূর্ণিমা উৎসব ও গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত হয়। ভোরের সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সাগর তীরে এ পূণ্যস্নান সম্পন্ন করে পুণ্যার্থীরা। এর পর দল বেধে কলাপাড়া পৌর শহরে অবস্থিত শ্রী শ্রী মদন মোহন সেবাশ্রম আঙ্গিনায় ১৭ জোরা রাধা কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন ও মেলায় মিলিত হবে ওইসব পূন্যার্থীরা। এ উৎসব কেবল সনাতান ধর্মাবলম্বীদের একক অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ থাকে না। এটি রূপ নেয় সার্বজনীন উৎসবে। এদিকে গঙ্গা স্নানে আগত পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা সেবা প্রদানে জন্য র‌্যাব,পুলিশ এর পাশাপাশি রিজার্ভ ফোর্স কুায়কাটায় মোতায়েন করা হয়েছে। সুপেয় পানি, চিকিৎসা টিম ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
শ্রী শ্রী মদন মোহন সেবাশ্রমের পুরোহিত পরিমল চন্দ্র দাস বলেন, দ্বাপর যুগে মানুষের দুঃখ,দুর্দশা, হিংসা, হানাহানী, দেখে এবং দুষ্টের দমন ও সৃষ্টের পালনের জন্য স্বয়ং ভগবান শ্রী কৃষ্ণ নাম ধারন করে পৃথিবীতে অবর্তীন হয়। ওই যুগে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ নিস্কাম প্রেমের নিদর্শন রেখে যান এবং তিনি যে সর্বভূতে বিরাজ করেন তারই স্বাক্ষী রেখেছেন পূর্নিমা রাতে এ রাস লীলার মাধ্যমে। সেই লীলা অনুসরনে কুয়াকাটায় গঙ্গাস্নান শেষে কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদন মোহন সেবাশ্রম আঙ্গিনায় রাস মেলা চলে আসছে।
ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা টোয়কের সাধারন সম্পাদক মো.আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, শুক্রবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কুয়াকাটার পুণ্যস্নান করবে পূন্যার্থীরা। এলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সাধু-সন্যাসী, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীরা জমায়েত হয়ে সৈকতে।
কলাপাড়া রাস উৎসব কমিটির সভাপতি হীরা হওলাদার স্বপন বলেন, ইতোমধ্যে মন্দির প্রাঙ্গনে মেলায় দোকানীরা বিভিন্ন পশরা সাজিয়ে বসেছে। এছাড়া পুরো মন্দির এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদন মোহন সেবাশ্রম কমিটির সাধারন সম্পাদক এ্যাড.নাথুরাম ভৌমিক বলেন, বুধবার রাত ১১ টার দিকে অধিবাসের মধ্যদিয়ে ঐতিহ্যবাহী রাস লীলা উৎসব ও মেলার অনুষ্ঠিানিকতা শুরু হয়েছে। ওইরাতে মন্দির প্রঙ্গনে ১৭ জোড়া রাধাকৃষ্ণের যুগল প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। এরই মধ্য দিয়ে পাঁচদিন ব্যাপী রাস উৎসব অবিরাম ভাবে চলবে। আগামী ২৩ নভেম্বর কুঞ্জভঙ্গ ও মহাপ্রসাদ বিতরন করা হবে।
মহিপুর থানার ওসি মো.অবুল খায়ের বলেন, কয়াকাটায় গঙ্গাস্নানকে ঘিরে পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। সৈকতের জিরো পয়েন্ট, মন্দির ও প্রধান প্রধান সড়কে টহল জোড়দার করা হয়েছে । এছাড়া পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় রাখা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের এ এসপি আবদুল খালেক বলেন, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বিভিন্ন সৈকতে পয়েন্টে টহল জোরদার করা হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব,পুলিশ ও গোয়েন্দ সংস্থা কাজ করছে বলে তিনি সাংবাদিকদেও জানিয়েছেন।