গোমূত্র গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে ভারতে

যুগবার্তা ডেস্কঃ ভারতে গোমূত্রের দাম নাকি গরুর দুধের চেয়ে বেশি। সেই ভারতেই গোমূত্র নিয়ে গবেষণার জন্য তৈরি হতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়।
ইতোমধ্যে গরুর দুধ, গোমূত্র ও গোবর নিয়ে ডিপ্লোমা ও গবেষণা চালুর জন্য হরিয়ানা সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছে গৌসেবা আয়োগ। এছাড়া আয়োগের চেয়ারম্যান ভানি রাম মঙ্গলা এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শিগগিরিই আলোচনা করবেন বলেও জানা গেছে।
ভানি রাম বলেন, আমরা গোবর ও গোচানা নিয়ে গবেষণা করতে চাই। এতে যুব সম্প্রদায়ের চাকরির সুযোগ বাড়বে। তাছাড়া গরু থেকে বেশি বেশি দুধও পাওয়া যাবে বলে দাবি তার।
এদিকে ব্লুমবার্গ খবর দিয়েছে- ভারতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে গোমূত্রের ব্যবসা। গরুর এই তরল উচ্ছিষ্টকে দেশটিতে পবিত্র পানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন রোগের বিপরীতে গোমূত্রকে পথ্য হিসেবে গ্রহণ করায় ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠেছে।
দেশটিতে গরুর দুধের ব্যবসার চেয়েও গোমূত্র ব্যবসা বেশি জনপ্রিয়। কারণ এতে লাভ অনেক বেশি। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিত্যদিনের ব্যবহার্য পণ্য, খাদ্যদ্রব্য এবং অন্যান্য পণ্য উৎপাদনে গোমূত্রের ব্যবহার শুরু করায় দেশটির খামারিরা দিন দিন গোমূত্র ব্যবসার দিকে ঝুঁকছেন।
দুধ উৎপাদনে মনোনিবেশের চেয়ে গোমূত্র সংরক্ষণ ও বিপণনেই এখন তাদের বেশি নজর। এদিকে গরুর খামারগুলোর উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছে নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার।
তারা গরুর শেড নির্মাণ, প্রতিপালন ও রোগ নিরাময়ে সাম্প্রতিক বছরে প্রায় ৫.৮ বিলিয়ন রুপি খরচ করেছে। নাগপুরের গো-বিজ্ঞান অনুসন্ধান কেন্দ্রের দাবি, গোমূত্র খুবই উপকারি পানীয়। এই তরল দিয়ে ঘরে বসেই ৩০টিরও অধিক রোগের ওষুধ তৈরি করা যায়। তাই এই বিশেষ তরলকে পুরো দেশে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কাজ চলছে।
আর এক্ষেত্রে দেশটির বিতর্কিত যোগ গুরু রামদেবের পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ বিশেষ অবদান রাখছে। প্রতিষ্ঠানটি গোমূত্র সহকারে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। দেশটির জনগণের মধ্যে এসব পণ্যের জনপ্রিয়তাও অনেক বেশি।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাল কৃষ্ণা জানান, গোমূত্র থেকে তৈরি ফ্লোর পরিষ্কারক ‘গুয়াইনাল’ আমাদের বেস্ট সেলার পণ্য। মার্কেটে প্রতিদিন এর ২০ টন চাহিদা রয়েছে। অনেক সময় চাহিদা মেটানো আমাদের কষ্ট হয়ে যায়।
তবে দেশটিতে সাম্প্রতিক বছরে জোর করে গোমূত্র পান করানোর মাধ্যমে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ভারতের বিভিন্নস্থানে গোমাংস সংরক্ষণ ও খাওয়ার অভিযোগে বেশ কয়েকজন মুসলিম ব্যক্তিকে পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে।