Home সাহিত্য ও বিনোদন কবি সবিতা দাস বুলু ও তাঁর তিনটি কবিতা

কবি সবিতা দাস বুলু ও তাঁর তিনটি কবিতা

28

জাকির হোসেন আজাদী: বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী, সঙ্গীত শিক্ষক, কবি ও সংগঠক সবিতা দাস দীর্ঘদিন যাবত বাংলা কবিতা সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন। দেশে ও প্রবাসে সব জায়গায় সব সময় তাঁর কবিতা গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়ে আসছে। শত ব‍্যস্ততার মাঝেও তাঁর সাহিত্য সংস্কৃতি কবিতা ও গানের প্রতি অনুরাগ বিস্ময়ে অভিভূত না করে পারেনা।

তাঁর জন্ম বরিশাল জেলায়। স্নেহময় শিক্ষক পিতা সুরেন্দ্র নাথ সুতার। মাতা সঙ্গীত শিল্পী সরস্বতী রানী সুতারের ছায়ায় তাঁর বেড়ে ওঠা। শিক্ষা জীবন শেষ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

বর্তমানে তিনি দুই পুত্র সন্তান ও দুই পুত্রবধূ এবং ডাঃ স্বামী নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস করছেন। সবিতা দাসের সাহিত্য অঙ্গনে অগ্রযাত্রার মূলে প্রেরণা যুগিয়েছে তাঁর ঠাকুর মা শ্রীমতী সারদা সুন্দরী সুতার। তাঁর প্রথম কবিতা বই চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি প্রবাসে নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি কৃষ্টি লালন ও চর্চায় নিয়মিত ভাবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

প্রবাসে জনপ্রিয় সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলো সহ বাংলাদেশের বেশ কিছু বাংলা পত্রিকায় তার লেখা নিয়মিত ছাপা হচ্ছে এবং কবিতাগুলো বিপুল পরিমানে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। তা ছাড়া জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, বাংলাদেশ কনসুলেট জেনারেল নিউইয়র্ক, নিউইয়র্ক সাহিত্য একাডেমি সহ বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে নিজের লেখা কবিতা আবৃত্তি করে থাকেন তিনি। আজকে এখানে তাঁর তিনটি কবিতা তুলে ধরা হলো…

১. জয় মা দুর্গা

আকাশে বাতাসে আলোর খেলা
শুনি মায়ের পদধবনি !
তাই বীণায় বাজে ছন্দ সুর
আজ মায়ের আগমনী !!

মাগো তোমার মধুর রূপে
আলোকিত ত্রিভুবন !
মৃন্ময়ী তুমি কৃপায় করো সবে
এই প্রার্থনাই করি সারাক্ষণ !!

দুর্গা মায়ের আগমনে
ঢাকে পড়লো কাঠি !
আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে
পুজো হোক জমজমাটি !!

সাদা মেঘের ঢেউ খেলে ঐ
কাশের বনে বনে !
শিউলী ঝরানো শরত এলো
মায়ের আগমনে !!

শরৎকালের মিষ্টি রোদ
শিউলী, কাশফুলের গন্ধ !
ওরে মা এসেছে, মা এসেছে
তাই সবার মনে আজ ভীষণ আনন্দ !!

মেঘমালারা ঐ আকাশ জুড়ে
ভাসছে কত সুখ আর আনন্দে !
শরত প্রাতে মেঘগুলো চায়
ঝরতে ছন্দে ছন্দে !!

জয় মা দুর্গার আগমনে
সকল দুঃখ হোক অবসান !
যে যেখানে আছে সবাই
মায়ের চরণে হোক সবার স্হান !!

২. শপথের মালা

ভালোবাসা তেমনি আছে
শুধুই ভালোবেসেছিলাম যে তোমাকে !
তাই বছর ঘুরে শরত এলেই
কিছু স্মৃতিচারণ করতে হয়, এই প্রিয় কবিকে !!

সকালটি ছিলো শিউলি ভেজা
একটি আলো ঝলমলে উজ্জ্বল দিন !
আমার হাতে ছিলো শিউলির ডালা
তোমার কাঁধে ছিলো সুরের বীণ !!

যখন বছর ঘুরে শরত এলো
তখন তোমার একুশ ছুঁই ছুঁই !
আগমনীর আনন্দ চোখে
তখন একে একে হলাম দুই !!

শিউলী কুড়ানো অস্টাদশীর
তখন মনে ছিলো শত ভয় !
হাতটি বাড়িয়ে বললে তুমি
ভয় করলে, কিছু কি আর হয় ?

তোমার মনের কথা বলতে আমায়
তুমি ডেকে নিলে, তোমার ঐ ছাদতলায় !
আমার হাতের মালা চেয়ে নিয়ে
আর আপন করে নিলে, তুমি যে আমায় !!

শপথ করে বাঁধলে আমায়
জীবন নামের বরণ মালায় !
ছাদনাতলার সেই সব স্মৃতি
আজও লেখা আছে মনের খাতায় !!

৩. আত্মকেন্দ্রিক

নিজেই কাছেই প্রশ্ন করো
কতটা যে ছিলো তোমার ভুল !
আমি নিরাপরাধী, সত্যি বলছি
তোমার অপরাধই যে ছিলো মূল !!

ছদ্মবেশে করে গেলে
যতখানি মিথ্যে অভিনয় !
জেনে নিও সবই কিন্তু
তোমারই তো ছিলো পরাজয় !!

জিততে গিয়ে যোগ দিলে
সর্ব হেরোর দলে !
করলে যত ছলচাতুরী
তোমারই মন গড়া কৌশলে !!

স্বার্থপরের মত যত
আগলে নিজের দিক !
সব জেনেও দায়িত্ব এড়ালে
তুমি ভীষণ আত্মকেন্দ্রিক !!

বিচার বিবেক সব ভুলে
পেতেছো মানুষ মারার ফাঁদ !!
মনে হয়, মনের কষ্টেই ডুবে গেলাম
তবুও বাঁচার জন্য, ভীষণ যে হয় সাধ !