যুগবার্তা ডেস্কঃ ঐতিহাসিক খাপড়া ওয়ার্ড শহিদ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আয়োজিত আলোচনাসভায় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, খাপড়া ওয়ার্ডের বিপ্লবী লড়াই এ দেশের গণতান্ত্রিক ও বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসের এক উľ¡লতম পর্ব। কারাগারের অভ্যন্তরেও কমিউনিস্ট পার্টির নেতা-কর্মীরা শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন, অকাতরে জীবন উৎসর্গ করেছেন। সেদিনের সেই লড়াই আজও আমাদের পথ দেখায়, উľীবিত করে। খাপড়া ওয়ার্ডের লড়াইয়ের পথ ধরে বিপ্লবী আন্দোলনকে অগ্রসর করতে হবে।
আজ বিকেলে পুরানা পল্টনের কমরেড মণি সিংহ সড়কস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পĽজ ভট্টাচার্য, বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামছুজ্জামান সেলিম, খাপড়া ওয়ার্ডে আহত বন্দী প্রসাদ রায়ের কন্যা বৃত্বা রায় দীপা, খাপড়া ওয়ার্ডে আহত বন্দী আমিনুল ইসলাম বাদশার কন্যা নাজমা ইসলাম স্বপ্না।
আলোচনাসভা পরিচালনা করেন সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন।
আলোচনাসভার শুরুতে খাপড়া ওয়ার্ডের শহিদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং শেষে কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল গাওয়া হয়।
খাপড়া ওয়ার্ডের শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে নেতৃবৃন্দ বলেন, খাপড়া ওয়ার্ডের লড়াই আমাদের গণতান্ত্রিক ও বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ পর্ব। শুধু ইতিহাসকে জানার জন্যই নয়, ভবিষ্যতের দিশা পাবার জন্যও খাপড়া ওয়ার্ডের লড়াইকে অনুধাবন করা জরুরি। কমিউনিস্টদের সে দিনের লড়াই, আতĄত্যাগ বৃথা যায়নি। কমিউনিস্ট-বন্দীদের আদর্শের প্রতি কমিটমেন্ট, তাঁদের লড়াই ও আতĄত্যাগের ধারা নতুন প্রজন্মকে পথ দেখাবে। শহিদ-যোদ্ধাদের স্বপ্নের সমাজতান্ত্রিক-সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই তাঁদের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ খাপড়া ওয়ার্ডের শহিদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান এবং পাঠ্যপুস্তকে খাপড়া ওয়ার্ডের বিপ্লবী আন্দোলনকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলের খাপড়া ওয়ার্ডে কমিউনিস্ট-রাজবন্দীদের ওপর পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে বন্দী অবস্থায় শহিদ হন সুধীন ধর, বিজন সেন, হানিফ শেখ, সুখেন্দু ভট্টাচার্য, দেলোয়ার হোসেন, কম্পরাম সিং ও আনোয়ার হোসেন। আরও ৩২ জন রাজবন্দী গুরুতর আহত হন।