কৃষককে বাঁচাতে প্রয়োজনে চাল আমদানী সীমিতকরণ করা হবে–অর্থমন্ত্রী

যুগবার্তা ডেস্কঃ চলতি বছর ধান উৎপাদন বেশি হয়েছে। কিন্তু এখন চালের দাম আন্তর্জাতিক বাজারেও কম। যার কারনে ধানের দাম নিয়ে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের কৃষককে বাঁচাতে হবে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যেটা করতে পারি, সেটা হলো আমরা চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করে সীমিতকরণ করতে পারি। সরকারিভাবে আমরা এই কাজটি করব। চাল আমদানী আমরা পুরোপুরে বন্ধ করি দিতে পারিনা। পাশাপাশি চাল রফাতানির ‍দিকেও আমাদের জোর দিতে হবে। প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও চাল রফতানির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সবজীর উৎপাদনও আমাদের অনেক হচ্ছিল। কৃষকরা দাম পাচ্ছিল না এবং এগুলো পচে যাচ্ছিল। আমরা রফতানির ব্যবস্থা করলাম। রফতানি খরচ দিতে পারে না বলে আমরা সেখানে ভর্তুকি দিচ্ছি। ভর্তুকি দিয়ে আমরা সেই কাজটি করছি। এর কারণে সবজী উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন চার নম্বরে। রফতানি করার কারণে এর বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছে। সবজিতে অন্তত দামটা পাচ্ছে কৃষকরা। একইভাবে চালও ভর্তুকি দিয়ে রফতানি করা যেতে পারে।

আজ দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় আগামী ২০১৯-২০ অর্থ বছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণার আগে কৃষি ও এর উপখাতগুলোতে সরকারের বরাদ্দ ও বিশেষ গুরুত্ব প্রস্তাব হিসেবে অর্থমন্ত্রীর কাছে সুপারিশমালা প্রদান করেন কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ।

মাননীয় মন্ত্রী আরো বলেন, একটা সময় ছিল যখন সারা বিশ্বে খাদ্যের জন্য হাহাকার ছিল। কিন্তু বর্তমানে সারা বিশ্বেই খাদ্যের উৎপাদন অনেকগুন বেড়ে গিয়েছে। আল্লাহর রহমতে এ বছর আমরা অনেক বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে পেরেছি। আমাদের যেমন বেশি উৎপাদন হয়েছে, আশপাশের দেশেও খাদ্যশস্যের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। বাইরে যদি চাহিদা থাকত, তাহলে আমরা রফতানি করতে পারতাম। বাইরেও সেইভাবে চাহিদা নেই। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যা যা করা দরকার, সেগুলোর প্রতিফলন আপনারা দেখতে পাবেন।আমার বিশ্বাস, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টা অবশ্যই সুবিবেচনা করবেন। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সুদূর প্রসারী চিন্তাভাবনা করেন এবং এই সকল বিষয়ে তিনি অত্যন্ত বিচক্ষন। সেই ৯৬ সালে তিনি কৃষিখাতে ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি নেওয়ার যে সাহস করেছিলেন, তখন বিষয়টি সত্যই অকল্পনীয় ছিল, কিন্তু তার সুফল এখন আমরা ভোগ করছি। শুধু সবজি নয়, যে বছর যে পণ্য বেশি উৎপাদন হবে, সেগুলোও রফতানির ব্যবস্থা করা হবে। তাহলে চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ব্যবধানটা হবে না। ন্যায্য দামটা কৃষক পাবেন।

কৃষি যন্ত্রপাতির বিষয়ে মাননীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, সরকার নামমাত্রে মূল্যে কৃষকদের কৃষি যন্ত্রপাতিগুলো দেয়, তারপরে সেগুলো কৃষকরা নিতেও চায় না, জোর করে দেয়া লাগে। সবাইকে অবহিত করতে হবে, যদি কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেন, তাহলে উৎপাদন বাড়বে। ব্যয়ও কমে যাবে। এই ব্যয় কমানোর জন্যও আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। আগামীতে যে কাজটি করব, উৎপাদন কম বেশী যাই হোকনা কেন আমারা যন্ত্রপাতি ব্যবহার নিশ্চিতকরণে জোর দিব। কৃষি যন্ত্রপাতি আমরা নিয়ে এসে রেখে দেব। যখন লাগবে তখন ব্যবহার করব। উৎপাদন করে তারা যদি উৎপাদনের খরচ না পায়, তাহলে একদিকে তারা নিরুৎসাহিত হবে। অন্যদিকে আমরা মনে করি, এটি সরকারের জন্য একটি অনৈতিক বিষয়। সরকারকে সবদিকেই দেখতে হবে, উৎপাদনও দেখতে হবে, উৎপাদনের জন্য সহায়ক যা আছে, এগুলোরও সমাধান দিতে হবে। এটা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। এটা অবশ্যই করণীয়।