যুগবার্তা ডেস্কঃ চলতি অর্থবছরের ৯ মাসের হিসাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ হয়েছে। অর্থবছর শেষে ১২ মাসের হিসাবে চূড়ান্ত প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। কারণ সামষ্টিক অর্থনীতির গতিধারা ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতায় আছে। প্রবৃদ্ধির হিসাব নিয়ে বিশ্বব্যাংক যে সব প্রশ্ন তুলেছে সেগুলোকে স্বাগত জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, তারা আমাদের প্রবৃদ্ধির হিসাব প্রত্যাখ্যান করেনি, কিছু প্রশ্ন তুলেছে। এগুলোর উত্তরও আছে। প্রবৃদ্ধির হিসাব ছাড়া বিশ্বব্যাংক তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতির ব্যাপক প্রশংসা করেছে। অর্থনীতির উন্নতির জন্য তারা কিছু সুপারিশও করেছে যেগুলোর বেশিরভাগের সঙ্গে আমিও একমত। তবে বিশ্বব্যাংক বলেছে অনুন্নয়ন প্রকল্প বাদ দিতে হবে। তবে তাদের এ পরামর্শের সঙ্গে আমি একমত নই। কেননা আমাদের সব প্রকল্পই বিনিয়োগ প্রকল্প। এগুলো নেওয়ার সময় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই হাতে নেওয়া হয়। যেসব প্রকল্প বিশ্বব্যাংকের কাছে অনুন্নয়ন মনে হয়েছে সেগুলো আমাদের দেশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব মো. জিয়াউল ইসলাম, আইএমইডি সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীসহ পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা।
মাননীয় মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কাছে চলতি অর্থবছরের ৯ মাসের হিসাব আছে। আমি বিশ্বব্যাংককে মে মাস পর্যন্ত সময় দিলাম। এর মধ্যে যে সব তথ্য-উপাত্ত নিয়ে তাদের সংশয় সন্দেহ আছে সেগুলো বিবিএসের মাধ্যমে তারা যাচাই করে নিতে পারবেন। আমাদের মধ্যে কোনো লুকোছাপা নেই। বিশ্বব্যাংক বর্তমানে বিবিএসের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে। তাই খুব সহজেই তারা তথ্য যাচাই করতে পারবেন। আশা করি, তথ্য যাচাইয়ের পর প্রবৃদ্ধি বিষয়ে তাদের যে সংশয় তা দূর হবে এবং তারা তাদের প্রতিবেদনেও তা উল্লেখ করবেন। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিও একই আহ্বান জানান তিনি।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, বিবিএস একটি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠিত ও সুনির্দিষ্ট রীতি নীতি মেনেই তারা প্রবৃদ্ধির হিসাব করে। এবার প্রবৃদ্ধির যে প্রাক্কলন করা হয়েছে, সেটি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করা হয়েছে। কোনো কোনো খাতের আট মাসের তথ্যও ব্যবহার করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) পর্যন্ত সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) বাস্তবায়িত হয়েছে ৪৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ সময়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ব্যয় করেছে ৭১ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে গত অর্থবছরের একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছিল ৪৫ দশামক ১৫ শতাংশ। ওই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ৫৩ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। আশা করছি অর্থবছর শেষে শতভাগ সংশোধিত এডিপিই বাস্তবায়ন হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, আইএমএফ এর হিসেবে আমরা ২০১০ সালে ৫৮ তম অর্থনীতির দেশ ছিলাম। পরবর্তীতে ৪৩ তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হই। বর্তমানে অর্থাৎ ২০১৮ সালে ৪২ তম অর্থনীতির দেশের তালিকায় রয়েছি। এর মধ্যে ভেনিজুয়েলাকে পেছনে ফেলেছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০তম অর্থনীতির দেশে যাওয়া।