জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাবিতে মশাল মিছিল

মো.পাভেল ইসলাম রাজশাহী: সারাদেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রোববার রাত সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলা চত্বর থেকে মিছিলটি শুরু হয়। পরে‌ ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকের সামনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ কর্ম অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে তারা তেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান। এ সময় প্রায় ১৫ জন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে রাবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি নাইমুল ইসলাম নাইম, ”বিনা ভোটের সরকার মধ্য রাতেই ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪টাকা, পেট্রল ৪৪ , অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বৃদ্ধি করেছে। আমরা দাম বৃদ্ধির এই সরকারকে আর চাই না। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ নম্বর অনুচ্ছেদে প্রত্যেকটি নাগরিকের রাজপথে মিছিল ও সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু গতকাল (শনিবার) রাজশাহীর তালাইমারিতে ছাত্র ও গণ অধিকার পরিষদের মশাল মিছিলে পুলিশ হামলা চালায়। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা চাই পুলিশ জনগণের বন্ধু হয়ে কাজ করুক। নইলে আপনাদের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার চেয়েও ভয়াবহ হবে।

নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, আজ জনবিরোধী সরকারের কারণে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত সমাজের নাভিশ্বাস উঠেছে। ‘মিডনাইট’ সরকার তাদের ‘মিডনাইট’ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ছাত্রলীগ ও পুলিশকে হামলা করার যে ইজারা দিয়েছে তারা সেই ইজারাও অব্যাহত রেখেছে। এই সরকার যতদিন পদত্যাগ না করবে ততদিন আমাদেরকে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন বলেন, গত পরশুদিন সরকার একতরফাভাবে মধ্য রাতে তেলের দাম বাড়িয়েছে। বিশ্ব বাজারে যখন তেলের দাম কমছে তখন একটি প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য আইএমএফ’র কাছে ঋণ নিয়ে তারা তেলের দাম বৃদ্ধি করে জনগণকে দুর্ভোগে ফেলেছে। এই সরকার মানুষের আয় না বাড়িয়ে গ্যাস, সয়াবিন তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর পায়তারা করছে। তেলের দাম না কমালে শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবে বলে হুশিয়ারি দেন তিনি।

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, সরকার অপরিকল্পিতভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করে জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে যে দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা অবিলম্বে সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি। দেশের গুটি কয়েক আমলা ও মন্ত্রী দেশকে লুটে পুটে খেয়ে এ টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। ফলে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যেন অতি শীঘ্রই সব পণ্যের দাম কমিয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা হয়। নয়তো আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

গত ৫ আগস্ট রাত ১২টার পর থেকে জ্বালানি তেলের দাম ৪২ থেকে ৫২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রোলের দাম ৮৬ টাকা থেকে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৮৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়। এই দাম বৃদ্ধির ফলে এসব জ্বালানি চালিত পরিবহনের ভাড়াও বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানির এই দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাবিতে এই মশাল মিছিল কর্মসূচি পালিত হয়।