Home বাণিজ্য ও অর্থনীতি একনেক সভায় ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন

একনেক সভায় ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন

32

ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে সরকারের (জিটুজি) উদ্যোগের অধীনে বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত ও চীনের মতো বিভিন্ন দেশের সঙ্গে জিটুজি প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। কারণ, ওইসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি (লাইন্স অব ক্রেডিট) রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এ বিষয়ে কালবিলম্ব বা অবহেলা যাবে না। কারণ, এসব উদ্যোগ বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়াবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশনকে বৈদেশিক অর্থায়নের প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন।
তিনি বলেন, আজকের একনেক সভায় মোট ১১,৩৮৭.৯১ কোটি টাকা ব্যয়ের মোট ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মান্নান আরো বলেন, ‘মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে, বাংলাদেশ সরকারের অংশ থেকে ৭,৪৪৫.৩৪ কোটি টাকা, ৮০.৭৮ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ও বাকি ৩,৮৬১.৭৯ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসাবে আসবে।’
১৮টি অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নয়টি নতুন ও নয়টি সংশোধিত প্রকল্প। এছাড়া বৈঠকে একটি প্রকল্পের ব্যয় না বাড়িয়ে সময়সীমা বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব ক্ষেত্রে কঠোরতা বজায় রাখতে ও এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রেখে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সকলকে পুনরায় নির্দেশ দিয়েছেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে শেখ হাসিনা বিভিন্ন বাজার ও কাঁচা বাজারের পণ্যের দামের পার্থক্য থাকায় গবেষণা পরিচালনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী পেঁয়াজ ও আদার মতো পচনশীল আইটেমগুলোর জন্য আঞ্চলিক স্টোরেজ ব্যবস্থা স্থাপনের ওপরও জোর দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বর্তমান ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির প্রবণতা এবং দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঘাটতির কারণে লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা।
মূল্যস্ফীতি কমবে বলে তার পূর্বের ভবিষ্যদ্বাণী উল্লেখ করে মান্নান বলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা কমেনি, বরং বেড়েছে- যার জন্য সরকার তার উপলব্ধ উপকরণ ব্যবহার করার মতো যা যা প্রয়োজন তা করবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রথম কৌশল হবে এটিকে আরও বাড়তে না দেয়া এবং তারপরে তা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শুধু মার্কিন ডলারের উচ্চ বিনিময় হারের কারণেই দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে এটা ঠিক নয়। এর পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে।
মার্কিন ডলার ছাড়া অন্যান্য মুদ্রার সাথে বাণিজ্য পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ এখনও ৩০ বিলিয়ন ডলারের উপরে রয়েছে। তবে এটি আবারও ৫০ বিলিয়ন ডলারে যেতে পারে।’
আগামী অর্থবছরে (অর্থবছর-২৪) মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে রাখার বাজেটের লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে মান্নান বলেন, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে কিছু উদ্বেগ থাকতে পারে, তবে সামনে এমন লক্ষ্য রাখা ভুল নয়।
স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পেঁয়াজ আমদানির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এভাবে আমাদের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে ও সঠিক সময়ে বাজারে প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করতে হবে।’
ইইউতে মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে উল্লেখ করে মান্নান বলেন, আগামী দিনে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের কাছাকাছি নামিয়ে আনা কঠিন হলেও মূল্যস্ফীতি কমাতে আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের প্রক্রিয়াটি (সাপ্লাই চেইন) মসৃণ রাখতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে- কোনও ধ্বংসাত্মক উপাদান যেন প্রক্রিয়াটিকে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে। অন্যথায়, সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করা সত্ত্বেও এটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।’