তারুণ্যের অগ্নিস্পর্ধিত চেতনায় ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জাগো-ছাত্র ইউনিয়ন

যুগবার্তা ডেস্কঃ ১৯৫২ সালের ২৬ এপ্রিল ভাষা আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া লড়াই সংগ্রাম এবং শিক্ষার অধিকার রক্ষার অগ্রণী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী । প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার দিনব্যাপী কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১২টায় মধুর ক্যান্টিন থেকে একটি র‌্যালী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ, হাকিম চত্বর, কার্জন হলসহ বিভিন্ন ভবনের পাশ্ববর্তী সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সংসদের নেতাকর্মীবৃন্দ বাঙালির হাজার বছরের জাতীয় জীবনে অধিকার আদায় করতে গিয়ে শহীদ হওয়া লাখো শহীদের স্মরণে এবং বিশ্বব্যাপী মানবমুক্তির লড়াই সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি লাকী আক্তার উপস্থিত নেতাকর্মীবৃন্দকে সংগঠনের শপথ পাঠ করান।
বিকেলে স্বোপার্জিত স্বাধীনতার মঞ্চে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং পুর্নমিলনী অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত, সংগঠন সঙ্গীতসহ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপাস্থপনা করে সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন। সভায় সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক জি এম জিলানী শুভ এবং সভাপতিত্ব করেন লাকী আক্তার। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি, সাবেক ডাকসু ভিপি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, দ্বিতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও যুদ্ধপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা জসিমউদ্দিন ম-ল, শিক্ষাবীদ এ এন রাশেদা, সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ও চুয়েট ভিপি শামসুজ্জামান হীরা, সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজিম উদ্দিন খান, কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি লিটন নন্দী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে ছাত্র ইউনিয়নের অভ্যূদয় একটি বিপ্লবী ধারার পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। ’৫২-র ভাষা আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে প্রতিষ্ঠা লাভ করে সংগঠনটি ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ’৬৯-র গণঅভ্যূত্থানে অপরাপর ছাত্র সংগঠনকে সাথে নিয়ে ছাত্র সমাজসহ গোটা দেশের মেহনতি মানুষের সামনে ‘ছাত্রদের ১১ দফা’ নামক একটি বিকল্প গণমানুষের কর্মসূচি তুলে দিতে সক্ষম হয়। যেই কর্মসূচি এদেশের স্বাধিকার আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করে।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন শিক্ষা বাণিজ্যের বিরুদ্ধে, যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে, বিচারহীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের আকাক্সক্ষায় শিক্ষাকে একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠাসহ এদেশকে একটি শোষণ বৈষম্যহীন সমাজতান্ত্রিক সমধিকারের রাষ্ট্রে পরিণত করতে না পারছে ততক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র সমাজকে সাথে নিয়ে বিদ্যালয়ে, মহাবিদ্যালয়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাজপথে তার লড়াই সংগ্রামকে অব্যাহত রাখবে।